অব্যবহৃত বিমানবন্দর গুলোকে লাভজনক করা সম্ভব

Unused-Airportমো. কামরুল ইসলাম, এভিয়েশন নিউজ: বাংলাদেশে আকাশ পথের যাতায়াত বলতেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট কিংবা যশোর। যখনই কোন প্রাইভেট এয়ারলাইন্সের যাত্রার পদধ্বনি শোনা যায় তখনই সবার একই পরিকল্পনা অভ্যন্তরীন সেক্টরে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার এবং যশোর নিয়েই শত ব্যস্ততা। কারণ একটাই এসব রুটে কম-বেশী ব্যবসা করার সুযোগ থাকে। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে রাজধানীসহ পাঁচটি বিমান বন্দরের সাথে সংযোগ রয়েছে সর্বসাকুল্যে ১৬-১৭টি জেলার সাথে। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশের বয়স প্রায় ৪৩ বছর।

জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে উপরোক্ত বিমান বন্দরগুলো ছাড়াও লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, কুমিল্লা, বরিশাল, রাজশাহী, সৈয়দপুর, ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা করতো। কিন্তু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীন সেক্টরে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ রাখার পর লাভজনক রুট গুলো ব্যতীত প্রাইভেট এয়ারলাইন্সগুলো বিশাল জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত বিমান বন্দরগুলোতে ফ্লাইট পরিচালনা করতে উৎসাহবোধ করে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেশের বৃহত্তর প্রাইভেট এয়ারলাইন্স ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ (বিডি) লিমিটেড।

২০০৭ সালের প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ সরকারের কাছে দাবী রেখেছিল যদি দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠির অধ্যুষিত অব্যবহৃত বিমানবন্দরগুলোকে ব্যবহার উপযোগী করা হয় তবে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ নিয়মিতভাবে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। তারই ধারাবাহিকতায় ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ঢাকা থেকে সৈয়দপুর, রাজশাহী, বরিশাল, ঈশ্বরদী রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে।

অপরাপর অব্যবহৃত বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে এখনও চলাচলের অনুপযোগী লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, কুমিল্লা, শমশেরনগর। বিগতদিনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জনগনের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন অব্যবহৃত বিমানবন্দরগুলো চলাচলের উপযোগী করে গড়ে তুলবেন। কিন্তু এইসব ওয়াদা বাস্তবে রূপান্তরিত তখনই সম্ভব হবে, যখন রেগুলেটরি অথরিটি সময়োপযোগী কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে। এইসব বিমানবন্দরগুলো থেকে সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় করা সম্ভব কিন্তু তা সম্ভব হয়ে উঠছে না বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য।

বিমান বন্দরগুলোতে রয়েছে সরকারের অধিগ্রহনকৃত বিশাল সম্পত্তি, রানওয়ে, টার্মিনালসহ কোটি কোটি টাকার অনেক ইক্যুপমেন্টস যা ধীরে ধীরে নষ্ট হতে চলেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এইসব বিমান বন্দরগুলো ব্যবহার করার জন্য ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বহুবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। যদি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ অব্যবহৃত বিমান বন্দরগুলো ব্যবহার উপযোগী করে তবে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ সেইসব বিমান বন্দরগুলোতে নিয়মিতভাবে ফ্লাইট পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

বিভিন্ন অব্যবহৃত বিমান বন্দরে ফ্লাইট চালনার জন্য বারবার তাগাদা দেয়ার পরও ব্যবহার উপযোগী না করার কারনে অত্র এলাকার জনগন সারাদেশের সাথে আকাশপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকছে বছরের পর বছর ধরে। লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, কুমিল্লা কিংবা শমশেরনগর এর মতো বিমানবন্দরগুলো ব্যবহার উপযোগী করে তুললে সরকারের রাজস্বখাতে বিপুল পরিমান রাজস্ব জমা পড়বে এবং ব্যবসায়িকভাবে গতিশীল হবে সেইসব এলাকা। গড়ে উঠবে বিমানবন্দর কেন্দ্রিক ব্যবসা বানিজ্য।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ এর মতো যদি অপরাপর বেসরকারী বিমান সংস্থাকে সেইসব অব্যবহৃত বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য উৎসাহিত করে তবে সারা দেশের সাথে আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা হবে অনেক উন্নত এবং যাত্রী প্রবৃদ্ধিও বাড়বে আশানুরূপ।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.