আনন্দর বন্ধুর প্রেমে পড়বেন সোনম

 

গত বছরের ৮ মে রাজকীয় আয়োজনে অগ্নিসাক্ষী রেখে সাত পাকে বাঁধা পড়েন বলিউড তারকা সোনম কাপুর ও ব্যবসায়ী আনন্দ আহুজা। ইনস্টাগ্রামে এই জুটির রোমান্টিক ছবি নতুন করে ভালোবাসতে অনুপ্রাণিত করে। কিন্তু তাঁদের প্রেমকাহিনির সেই রূপকথা এত দিন ছিল গুপ্তধন হয়ে। সেই গুপ্ত কাহিনি এবার উন্মুক্ত করলেন সোনম কাপুর। বিয়ের এক বছর এক মাস পর ফিল্মফেয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই ডিভা প্রথমবারের মতো বললেন সেই হৃদয় অদল–বদলের গল্প।

সোনম কাপুরের নাকি আনন্দ আহুজার সঙ্গে প্রেম হওয়ারই কথা ছিল না। কথা ছিল আনন্দ আহুজার সব থেকে কাছের বন্ধুর সঙ্গে প্রেম হবে সোনম কাপুরের। আর সেই ব্যবস্থাই করছিলেন সোনমের বন্ধুরা। তাজ হোটেলের একটা বারে আনন্দ আহুজা আর তাঁর দুই বন্ধু অপেক্ষা করছিলেন। বন্ধুরা জোর করে সোনম কাপুরকে ডেকে এনেছিল সেখানে। সোনম তখন ‘প্রেম রতন ধন পায়ো’ (২০১৫) ছবির প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন।
সোনম কাপুরের ভাষায়, ‘আমার তাদের সঙ্গে দেখা করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা ছিল না। আমার প্রেম করার কোনো ইচ্ছাই ছিল না তখন। সম্পর্ক, বিয়ে- এই শব্দগুলো অর্থহীন ছিল আমার কাছে। আনন্দর যে বন্ধুর সঙ্গে ওরা আমার প্রেম করাতে চাচ্ছিল, আমি তাকে দেখলাম। সে আমার মতোই লম্বা, আমার মতোই বই পড়তে ভালোবাসে আর আমার মতোই বলিউড সিনেমার অন্ধভক্ত। সে উচ্চশিক্ষিত আর সুদর্শন। সবই ঠিক ছিল, কিন্তু তাঁকে দেখেই কেন যেন আমার ভাই হর্ষবর্ধনের কথা মনে পড়ল।’

ওই সাক্ষাৎকারে সোনম এও জানান, মাঝে মাঝে মানুষ ভাবে যে একই রুচির মানুষেরা বোধ হয় একসঙ্গে পথ চলতে পারে। কিন্তু সোনম আনন্দর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। কারণ সোনম যা, আনন্দ ছিলো ঠিক তার বিপরীত। আনন্দ আহুজা নাকি জানতেনই না সোনম কে বা তাঁর বাবার নাম কী। সেদিন তাজ হোটেলে সারা সন্ধ্যা সোনম কাপুর কেবল আনন্দ আহুজার সঙ্গে কথা বলে কাটিয়েছিলেন। এই প্রেমকাহিনিতে এর পরের অংশটা মিলে যাবে.
এরপর একদিন দেখলেন, অনন্দ আহুজা তাঁকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে। সঙ্গে একটা চিরকুট, মানে মেসেজ। রাত ২টা ৩০ মিনিটে আনন্দ আহুজা সোনম কাপুরকে এক বার্তায় লিখলেন, ‘হেই, তুমি কি এখনো সিঙ্গেল? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে তুমি যদি কখনো লন্ডনে আসো, আমার সঙ্গে দেখা করবে।’ বন্ধুত্বের আবেদনে সাড়া দিয়ে সোনম রেগে জবাবে লিখলেন, ‘প্রথমত, আমাকে এত রাতে মেসেজ করবেন না। আমি খুবই বিরক্ত হই। এসব ব্যপারে আমি একটা স্কুলে শিক্ষিকার মতোই কড়া।’ এভাবেই কিঞ্চিৎ তেতো দিয়েই শুরু হল মধুর কথোপকথন।

তারপর তাঁরা অন্য অনেকের মতোই ফোনে কথা বলা শুরু করলেন। সরল গণিতের মতো তারপর তাঁরা দেখা করলেন। এর দুই সপ্তাহ পর সোনম ঘুরিরে পেঁচিয়ে আনন্দ আহুজাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি চাও যে আমি তোমার বন্ধুর সঙ্গে আলাপ শুরু করি?’ কথায় বলে, জ্ঞানীর জন্য ইশারাই যথেষ্ট। সঙ্গে সঙ্গে আনন্দ আহুজা বললেন, ‘না, না, প্লিজ না। আমার সঙ্গে কথা বলো। তুমি আমার। আর আমি নিজেকে শুধু তোমার জন্যই রেখেছি।’ এই ছিল সোনম আর আনন্দর সহজ, সুন্দর প্রেমের গল্প।
যা হোক, বিয়ের পর এটা–সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এক বছরে মধ্যে হানিমুনেই যাওয়া হয়নি এই জুটির। সম্প্রতি তাঁরা জাপানে হানিমুন করে এলেন। সেই ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে সোনম কাপুর লিখেছিলেন, ‘আমি নিজেকে প্রতিদিন জিজ্ঞেস করি, আমি কীভাবে এতটা ভাগ্যবান হলাম। জীবনসঙ্গী হিসেবে আমি আমার সবথেকে কাছের বন্ধুকে পেয়েছি। আনন্দ আর আমি তো হানিমুনই করার সময় পাইনি। এই ভ্রমণটা আমাদের হানিমুন, বিবাহবার্ষিকী, জন্মদিন পালনের যাত্রা—সবই। সবুরে মেওয়া ফলেছে। এখানে আমার জীবনের সেরা সময় কেটেছে। ভালোবাসা, তোমাকে ধন্যবাদ।’

এখানেই শেষ নয়। কিছুদিন আগে আনন্দ আহুজার সঙ্গে জাদুঘরে গিয়েছিলেন। সেই ছবি পোস্ট করেও ক্যাপশনে লিখেছেন ভালোবাসার কথা। বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আমি জাদুঘর ভালোবাসি। আর্ট ভালোবাসি। কিন্তু সব থেকে বেশি ভালোবাসি তোমাকেই, মি. আহুজা।’

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.