বেসরকারী বিমান পরিবহনে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসায় বেবিচকের ভূমিকা

Bebicokএভিয়েশন নিউজ: বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে বিমান পরিবহন ব্যবসায় রেগুলেটরি অথরিটির ভূমিকায় রয়েছে। বেবিচকের সুদূর প্রসারী ভূমিকার উপর বাংলাদেশের এভিয়েশন ব্যবসার ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ প্রত্যেকটি এয়ারলাইন্সকে এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট (এওসি) ইস্যূ করে থাকে। সাধারনত বছরে একবার এওসি ইস্যূ করার নিয়ম রয়েছে। বিশেষ করে এয়ারলাইন্সসমূহ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃক ইস্যূকৃত এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট ছাড়া একদিনের জন্যও ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারে না। যা আইনগতভাবেও সম্ভব নয়।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও প্রাইভেট এয়ারলাইন্স এর নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, যেখানে বছরে একবার এক বছরের জন্য এওসি নবায়ন করার কথা কিন্তু ২০১০ সালের পর অযৌক্তিকভাবে বেবিচক প্রাইভেট এয়ারলাইন্সের এওসি নবায়নের সময়সীমা নির্ধারনে বেশ কিছু অসামঞ্জস্যতা প্রতিয়মান। গত সাত বছরের হিসাব অনুযায়ী, বেবিচক এওসি নবায়নের সর্বনিম্ন সময়সীমা ৮দিন থেকে সর্বোচ্চ একবছর পর্যন্ত নির্ধারন করে সার্টিফিকেট প্রদান করেছে বেসরকারী একটি এয়ারলাইন্সকে।

বেবিচক কর্তৃক নির্ধারিত এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট (এওসি) এর এ ধরনের অনিশ্চিত স্বল্পমেয়াদী সময়সীমা এয়ারলাইন্সসমূহের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার প্রতিবন্ধকতাও বটে। যখন কোন প্রাইভেট এয়ারলাইন্স দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়ে থাকে তখন থেকেই স্বল্পমেয়াদী এওসি এর জন্য সম্মূখীন হতে হয় নানা প্রতিবন্ধকতার। বেবিচক যখন নিজ দেশে প্রাইভেট এয়ারলাইন্সকে একবছরের জন্য এওসি ইস্যূ করে না সেখানে আন্তর্জাতিক রুট পরিচালনার জন্য অন্য দেশের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নানাবিধ প্রশ্নের সম্মূখীন হতে হয় বাংলাদেশের প্রাইভেট এয়ারলাইন্সগুলোকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সর্বপ্রথম এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট প্রদান করে ৮ই জুলাই ২০০৭ তারিখে। প্রায় সাত বছর হতে চলল ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের। সাত বছরে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বরাবর এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট ইস্যূ করেছে মোট ১৮ বার।

সত্যিই এওসি ইস্যূর সময়মীমা নির্ধারনের মাপকাঠি কিসের উপর নির্ভর করে? এসব স্বল্প মেয়াদী এওসি নবায়ন প্রতিনিয়তই প্রাইভেট এয়ারলাইন্সগুলোকে বেবিচক চাপের মধ্যে রাখেেছ। একবার এওসি ইস্যূর পর পরবর্তী এওসি নবায়নের জন্য প্রাইভেট এয়ারলাইন্সকে সর্বদাই বেবিচকের নির্দিষ্ট শাখায় শরনাপন্ন হতে হয়।

বিশ্বস্তসূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, বেবিচক ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ যাত্রার শুরু থেকে প্রথম তিন বছর প্রতিবছর একবার করে এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট (এওসি) ইস্যূ করেছে। কিন্তু পরবর্তিতে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বরাবর ৮দিন, ২৪ দিন, ১ মাস, ২মাস, ৩ মাস, ৬ মাস, ৭ মাস, ৯ মাস মেয়াদী বেবিচক এওসি ইস্যূ করেছে।

সর্বশেষ ইস্যূকৃত এওসি এর মেয়াদ ২ মাস ২৩ দিন। যার মেয়াদ শেষ হবে ২৯ জুন ২০১৪ তারিখ। বেবিচক কর্তৃক স্বল্পমেয়াদী এওসি ইস্যূ ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ক্ষেত্রে এবারই প্রথম নয়। সিভিল এভিয়েশন অথরিটির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার উদৃত্তি দিয়ে প্রথম সারির একটি দৈনিকে গত ১৬ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে উল্লেখ করেছে, “যদি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বকেয়া পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় তবে উক্ত এয়ারলাইন্সের এওসি পরবর্তীতে নবায়ন করা হবে না।

সাময়িকভাবে তিনমাসের জন্য এওসি নবায়ন করা হয়েছে, যা সাধারনত বছরে একবার এওসি ইস্যূ করা হয়।” কিন্তু পরিতাপের বিষয় এওসি নবায়ন এর ক্ষেত্রে এক বছরে একবার নবায়ন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নাকি বছরে কয়েকবার এওসি ইস্যূ স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তা বোধগম্য নয়। এ ধরনের বক্তব্য সাধারন পাঠকদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।

ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ একটি লিস্টেড কোম্পানি হিসাবে পুঁিজবাজারে রয়েছে। এই কোম্পানির সাথে এক লক্ষ ত্রিশ হাজার শেয়ার হোল্ডার জড়িত। এওসি নবায়ন এর ব্যাপারে বেবিচকের কালক্ষেপণ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরী করবে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.