মানুষের রসবোধ, ঘুমের অভ্যাস ও আতঙ্কের ধরন ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের ব্যাখ্যা তার জিনের মধ্যেই পাওয়া যায়। নতুন গবেষণায় বলা হচ্ছে, একটি নির্দিষ্ট জিনের কারণে মানুষের মধ্যে কৌতুকবোধ তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে। তাই কেউ যদি আপনার কৌতুক শুনে না হাসে, তার জিনকে দায়ী করতে পারেন। ব্রিটিশ দৈনিক পত্রিকা টেলিগ্রাফের অনলাইন সংস্করণে গত মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু রসবোধ নয়, কেউ কেনাকাটা করতে পছন্দ করে, কেউ নিরীহ মাকড়সা বা সরীসৃপ দেখেও ভয়ে আধমরা হয়ে যায়, কেউ সব কাজে দেরি করে, আবার কেউ কারণে-অকারণে মিথ্যা বলে বা প্রবঞ্চনার আশ্রয় নেয়—এমন সব আচরণের পেছনে রয়েছে জিন।
কেনাকাটার প্রতি কারও কারও ঝোঁক এত বেশি হয় যে শুধু অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনেই অনেক সময় তাদের পকেট ফাঁকা হয়ে যায়। চলতি বছর এক গবেষণায় দেখা যায়, কেউ অর্থ খরচ করবে নাকি জমিয়ে রাখবে—সেটা তাদের জিনগত বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। লৈঙ্গিক পরিচয়, বেড়ে ওঠার ধরন অথবা পরিবেশ এ ক্ষেত্রে তেমন কোনো ভূমিকা রাখে না।
গবেষকেরা বলছেন, মানুষের ভয় বা আতঙ্কের ব্যাপারটাও জিনগত। নইলে কেন এত বেশিসংখ্যক মানুষ নিরীহ প্রাণীদের অহেতুক ভয় পায়, কিন্তু বিপজ্জনক গতিতে চলমান গাড়িতেও নির্ভয়ে বসে থাকতে পারে। অথচ বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর প্রায় ১৩ লাখ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। সে তুলনায় বর্তমান যুগে সাপ বা মাকড়সার কামড়ে মৃত্যুর হার খুবই কম।
ঘুমের অভ্যাসের জন্যও জিনকে দায়ী করেছেন বিজ্ঞানীরা। যদি সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে সকাল সাড়ে ১০টায়ও আপনার ঘুম না ছাড়ে, বুঝতে হবে আপনার শরীরে ‘থ্যাচার জিন’ নেই। অধিকাংশ মানুষের প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। কিন্তু লৌহমানবী হিসেবে খ্যাত প্রয়াত সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের অভ্যাস ছিল মাত্র চার ঘণ্টা ঘুমানোর। অথচ দিব্যি সুস্থ ছিলেন তিনি।
তাল ও লয়ের মতো সংগীতের সূক্ষ্ম বিষয়গুলো সবাই সমানভাবে বুঝতে পারে না। এ জন্যও পারস্পরিক জিনের তারতম্য দায়ী। ২০০১ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, সংগীত প্রতিভা কাউকে শেখানোর মতো বিষয় নয়। কেউ যদি সুর সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ হয়ে থাকেন, সংগীতের পরিবর্তে তাঁর অন্য কোনো বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত।
আরও খবর