বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় ৯০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

download (1)দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে ৯০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে সরকার। এ অর্থ দিয়ে বিমানবন্দরগুলোর জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হবে। গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে জরুরি সরঞ্জামাদি সরবরাহ ও সংস্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন হয়।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

এতে ১৬ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ের মোট ১৬টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে জোগান দেয়া হবে ১৪ হাজার ৪১ কোটি টাকা। অবশিষ্ট অর্থ বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে।

সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়াতে ৮৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এর আওতায় বিভিন্ন ধরনের স্ক্যানিং মেশিন, তরল ও অন্য বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্তকরণ ব্যবস্থা এবং ব্যারিয়ার গেটসহ নানা ধরনের যন্ত্রপাতি কেনা হবে।

প্রকল্পটির অনুমোদনের কারণ হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশের শর্ত অনুযায়ী আধুনিক স্ক্রিনিং প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা পূরণের অংশ হিসেবে এটি করা হচ্ছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হলে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং রুটে ফ্লাইট চালু রাখা সহজ হবে। এছাড়া দেশের

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী ও কার্গো সুবিধাদির উন্নয়ন, স্ক্রিনিং চেক পয়েন্টে যাত্রী, ব্যাগেজ ও কার্গো স্ক্রিনিং এবং চেকিং কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যেসব দেশের আকাশপথে যোগাযোগ রয়েছে, তার মধ্যে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকা বিমানবন্দরগুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ব্রিটেন। তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে শুধু ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সম্প্রতি মিসর থেকে রাশিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের পর ব্রিটেন বিভিন্ন দেশে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদারে তাগিদ দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়ানোর তাগিদ দিল দেশটি।

গতকালের একনেক সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা। এছাড়া ঘোড়াশাল চতুর্থ ইউনিট রি-পাওয়ারিং প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ২৯ কোটি টাকা। এছাড়া ৭৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ৭০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণ ও সুরক্ষা এবং ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে গতকাল।

অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে— ৬৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের উত্পাদন পদ্ধতি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরকরণ প্রকল্প; ৫১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ইজিসিবি লিমিটেডের আওতায় কক্সবাজার জেলার পেকুয়ায় ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, ইআইএ এবং সম্ভাব্যতা যাছাই প্রকল্প; ১৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প; ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে জাতীয় বেতার ভবনে আধুনিক ও ডিজিটাল সম্প্রচার যন্ত্রপাতি স্থাপন প্রকল্প; ৩৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশের গ্রামীণ সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প; ১২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে জামালপুর শহরের নগর স্থাপত্যের পুনঃসংস্কার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্প; ২৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকার ইস্কাটনে সিনিয়র সচিব, সচিব ও গ্রেড-১ কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প; ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নয়টি পুলিশ সুপার অফিস ভবন নির্মাণ (সিআইডি ও পিবিআই অফিসসহ) প্রকল্প; ২৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট বিভাগ গ্রামীণ অ্যাকসেস সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প; ৩ হাজার ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান-তৃতীয় পর্যায় প্রকল্প; ১৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে হাইটেক পার্ক, সিলেটের (সিলেট ইলকট্রনিক্স সিটি) প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প এবং ১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.