‘সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের শীর্ষে বাংলাদেশ’
বাংলাদেশ সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে অবস্থান করছে। গত দু’দশকে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর গড়ের চেয়ে বাংলাদেশে তিনগুণ বেশি। বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে রাজধানির হোটেল শেরাটনে আয়োজিত ‘সকলের জন্য নিরাপদ সড়ক’ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের ঢাকা অফিস।
প্রধান অতিথির ভাষনে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত, আমরা কেউ সড়ক দুর্ঘটনায় অস্বাভাবিকভাবে মরতে চাই না। আমাদের এখানে নিরাপদ সড়ক বিষয়ে অনেকগুলো আইন রয়েছে। কিন্তু তার কোনো বাস্তবায়ন নেই। আমাদেরকে কঠোরভাবে আইনের বাস্তবায়ন করতে হবে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টইউগ সোফার বলেন, নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রবৃদ্ধির মতো বাংলাদেশের উচিত, নিরাপদ সড়কের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। প্রচুর প্রাণহানি ছাড়াও দুর্বল নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা একটি দেশের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনাকে সহজে প্রতিরোধ করা যায় এবং সময় এসেছে তা করার। এক্ষেত্রে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা গড়ার জন্য বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘ যৌথভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। সড়ক দুর্ঘটনার কারণে প্রতিবছর ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বিশ্ব জিডিপি’র আড়াই ভাগ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ দূত জ্যঁ টড বলেন, বিশ্বে ৫ থেকে ১৪ বছর শিশুদের চতুর্থ প্রধান মৃত্যুর কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার ৬৭ ভাগের বয়স ১৫ থেকে ৪৯ বছর। অপরিণত বয়সে এসব মানুষের মৃত্যু অর্থনীতিতেও বিপুল ক্ষতি করে ।
সড়ক ও যোগাযোগ বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর আড়াই হাজার সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনায় মারা যায় ৩ হাজার মানুষ। কিন্তু তারপরও অনেক সড়ক দুর্ঘটনা তথ্য পুলিশের কাছে আসে না।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, বিশ্বে প্রতিবছর ১৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় এবং এর মধ্যে এক চতুর্থাংশ ঘটে দক্ষিণ এশিয়ায়। সড়ক নিরাপত্তায় সংকট এখন বিশ্বে ম্যালিরিয়া, যক্ষার মতো একটি মহামারি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।