ডিজিটাল হওয়ার পথে বাংলালিংকের ৪৬৮ কর্মী ছাটাই!

001_193071_119754বাংলাদেশের অন্যতম টেলিকমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির ‘ডিজিটাল বাংলালিংক’ হয়ে ওঠার পথে ঘোষিত ‘ভলেন্টারি সেপারেশন স্কিম’ (ভিএসএস) এ স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়তে হচ্ছে ৪৬৮ জন কর্মীকে। এটাকে এক ধরনের ছাটাই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বেচ্ছা অবসরের মোড়কে ঢাকা এসব কর্মীর চাকরিজীবন মূলত প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছাতেই হচ্ছে।

ভিএসএসের এই অফারে চাকরি ছাড়ার আবেদনের জন্য গত ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল অপারেটরটি।

অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে স্বেচ্ছায় অবসর (ভিএসএস) স্কিমে ৪৬৮ জনকে আনুষ্ঠানিক বিদায় দিয়েছে বাংলালিংক।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী টিম ভিত্তিক বিদায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বিপুল সংখ্যক কর্মীকে বিদায় জানায় বাংলাদেশের টেলিকম জগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই প্রতিষ্ঠানটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলালিংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ৪৪০ জন কর্মী ভিএসএসে চাকরি ছাড়ার আবেদন করেন। এর পরেও আরো ২৮ জন কর্মীর আবেদন জমা পড়ে। দেখা যাচ্ছে নির্ধারিত সময়ের পরও কেউ ভিএসএসে চাকরি ছাড়ার আবেদন করতে চাইলে তাও গ্রহণ করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘অনেকটা তড়িঘড়ি করেই মোট ৪৬৮ জনকে বিদায় দেয়া হচ্ছে। সকাল থেকেই ডিপাটমেন্ট অনুযায়ী কর্মীদের আলাদা ভাবে বিদায় দেয়া হয়। আমরা যারা এখনো কর্মরত রয়েছি তারা আতংঙ্কের মধ্যে আছি। কখন আবার কাকে ছাঁটাই করা হয়।’

উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম বৃহৎ টেলিকম প্রতিষ্ঠান বাংলালিংকের প্রস্তাবিত ‘স্বেচ্ছায় অবসর’ (ভিএসএস) কার্যক্রমসহ ট্রেড ইউনিয়নের কর্মীদের চাকরিচ্যুতি, বদলি, সাময়িক বরখাস্ত, বরখাস্ত ও বেতন বন্ধ করার সকল কার্যক্রমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত।

কর্মী হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রমে বাধা দানের অভিযোগে বাংলালিংক এমপ্লায়িজ ইউনিয়নের শ্রম আদালতে করা মামলার প্রেক্ষিতে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি আদালত এ রায় দেয়।

এ বিষয়ে ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাও নোটিসও জারি করে আদালত। তবে বাংলালিংক কর্তৃপক্ষের আবেদনে ভিএসএসের ওই অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা গত সোমবার উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দেয়।

এরফলে আজ অনেকটা তড়িঘড়ি করেই ৪৬৮ কর্মীকে বিদায় দেয় প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলালিংক কর্তৃপক্ষের ভাষায় এটি স্বেচ্ছা অবসর হলেও আদালতে এটি বাধ্যতামূলক অবসর বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আর তাই এ বিষয়ে রাষ্ট্রের টেলিকম নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ সংস্থার অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এভাবে চলতে থাকলে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ধ্বংসের মুখে পড়বে বলেও মনে করেন তারা।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.