সহজেই বাড়ান নিজের দক্ষতা

সহজেই বাড়ান নিজের দক্ষতা।

কম্পিউটারে ফেসবুক চালানো আর ইউটিউবে ভিডিও দেখা ছাড়াও অনেক রকমের কাজ করা যায়। এ কথা সবার জানা থাকলেও, অনেকেই গুরুত্ব দেয় না। আর যারা গুরুত্ব দেয় তারা ইতোমধ্যে কম্পিউটারের বিভিন্ন কাজে দক্ষতা অর্জন করে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে কিংবা গুছিয়ে নিতে শুরু করেছে। কারণ বিশেষ কোনো কাজে দক্ষতা অর্জন করলে বেকার থাকার সুযোগ নেই।

ক্ষেত্র বিশেষে স্বল্প পুঁজিতে আপনি নিজেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন যদি কম্পিউটারের কোনো কাজে আপনার দক্ষতা থাকে। এখনকার চাকরির বাজারে শুধুমাত্র কম্পিউটারে কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা কিংবা প্রশিক্ষণ না থাকায় অনেকের ক্ষেত্রে ভালো চাকরি পেতে সমস্যা হয়। দেশে বেকার বিবিএ, বিএসসি, এমবিএ আছে লাখ লাখ। অথচ বাংলা ও ইংরেজিতে শুদ্ধভাবে যোগাযোগের দক্ষতা আছে একশতে একজনেরও কম। এটা কোনো জরিপের তথ্য নয়, তাই বলে অবিশ্বাস্যও নয়। আপনি যদি একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে চাকরির ইন্টারভিউ নিতে যান তবে বিষয়টা নিজ চোখে দেখতে পাবেন। তারপর আফসোস করবেন দেশের তরুণ প্রজন্মের কেন এ অবস্থা। চাকরিদাতাও আফসোস করে, চাকরি না দিতে পারার জন্যে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে চাকরিপ্রার্থীদের দক্ষতার অভাব।

শিক্ষার্থী এবং যারা চাকরিপ্রার্থী তাদের জন্য অল্প সময়ে দক্ষতা অর্জন করার মতো কিছু টিপস নিচে দেওয়া হলো।

* আপনি যদি সিভিল, মেকানিক্যাল কিংবা আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের শিক্ষার্থী হন তবে অটোক্যাড টুডি/থ্রিডি, স্টুডিও ম্যাক্সের কাজ জানা থাকলে আপনি পেশাক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন।

* আপনি যদি কোনো কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের ভালো পদ পেতে চান তবে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও ভাষাগত দক্ষতার পাশাপাশি মাইক্রোসফট এক্সেল/পাওয়ার পয়েন্ট/ওয়ার্ড ভালো জানা থাকলে অগ্রাধিকার পাবেন।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে  ফ্রেঞ্চ, জার্মান, চাইনিজ, আরবি কিংবা কোরিয়ান ভাষা শেখার সুযোগ রয়েছে।

* আপনি যদি সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি পেতে চান গ্রাফিক্স ডিজাইন হতে পারে একটি অব্যর্থ উপায়। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের প্রেজেন্টেশন, ব্যানার, স্লাইড, ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে আপনিও চমকে দিতে পারেন আপনার বসকে।

* দেশের ক্রমবর্ধমান ব্যবসায়ের প্রচার ও প্রসারে ডিজিটাল মার্কেটিং কিংবা ওয়েবসাইট তৈরি, ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করেও আপনি আয়ের সুযোগ পেতে পারেন। অনলাইন সম্পর্কে মোটামুটি ভালো ধারণা থাকলে কেউ কেউ সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বা এসইও করেও বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পেতে পারেন।

এসব প্রশিক্ষণ নিতে যে খুব বেশি সময় কিংবা অর্থ লাগে তা কিন্তু নয়। কেউ যদি ৩-৬ মাস আন্তরিকতার সঙ্গে লেগে থাকে, ভালোভাবে দক্ষতা অর্জন করে তার জন্যে ইচ্ছা থাকলেও বেকার থাকা কঠিন। কারণ দেশে দক্ষ লোকের বড়ই অভাব। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা কোনো কিছু ভালোভাবে শিখি না। অর্ধেক শিখে মনে করি শেখা হয়ে গেছে।

এসব কাজ শিখে অনেকে ফ্রিল্যান্সিং করেও ভালো টাকা পয়সা উপার্জন করছেন। কেউ কেউ উদ্যোক্তা হয়ে শুরু করেছেন নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

এখনকার সময়ে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে ইউটিউব। এখানে যতগুলো বিষয় নিয়ে বলা হয়েছে এর সবগুলোই আপনি ইউটিউবের মাধ্যমে শিখতে পারবেন। প্রচুর বাংলায় টিউটোরিয়াল পাবেন। আপনার যদি এ বিষয়গুলোতে প্রাথমিক জ্ঞান থাকে তবে দক্ষতা অর্জন করা আপনার ইচ্ছার ব্যাপার।

সবশেষে একটাই কথা- চাকরি পাওয়ার জন্য শুধু বই মুখস্থ করা নয়, কিছু প্র্যাকটিক্যাল কাজ শিখুন, দক্ষ হোন। দক্ষতা নিজের সম্পদ। দক্ষ লোক দেশের সম্পদ।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.