জালিয়াতদের বানান ভুলে রক্ষা পেল ৮শ’ কোটি টাকা

5205_alead_119808নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১০০ কোটি ডলার বা ৮ শ কোটি টাকা অর্থ চুরি করার কাজ প্রায় গুছিয়ে এনেছিল হ্যাকাররা। কিন্তু তাদের একটি বানান ভুলের কারণে সন্দেহ জাগে ব্যাংক কর্মকর্তাদের মাঝে। এছাড়া ট্রান্সফারের অনুরোধ করা অর্থের পরিমাণও ছিল সন্দেহ জাগানিয়া। এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

তবে এরপরও প্রায় ৮ কোটি ডলার হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে অজ্ঞাত হ্যাকাররা। এটিই ব্যাংক চুরির ইতিহাসে অন্যতম বড় একটি ঘটনা।

হ্যাকাররা প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব সিস্টেমে প্রবেশ করে অর্থ স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় গোপন তথ্য হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা এ তথ্য দিয়েছেন। এরপর মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের নিউ ইয়র্ক শাখায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের জন্য প্রায় ৩ ডজন ‘রিকোয়েস্ট’ পাঠানো হয়। এর মধ্যে ফিলিপাইনে চারটি রিকোয়েস্টের মাধ্যমে মোট ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সফলভাবে স্থানান্তর করতে সক্ষম হয় হ্যাকাররা। কিন্তু শ্রীলঙ্কায় অর্থ স্থানান্তরের পঞ্চম রিকোয়েস্টটি সন্দেহ জাগায় সেখানকার ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে।

শ্রীলঙ্কার একটি অলাভজনক এনজিওতে ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ স্থানান্তর হচ্ছিল। ওই এনজিওটির নাম শালিকা ফাউন্ডেশন। কিন্তু হ্যাকাররা ‘ফাউন্ডেশন’ শব্দটির বানানে ভুল করায় সতর্ক হয়ে উঠেন ব্যাংকাররা। ওই অর্থ স্থানান্তরের অনুরোধ জার্মানির ডয়েচে ব্যাংক হয়ে এসেছিল। ফলেম শ্রীলঙ্কার ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ডয়েচে ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চায়। এক কর্মকর্তা জানান, এরপর অর্থ স্থানান্তরের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। শ্রীলঙ্কার নিবন্ধিত অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের তালিকায় শালিকা ফাউন্ডেশন নামে কিছু নেই। তাই এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তথ্যের জন্য যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ডয়েচে ব্যাংক এ সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

পাশাপাশি, বেসরকারী মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ স্থানান্তরের রিকোয়েস্ট সন্দেহ জাগায় ফেডারেল রিজার্ভে। এছাড়া অন্যান্য ব্যাংকের আপত্তি তো ছিলই। ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ এরপর বাংলাদেশ ব্যাংককে সতর্ক করে। এতে প্রায় ৮৫-৮৭ কোটি ডলারের অর্থ হাতিয়ে নিতে ব্যর্থ হয় হ্যাকাররা। প্রসঙ্গত, বর্তমানে ফেডারেল রিজার্ভে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে শ’ শ’কোটি ডলার রয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ অর্থ ব্যবহৃত হয়।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.