মেনন ইউটার্ন নিয়েছেন: ওবায়দুল কাদের।
একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে থাকা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ইউটার্ন নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে হোয়াইট হলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় এ দাবি করেন তিনি।
গত শনিবার বরিশালে দলীয় অনুষ্ঠানে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাশেদ খান মেনন। ওই নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেননি বলে দাবি করেন তিনি। ওই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনার মধ্যে রাশেদ খান মেনন এক বিবৃতিতে বলেন, তার বক্তব্য খণ্ডিতভাবে প্রচার হওয়ায় ১৪ দলে ভুল বার্তা যাচ্ছে।
রাশেদ খান মেননের এমন বক্তব্যের পর ১৪ দলীয় জোটে প্রভাব পড়তে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মেনন সাহেবের ব্যাপারে আমিই প্রথম কমেন্ট করেছিলাম। আমি বেশি কথা বলিনি। আমি শুধু বলেছি, এতদিন পরে কেন? এই সময়ে কেন? যে সময় ক্যাসিনোকাণ্ডের কথা, তখন কেন তিনি এ বিষয়ে মুখ খুললেন? অবশ্য, রাশেদ খান মেনন সাহেব এখন উল্টো সুরে কথা বলছেন। তিনি ইউটার্ন নিয়ে ফেলেছেন অলরেডি। তিনি বলেছেন, তিনি এভাবে বলেননি। তার বক্তব্যটা খণ্ডিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।’
এ সময় রাশেদ খান মেননের ভবিষ্যত রাজনীতি নিয়ে কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘এখন তিনি একটা দলের সভাপতি। পত্রপত্রিকায় নানান ধরনের খবর আসছে। অন্যান্য খবরও আসছে। আগামী দিনগুলোতে তার অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সেটা নিয়ে আমার মন্তব্য করা সমীচীন নয়।’
‘১৪ দল বলেছে, রাশেদ খান মেননের বিষয়ে তারা আলাপ-আলোচনা করেছে এবং তা আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। তবে আমি এটুকু বলতে পারি, শরিক দলের একজন নেতার জন্য ১৪ দল ভাঙতে পারে না। ১৪ দল অটুট থাকবে। একজন ব্যক্তি যদি ভিন্নমত পোষণ করেন, একজন ব্যক্তির জন্য একটা জোটের অপমৃত্যু হতে পারে না।’
বিএনপির কোনো আন্দোলনের ইস্যু হালে পানি পাবে না, দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা বিরোধী রাজনীতির ওপর সংকটের কালো ছায়া এবং সেটাই তাদের গাত্রদাহের কারণ। তারা জানে, এখন শত চেষ্টা করেও জনগণের সাড়া পাবে না। আন্দোলন করার মতো কোনো ইস্যু হালে পানি পাবে না।
‘এটা জেনেই তারা আজকে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। আপনারা জানেন, আবরার হত্যাকাণ্ডে তারা ইস্যু খোঁজার চেষ্টা করেছে। তাদের সেই অপচেষ্টাও মাঠে মারা গেছে। আপনারা জানেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে তারা ভর করেছিল, কোটা সংস্কার আন্দোলনে তারা ভর করেছিল। সর্বেশেষ আবরার হত্যাকাণ্ডের উপরে ভর করেছে। অবশেষে ভোলায় একটা গুজবকে কেন্দ্র করে ফেসবুকের পোস্ট নিয়ে সেখান থেকেও ফায়দা নেয়ার অপচেষ্ট তারা করেছে,’ বলেন ওবায়দুল কাদের।
বুয়েটের ছাত্র আবরার হত্যা ও ভোলার ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পেতেই হবে, জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত আছেন। ভোলার ঘটনা ও আবরারের ঘটনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়ার কারণে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চক্রান্ত সফল হতে পারেনি। এখনও তারা চেষ্টা করছে, এখনও তারা ষড়যন্ত্র করছে। আমরা বিশ্বাস করি সৎ সাহস আমাদের আছে। ভোলার ঘটনা এবং আবরার হত্যা ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তাদের পেতেই হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের আবরারের মতো মেধাবী ছাত্রকে যারা হত্যা করেছে, ভোলায় মহানবী হজরত মোহাম্মদ (রা:) কে নিয়ে যারা কুৎসিত পোস্ট দিয়ে আমাদের মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে একটা বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল, তাদের সেই চক্রান্ত বিফল হয়ে যাবে, তারা সফল হবেন না।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সংসদ সদস্য আসলামুল হক, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুল হক রানা।