ধর্ষকদের তাড়িয়ে নিজেই ধর্ষণ করলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা!
ভোলার মনপুরা উপজেলায় স্পিডবোটের চার যাত্রী এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করছেন বলে মালিককে খবর দেন স্পিডবোটের চালক। খবর পেয়ে মালিক এসে ওই চারজনকে মারধর করে ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে নিজেও ধর্ষণ করেন ওই নারীকে।
গতকাল শনিবার বেলা একটার দিকে উপজেলার চর পিয়ালে এক বাগানের মধ্যে গণধর্ষণের এ অভিযোগ উঠেছে। আড়াই বছরের সন্তানের সামনে তাকে গণধর্ষণ করা হয়।
এ ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও একজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের সহায়তা করার অভিযোগে গতকাল রাতে মনপুরা থানায় মামলা করেছেন ওই গৃহবধূ।
স্থানীয় পুলিশ, মামলার এজাহার ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ঘটনার তথ্যের সত্যতা জানা গেছে। আজ রোববার গৃহবধূকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ধর্ষণের অভিযোগে যাঁদের আসামি করে মামলা করা হয়েছে তাঁরা হলেন মনপুরা উপজেলার সাকুচিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং স্পিডবোটের মালিক নজরুল ইসলাম (৩০), মো. বেলাল পাটোয়ারী (৩৫), মো. রাশেদ পালোয়ান (২৫), মো. শাহীন খান (২২) ও মো.কিরন (২৬)। ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে মামলার আসামি হলেন স্পিডবোটের চালক মো. রিয়াজ।
গৃহবধূ জানান, চরফ্যাশনের বেতুয়া লঞ্চঘাট থেকে মনপুরার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চ না পেয়ে তিনি এক স্পিডবোটে ওঠেন। বোটে আরও দু’জন যাত্রী ওঠে।
পথিমধ্যে জনতার খালের পাড় থেকে আরও দু’জন ওঠে। একপর্যায়ে ওই যাত্রীরা স্পিডবোট চালককে চরপিয়ালে নিয়ে যেতে বাধ্য করে। সেখানে তাকে চারজন ধর্ষণ করে।
এরপর জনতার খাল থেকে স্পিডবোট নিয়ে চালক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুলের কাছে নিয়ে যান। নজরুল তখন চারজনকে মারধর করে ৩ হাজার টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়।
এরপর নজরুল চরে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে এবং এক হাজার টাকা দেয়। নাম না বলতে হুমকি দেয়। নাম বললে ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ারও হুমকি দেয় নজরুল। এ ধর্ষণের ঘটনা স্বীকার করে স্পিডবোটের চালক রিয়াজ জানান, গৃহবধূকে চরপিয়ালে নিয়ে চারজন গণধর্ষণ করে। এরপর ঘটনাটি স্পিডবোটের মালিক নজরুলকে জানান।
কিন্তু নজরুল স্পিডবোটে করে গৃহবধূকে আবার চরপিয়ালে নিয়ে ধর্ষণ করে। চরের ভেতর ওই গৃহবধূকে নিয়ে নজরুল এক ঘণ্টা থাকে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান অলি উল্লাহ কাজল জানান, চরপিয়ালের গণধর্ষণের ঘটনাটি মোবাইল ফোনে মহিষ বাথানরা তাকে জানান। ঘটনাটি মনপুরা থানার ওসিকে জানানো হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার গৃহবধূকে চর থেকে উদ্ধার করা হয়।
মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন জানান, গণধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষিতা বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। স্পিডবোটটি জব্দ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।