শাহ আমানত বিমানবন্দরে কার্গো শাখায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো শাখায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গতকাল রবিবার চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
কাস্টমস জানায়, আগে সনাতন পদ্ধতিতে পণ্যের ছাড় হতো। নতুন নিয়ম চালুর ফলে পণ্য নিয়ে আসা যাত্রীরা শুল্ক পরিশোধ করে দ্রুত পণ্য ছাড় নিতে পারবে; আর কাস্টমস কর্তৃপক্ষও শুল্ক ফাঁকি বা জালিয়াতির মতো ঘটনা ঠেকাতে পারবে।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কাস্টমসের উপকমিশনার রিয়াদুল ইসলাম বলেন, নতুন নিয়ম চালুর ফলে কোনো পণ্যের রাজস্ব পরিশোধের জন্য কাস্টম হাউসে যেতে হবে না। বিমানবন্দর শাখার সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমেই রাজস্ব পরিশোধ করতে পারবে যাত্রীরা। এতে যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের পণ্য চালান-খালাস দ্রুত করা যাবে। অন্যদিকে চালান-খালাসের ক্ষেত্রে জালিয়াতি রোধ হবে। রাজস্ব আহরণ বাড়বে, বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের পণ্যপ্রাপ্তিতে ভোগান্তি কমবে। একই সঙ্গে বিমানবন্দরের পণ্যজটও কমে যাবে।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতি সপ্তাহে একটি কার্গোবাহী উড়োজাহাজ আসা-যাওয়া করে। আর নিয়মিত যাত্রীবাহী ফ্লাইটেও প্রচুর পণ্য আসে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ২০০ আমদানি চালান বিমানবন্দর থেকে ছাড় হয়। প্রবাসফেরত যাত্রীরা পণ্য আনে খুবই কম। মূলত রিয়াজউদ্দিন বাজারকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরাই বিভিন্ন যাত্রীর নামে এসব পণ্য আমদানি করেন। এতে বিপুল চোরাচালানের ঘটনা ঘটে। এক পণ্যের নাম দিয়ে অবৈধ ও উচ্চ শুল্কের পণ্য নিয়ে আসে। কাস্টমসের সঙ্গে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এবং বিমানবন্দরের কিছু কর্মচারী এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। কাস্টমস কর্মকর্তারা বদলি হলেও বিমানবন্দর ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা বছরের পর বছর সেখানে কাজ করছেন। ফলে এই চক্রকে কমিশন দিয়ে এবং চক্রের বাইরে কোনো সিঅ্যান্ডএফেরও পণ্য ছাড় করার সুযোগ নেই।
কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ দারাশিকো বলেন, ‘এখন আমরা যেসব চালান ছাড় হয়েছে সেটি রেকর্ড করতে পারি না। নতুন এই পদ্ধতির মাধ্যমে পণ্যছাড়ের রেকর্ড থাকবে। আর শুল্ক পরিশোধ হয়েছে কি না নিশ্চিত হয়েই পণ্যছাড় দেওয়া সম্ভব হবে। অর্থাৎ জেটিতে পণ্যছাড়ে যে স্বচ্ছতা আছে বিমানবন্দরের কার্গো শাখায়ও সেই স্বচ্ছ্বতা নিশ্চিত হবে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্যবহারকারীরা। চট্টগ্রাম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী রিগ্যান বলেন, ‘এটা অনেক আগেই চালুর জন্য আমরা প্রতিটি মিটিংয়ে তাগাদা দিতাম। কিন্তু সোনালী ব্যাংকের কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছিল না। এখন আর কোনো বাধা রইল না।’ তাঁর মতে, এতে বিমানবন্দরের কাজ সেখানেই করা সম্ভব হবে, কাস্টম হাউসে আসতে হবে না। শুল্কায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে, রাজস্ব ফাঁকি হবে না এবং কাজের গতি বাড়বে।