‘সরকারের ব্যর্থতায় সড়ক ও রেল দুর্ঘটনা’

‘সরকারের ব্যর্থতায় সড়ক ও রেল দুর্ঘটনা’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। ব্যর্থ হয়ে গেছে এই সরকার।

কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। রেল দুর্ঘটনাও তো অনেকগুলো ঘটল। কীভাবে? কারণ কোনো জবাবদিহি নেই। সরকারের ব্যর্থতায় সড়ক ও রেল দুর্ঘটনা ঘটছে।

রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবার সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তার (খালেদা জিয়া) অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো পঙ্গু হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তিনি নিজের হাতে ধরে কিছু খেতে পারেন না। তাকে খাইয়ে দিতে হয়। হুইল চেয়ার ছাড়া চলতে পারেন না। বিছানা থেকেও অন্যের সাহায্য ছাড়া উঠতে পারেন না। অথচ সরকারের মদদপুষ্ট হাসপাতালের পরিচালক বলেন, তিনি সুস্থ আছেন। তার কোনো অসুবিধা নেই। আগের চেয়েও সুস্থ আছেন। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেয়া হচ্ছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সরকার জোরালো প্রতিবাদ জানাতে পারে না বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেছে। অথচ বাংলাদেশ সরকার সেভাবে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সরকারের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো, তারাই মিয়ানমারকে সমর্থন জোগাচ্ছে।

ভারত বঙ্গোপসাগরে পর্যবেক্ষণের জন্য রাডার লাগাচ্ছে জানিয়ে এর ব্যাখ্যা চান বিএনপির মহাসচিব। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সরকারের কাছে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেন তিনি।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সাংবাদিকরা, রাজনৈতিক নেতারা ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারেন না। শিক্ষার্থীরা যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে নিজেদের মতামত দেন, তাদেরও গ্রেফতার করে। কেউ মন খুলে কথা বলতে পারে না। সবাই ভয়ে ভয়ে থাকে। যে কোনো ঘটনা ঘটলে আসামি অজ্ঞাতনামা ৫ হাজারের ওপর। সাধারণ মানুষকেও রেহাই দেয়া হয় না।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, আবদুল কুদ্দুস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, সাধারণ সম্পাদক এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রতিহিংসার রাজনীতি ভুলে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন- রিজভী : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বর্তমানে ভীষণ অসুস্থ। তিনি চলাফেরা করতে পারছেন না, নিজ হাতে খেতে পারছেন না। এ অবস্থায় সরকারপ্রধানকে বলব, প্রতিহিংসার রাজনীতি ভুলে গিয়ে খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিন। নইলে জনগণের তীব্র ক্ষোভে আপনার মসনদ ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে।

নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার সকালে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারও কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মিছিল শেষে পথসভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন, ছাত্রদল নেতা কাউসার প্রমুখ।

পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, মিডনাইট নির্বাচনের অবৈধ সরকার দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণভাবে গায়ের জোরে বন্দি করে রেখেছে। বন্দি করার মধ্য দিয়ে তারা শুধু দেশের একজন জনপ্রিয় নেত্রীকেই বন্দি করে রাখেনি, বরং তারা গোটা দেশ, গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকেও এক শ্বাসরুদ্ধকর বন্দিশালায় আটকে রেখেছে।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির মধ্য দিয়েই গণতন্ত্র ফিরবে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিরাপদ হবে, দেশের মানুষ নিরাপত্তা ফিরে পাবে। তাই দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য আমাদের আর বসে থাকলে চলবে না, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.