বাসচালকের গাফিলতিতে মুন্সীগঞ্জের সড়ক দুর্ঘটনা।
মুন্সীগঞ্জে বাস ও বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে ৯ জন নিহতের ঘটনায় বাসচালকের গাফিলতি ছিল বলে জানিয়েছেন হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ওসি মো. আব্দুল বাসেদ।
তিনি জানান, মহাসড়কে উন্নয়ন কাজ চলার কারণে দুর্ঘটনাস্থলে এক লেনে উভয়মুখী যাতায়াতের সাময়িক ব্যবস্থা রাখা ছিল। সেখানে গাড়ি চালানো উচিত সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার বেগে। কিন্তু যেভাবে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে তা দেখে আমরা বুঝতে পারি যাত্রীবাহী বাসটি কমপক্ষে ৭০-৮০ কিলোমিটার বেগে চলছিল। তাছাড়া মাইক্রোবাসটি সড়কের বাম পাশ দিয়েই চলছিল। যাত্রীবাহী বাসটিই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের উল্টো পাশে এসে মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়। এ থেকে বোঝা যায় বাসচালকের গাফিলতি ছিল।
ওসি আব্দুল বাসেদ বলেন, দুর্ঘটনা পর শুক্রবার রাতেই হাইওয়ে পুলিশের টিএসআই দেলোয়ার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা বাস চালকের বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় মামলা করেছেন। শুধু বাসচালকের বিরুদ্ধে মামলা হলেও যদি তদন্তে বাস মালিকের গাফিলতি পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাসের মালিক ও চালকের নাম আমরা জানতে পেরেছি। শিগগিরই বাসচালককে আটক করা হবে।
এদিকে এই দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে আটজনের মরদেহ মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকসার বটতলা নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লৌহজং উপজেলার কনকসার বটতলা গ্রামের বাহ্মণগাঁও উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে হলদিয়া সাতঘড়িয়া কবরস্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়। আর মাইক্রোবাস চালক বিল্লালকে (৪০) নাগেরহাট নিজ এলাকায় দাফন করা হয়।
মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, ওভার স্পিডের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমাদের প্রাথমিক ধারণা দুটি গাড়ি অতিরিক্ত স্পিডে ছিল। মামলা হয়েছে হাঁসাড়া ফাঁড়ির আন্ডারে। তারা বাসের মালিক ও ড্রাইভারকে শনাক্ত করেছে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে চালককে আটক করতে পারব। গাড়িগুলোকেও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
নিহতদের বিষয়ে তিনি বলেন, ৯ জন মারা গেছে। জাহাঙ্গীর (৪২) নামে একজন ঢাকার ধানমন্ডির একটি ক্লিনিকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুর পৌনে ১টায় কনকসার বাজার থেকে বর রুবেল বেপারী দুই মাইক্রোবাস করে স্বজনদের নিয়ে হাসি মুখে কনে নিশা আক্তারের (১৮) বাড়ি ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের আলীনগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। পথিমধ্যে দুপুর ২টায় শ্রীনগরের ষোলঘর বাসস্ট্যান্ডের কাছে যাত্রীবাহী স্বাধীন পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাস মুখোমুখি তাদের একটি মাইক্রোবাসকে চাপা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান বরের বাবা আব্দুর রশিদ বেপারী (৭০), বোন লিজা (২৪), ভাগনি তাবাসসুম (৬) ভাবির বোন রেনু (১২), বরের ভাতিজা তাহসান (৪), ফুপা কেরামত বেপারী (৭০), বরের প্রতিবেশী মফিজুল মোল্লা (৬৫), মাইক্রোবাস চালক বিল্লাল (৪০) এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল মারা যান ভাবি রুনা (২৪)।