যে স্বাস্থ্য সমস্যার আভাস দেয় আবহাওয়া

যে স্বাস্থ্য সমস্যার আভাস দেয় আবহাওয়া।

এটা ঠিক যে আমাদের জীবনযাপনের অসংগতি বিভিন্ন রোগ বা অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এ কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে বাঁচতে প্রাত্যহিক জীবনযাপনে সচেতন থাকতে হয়।  কিন্তু স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে এমনও কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলোর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই, যেমন- আবহাওয়া। এ প্রতিবেদনে বিভিন্ন আবহাওয়ায় যেসব স্বাস্থ্য সমস্যার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

শীতকাল: ২০১৩ সালের একটি সুইস গবেষণায় জানা গেছে, শীতকালে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যায়। অন্যদিকে গরমকালে এর বিপরীত চিত্র দেখা যায়। এর কারণ হচ্ছে, তাপমাত্রাজনিত রক্তচাপের পরিবর্তন। শীতকালে নিম্ন তাপমাত্রা রক্তনালী সংকুচিত করে। ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। যারা ইতোমধ্যে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা আরো প্রকট হতে পারে। এটা এখন আর অজানা নয় যে, উচ্চ রক্তচাপে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। অপরদিকে গরমকালে সিস্টোলিক রক্তচাপের মাত্রা হ্রাস পেয়ে প্রায় ৩.৫ মিলিমিটারস অব মার্কারিতে চলে আসে। মৌসুমভিত্তিক হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি নিরূপণ গবেষক ডা. পেড্রো মারকুয়েস ভিডাল শীতকালে হার্টের বাড়তি যত্ন নিতে পরামর্শ দিয়েছেন।

বর্ষাকাল: বৃষ্টির দিনগুলোতে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ হ্রাস পাওয়ার কারণে জয়েন্টের নিকটবর্তী টিস্যু প্রসারিত হয় ও স্নায়ুর ওপর চাপ ফেলে। ফলে আর্থ্রাইটিস বা বাতরোগের উপসর্গে ভোগার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। যদিও কিছু গবেষণায় বর্ষা ও বাতরোগের উপসর্গের মধ্যে শক্তিশালী সংযোগ পাওয়া যায়নি।

বজ্রপাত: মাইগ্রেন হচ্ছে এক ধরনের মাথাব্যথা যার সঙ্গে বজ্রপাতের সম্পর্ক আবিষ্কৃত হয়েছে। একটি গবেষণা বলছে, বজ্রপাতের সময় মাইগ্রেন ভুক্তভোগীদের মাথাব্যথায় ভোগার সম্ভাবনা ২৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এর কারণ সম্ভবত তড়িৎ চৌম্বকীয় পরিবর্তন।

গ্রীষ্মকাল: গ্রীষ্মকাল অথবা গরমের দিনগুলোতে প্রচুর পানি পান না করলে অসহনীয় উচ্চ তাপমাত্রায় শরীর পানি শূন্যতায় ভুগে। পানি শূন্যতার কারণে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। বাড়তি ইউরিক অ্যাসিড সঞ্চিত হয়ে গেঁটে বাতের ব্যথা বাড়িয়ে তোলে। বাষ্পায়িত বা গরম আবহাওয়ায় মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসের (এমএস) উপসর্গ আরো তীব্র রূপ ধারণ করতে পারে, এমনকি জ্বর বা গরম পানি দিয়ে গোসলের কারণে শরীরের মূল তাপমাত্রা একটু বেড়ে গেলেও। এমএস হচ্ছে একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা মানুষের মস্তিষ্ক, স্নায়ুরজ্জু ও চোখের অপটিক নার্ভকে আক্রমণ করে। এ রোগে দৃষ্টি সমস্যা, ভারসাম্যহীনতা, মাংসপেশির নিয়ন্ত্রণ হারানো ও শরীরের অন্যান্য মৌলিক কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.