‘জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে’

‘জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে’

৫৬ হাজার বর্গমাইলের মধ্যে জিয়া পরিবার বিস্তৃত মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে, কিন্তু গণতন্ত্র আর ষড়যন্ত্র একসঙ্গে চলে না। গণতন্ত্র নেই সে কারণেই ষড়যন্ত্র।

তিনি বলেন, এই যে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, তাহলে জিয়া পরিবারের সদস্য সংখ্যা কয়জন? বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, আরাফাত রহমান কোকো (মারা গেছে) এবং তাদের সন্তানেরা এই কজন? জিয়া পরিবারের সদস্য সংখ্যা বাংলাদেশে কম হলেও ১৬ কোটি। এই ১৬ কোটি মানুষ বাংলাদেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের মধ্যে বিস্তৃত।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৪তম জন্মবার্ষিকী, জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

গয়েশ্বর বলেন, জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মানে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মানে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সুতরাং এই ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াবার দায়িত্ববোধ জনগণের মধ্যে আছে।

দলীয় নেতাকর্মীদের সংগঠিত হওয়ার গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, অনেক কিছু একসঙ্গে রাখলে স্তূপ হয় কিন্তু তা সংগটিত হয় না। রড, সিমেন্ট, বালু-এগুলো একসঙ্গে রাখা হয় সেটাকে কাজে লাগানোর জন্য রাজমিস্ত্রি দরকার। সুতরাং জনগণের চেতনাবোধ আছে এবং দায়িত্ববোধ আছে, কিন্তু জনগণ অসংগঠিত। তাদেরকে এক বাক্যে, এক লক্ষ্যে সংগঠিত করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলের। সেই দায়িত্বটা যদি আমরা সঠিকভাবে পালন করি তাহলে একটি যৌক্তিক আন্দোলন হতে পারে। এই আন্দোলন কোনো পক্ষের আন্দোলন না। এই আন্দোলনটা হচ্ছে দেশের পক্ষে আন্দোলন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের পক্ষে আন্দোলন। এই আন্দোলনটা হবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন। আর গণতন্ত্র যদি পুনরুদ্ধার হয় তবে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমাদের কুটির দ্বারে আর ঘুরতে হবে না।’

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনটাই হচ্ছে যথার্থ। আমরা যদি গণতান্ত্রিকভাবে সফল হতে পারি খালেদা জিয়া বিনাপ্রশ্নে চলে আসবেন তার বাড়িতে। তাকে আটকে রাখা তো দূরের কথা, কত তাড়াতাড়ি তাকে গাড়ি করে বাড়িতে পৌঁছে দেবেন, সেজন্য ব্যস্ত হয়ে যাবেন তারা। সুতরাং মনে রাখতে হবে, জনগণের দাবি সবসময় আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আদালতের রায়ের মাধ্যমে নয়।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আদালতের রায়ে হয় নাই। তখন কি আদালত বন্ধ ছিল? তাহলে দেশ স্বাধীন করল কারা? এদেশের আপামর জনতা।

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে দাবি করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কেউ হয়তো রাগ করবেন জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে কেন? শেখ মুজিবুর রহমান না কেন? শেখ মুজিবুর রহমান তখন জেলে বন্দি ছিলেন। তা-ও বাংলাদেশে নয় সেই পশ্চিম পাকিস্তানে। তিনি ৫৪ হাজার বর্গমাইলের মধ্যে ছিলেন না । তিনি ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানে। তার অনুপস্থিতিতেই জিয়াউর রহমান প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়ার পর দ্বিতীয়বার যেন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ভুল বোঝাবুঝি না হয়, সেজন্য আবার তিনি বললেন, ‘আমি মেজর জিয়া স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিচ্ছি আমাদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে।’ শেখ হাসিনার এই কথাটা মানতে কষ্ট হয় কেন? তৎকালীন সময়ে যাদের কান ছিল তারা কানে শুনেছিল রেডিওর মাধ্যমে। শেখ হাসিনা নিজেও শুনেছেন।”

তিনি বলেন, ‘তখন তো শেখ হাসিনা ছিলেন, তাহলে শেখ হাসিনা কেন বললেন না, আমি শেখ হাসিনা বলছি; শেখ মুজিবুর রহমান ওরফে স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা করছি। এটাতো রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব ছিল। রাজনৈতিক দলের নেতারা ঘোষণা করলে ব্যারাক থেকে বের হয়ে তাদের সহযোগিতা করার কথা ছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমান শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেননি, তিনি আর্মির একজন মধ্যম সারির অফিসার হয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডকে এগনোর করেছেন। তারপর তিনি বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ড হাতে নিয়ে বাঙালিকে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এখন শুনতে হয়তো খুব সহজ মনে হচ্ছে কিন্তু এটা ছোটখাটো কাজ না।’

সংগঠনের সভাপতি মাহফুজুল কবীরের সভাপতিত্বে ও কৃষকদলের সদস্য এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লায়ন মোহাম্মদ আনোয়ার, আলহাজ খলিলুর রহমান ধুতি ইব্রাহিম, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.