এয়ারহোস্টেজ স্মার্ট ও অভিজাত ক্যারিয়ার: সোহানি

Sohaniমিরাজ রহমানএভিয়েশন নিউজ: সিলেটের মেয়ে সোহানি, পুরো নাম হাসিনা হোসাইন সোহানি। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশুনা পাঠ সেরেছেন সিলেটেই। পড়েছেন সিলেটের বার্ড বার্ড স্কুল এ কলেজ ও সরকারি মহিলা কলেজ সিলেট -এ।

এয়ারহোস্টেজ হবেন এমন কোন পরিকল্পনাই ছিলো না কৌশর বয়সেও কিন্তু তিনিই আজ বাংলাদেশের স্বনামধন্য একটি বিমান সংস্থার তারকা এয়ারহোস্টেজ। পিতা আনোয়ার হোসাইন এবং মাতা নাজমা আনোয়ারের কন্যা সোহানি বর্তমানে কর্মরত আছেন ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের চিফ ইন্সটেক্টর হিসেবে। এয়ারহোস্টেজ লাইফ, কেন তিনি এয়ারহোস্টেজ হলেন এবং কি স্বার্থকতা তাঁর এই জীবনে এমন নানাবিধ বিষয় নিয়ে কথা হয় তাঁর সাথে।

এভিয়েশন নিউজ: আপনার জীবনের শুরু থেকেই কি একজন এয়ারহোস্টেজ হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন?
সোহানি : না জীবনের শুরু থেকে কিংবা পরিকল্পিতভাবে নয়, হঠাৎ করেই আমার এই ক্যারিয়ারে চলে আসা হয়েছে। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করেছি এবং যোগ্যতা ও ভাগ্য দুই মিলে হয়ে গেছে। তবে আমার এক খালা বিমানে ছিলেন ২০০১ সালে । তাঁকে দেখে ভালো লাগত। মনে হয়; আমার সেই খালাকে দেখেই আমার এই লাইনে আসার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

এভিয়েশন নিউজ: আমরা জানি এয়ারহোস্টেজ হওয়ার জন্য কিছু ট্রেনিং গ্রহণ করতে হয়। আপনার ট্রেনিং গ্রহণ সময়কালীন কিছু অভিজ্ঞতার কথা বলবেন কি?
সোহানি : এটা আসলে গতানুগতিক পড়ার বাইরের একটি বিষয়। সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং ইনজয় করার মতো একটি বিষয়। প্রত্যেকজন যাত্রীর সাইকলজি কি থাকবে, তাঁকে কিভাবে ম্যানেজ করবো, এভিয়েশন রুল সবই ভিন্ন। তবে ভালো এবং স্ম্যার্ট ক্যারিয়ার।

এভিয়েশন নিউজ: এয়ারহোস্টেজ জীবটিকে আপনি নিশ্চয় ভালবাসেন- কেন?
সোহানি : এই জীবনকে আমি ভালোবাসি এ জন্য যে, এখানে প্রতিদিন আমি নতুন নতুন বিষয় শেখা যায়। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা আলোড়িত হয় জীবন এবং শিক্ষা। আপনি যদি বলেন আমি স্বয়ংসম্পূর্ণ, সেটা ঠিক না, মানুষকে প্রতি মুহূর্তেই শিখতে হয়। প্রতিদিন নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। আমি এই পেশাকে ভালোবাকি কারণÑ কোন প্রকার কোনো একঘেয়েমি নেই এই পেশাতে।

এভিয়েশন নিউজ: এ পেশায় আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে মিশতে হয়, সে ক্ষেত্রে আপনার অভিজ্ঞতার কথা বলেন?
সোহানি : এটি আসলে কনফিডেন্টের ব্যাপার। আমার কনফিডেন্ট আছে। আমি সব ধরনের মানুষের সাথেই মিশতে পারি। এ পেশায় আসার কারনেই আমার যোগাযোগ বা কমিউনিকেশন অভিজ্ঞতাটা উন্নতট হয়েছে। যেমন ধরুন আমাকে একজন গ্রামের লোকের সাথেও মিশতে হচ্ছে আবার একজন ব্যাবসায়ী কিংবা কোনো হানিমুন কাপলদের সাথেও রুচি মাফিক আচরণ করতে হচ্ছে। আমি বলবো এ পেশা আপনাকে ঊাবৎ মৎববহ করে রাখবে। এখানে আপনি সব সময় তরুণ । একজন ৫ বছরের শিশুর সাথে যেমন আমি মিশি; তেমনি মিশতে হয় ৫০ বছরের একজন বৃদ্ধার সাথেও। সবার সাইকোলজি বুঝে আচরণ করতে হয়। যোগাযোগের মাধ্যমকে সহজ করা আর সাইকোলজি-রুচি বুঝতে পারা এ দুটোই এ পেশার প্রাপ্তি বলে আমার মনে হয়।

এভিয়েশন নিউজ: ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সে আপনার জব প্রোফাইল সর্ম্পকে কিছু বলেন ?
সোহানি : ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সে ২০০৮ -এর নভেম্বরে কেবিন ক্রু হিসেবে আমি যোগদান করি। এরপর ইন্সট্রাকটর হই । বর্তমানে আমি ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সে চিফ ইন্সট্রাকটর হিসেবে কর্মরত আছি।

এভিয়েশন নিউজ: অন্য কোনো পেশায় না জড়িয়ে এয়ারহোস্টেজ হলেন কেন?
সোহানি : এতোটা রোমাঞ্চ অন্য কোথাও নেই বলেই এই পেশায় এসেছি আমি। রোমাঞ্চ বলতে প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষ চেনা, নতুন নতুন দেশ ভ্রমণ করা, বিভিন্ন পেশার বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে মেশার এমন অভিজ্ঞতা অন্য কোনো চাকুরীতে নেই। এই সব কারণে আমি আসলে এই প্রফেশনটাকেই ভালোবেসে ফেলেছি। আর এই ভালোবাসাই অন্য কোথাও যাবার কথা ভাবতে দেয়নি আমাকে। এতো নতুন অভিজ্ঞতা অন্য কোথাও পাবনা বলেই মনে হয়।

এভিয়েশন নিউজ: এয়ারহোস্টেজ হিসাবে আপনার প্রথম দিনের অনুভূতির কথা বলুন?
সোহানি : প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা যা হয় একটু ভয় ভয় লাগছিল। তবু সাহস রেখেছিলাম মনে এবং আমার ছিলো আত্মবিশ্বাস। কাঙ্ক্ষিত এবং রোমাঞ্চকর এই পেশায় যোগদান ও কর্মজীবন শুরু মানেই কাক্সিক্ষত স্বপ্ন পূরণ সব মিলিয়ে উত্তেজনাটা অনেক ছিল বলেই হয়তো ভয় লাগছিল খানিকটা।

এভিয়েশন নিউজ: এই পেশায় আসার কারণে আপনাকে কোন সামাজিক প্রতিবন্ধকতার সম্মখীন হতে হয়েছেন কিনা?
সোহানি : না। এই পেশায় আসার কারণে আমাকে কোনো প্রকার কোনো সামাজিক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখিন হতে হয়নি।

এভিয়েশন নিউজ: নতুন প্রজন্মের কেউ যদি এ পেশায় আসতে চায়; তাদের উদ্দেশ্যে আপনার পক্ষ থেকে কি কিছু বলার আছে?
সোহানি : যে কেউ এ পেশায় আসতে পারে। বড় ব্যাপারটি হচ্ছে এখানে কোনো একঘেয়েমি নেই। এডভেঞ্চার আছে, মানুষের সাথে মিশতে পারা যায়, ঘুরতে পারা যায় সবই ইন্টারেস্টিং। এই ক্যারিয়ারে আমার পক্ষ থেকে নতুন প্রজন্মকে স্বাগতম।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.