নড়াইলের লোহাগড়ায় একজন প্রবাসীর ফেসবুক আইডি থেকে আপত্তিকর ছবি ভাইরাল হওয়ায় লায়লা খানম নামে এক স্কুলছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের ধলইতলা গ্রামে বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ লায়লার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় লায়লার মা বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় মামলা করেছেন।
উপজেলার ধলইতলা গ্রামের গোলাপ মুন্সীর ছেলে সৌদি প্রবাসী হাকিম মুন্সীর সঙ্গে প্রতিবেশী জামাল শেখের মেয়ে ইতনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী লায়লা খানমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে হাকিম মুন্সী তার অশ্লীল ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে।
হাকিম মুন্সী তিন সপ্তাহ আগে সৌদি আরবে চলে যায়। সে ৩১ মার্চ নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লায়লা ও তার আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে। ওই পোস্ট করা ছবি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়।
ওই ছবি দেখে লায়লা ও তার পরিবার প্রতিকার চেয়ে হাকিমের বাবা গোলাপ মুন্সী ও ভাই লালু মুন্সীকে জানায়। হাকিমের পরিবার থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে লায়লাসহ তার পরিবারের সদস্যরা হাকিমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন।
এ সময় হাকিম লায়লাকে বিয়ে করবেন বলে জানায়। পরবর্তীতে হাকিম বুধবার গভীর রাতে লায়লা ও তার মাকে ফোন করে শাসায়।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন হলে লোকলজ্জার ভয়ে লায়লা বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় বাড়ির বসতঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
পরিবারের লোকজন তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। আত্মহত্যার পূর্বে লায়লা তার প্রেমিক হাকিমকে দায়ী করে একটি চিঠি লিখে নিজের পড়ার টেবিলে রেখে দেয়।
খবর পেয়ে লোহাগড়া থানার পুলিশ লায়লার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় লায়লার মা বাদী হয়ে হাকিম, তারা বাবা গোলাপ মুন্সী, ভাই লালু ও সজীব মুন্সীকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় একটি মামলা করেছেন।
অভিযুক্ত সৌদি প্রবাসী হাকিমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।