সিলেটে চালু হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট

osmani-international-airportএভিয়েশন নিউজ: শিগগিরই সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের প্রধান বাধা কাটছে। শেষ হয়েছে রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণকাজ। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষা। কয়েকদিনের মধ্যে স্টেশনে পরীক্ষামূলক ফুয়েল সরবরাহ করা হবে বলে জানা গেছে।

তারপরই নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্টেশনটি বুঝে নেবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। রিফুয়েলিং স্টেশন চালু হলে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট উড়বে। প্রবাসীদের সহজ যাতায়াত ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পথ খুলবে- এমন প্রত্যাশা সিলেটবাসীর।

স্টেশন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ফুয়েল নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ফুয়েল পেলেই পাইপগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ (টেস্টিং) টেকনিক্যাল সব সমস্যা নিরসন করেই উদ্বোধন করা হবে।

ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ জানান, রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জেনেছি। কাজ শেষ হলে তারা উদ্বোধন করে আমাদের বুঝিয়ে দেবে।

২০১০ সালে ওসমানী বিমানবন্দরে রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১২ সালে বিমানের কনস্ট্রাকশন এভিয়েশন রিফুয়েলিং ফেসিলিটিজ (স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা) নামে সিলেটে রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনকন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রায় ৫১ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পদ্মা অয়েল কোম্পানি।

২০১৩ সালের জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরে প্রকল্পের মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়। একই সঙ্গে প্রকল্প ব্যয় অতিরিক্ত ২ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৫৩ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়। এ সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ না হওয়ায় ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এ প্রকল্পের আওয়াতায় দুটি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে।

বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে থাকছে রিফুয়েলিং স্টেশন। দক্ষিণ সুরমার পুরাতন রেলস্টেশন এলাকায় এক একর জায়গায় নির্মিত হচ্ছে রিফুয়েলিং স্টেশনের রিজার্ভ স্টেশন। যার কাজ আগেই শেষ হয়েছে। দক্ষিণ সুরমায় নির্মাণ করা হয়েছে দোতলা অফিস ভবন, তিনটি স্টোরেজ ট্যাংক, পাইপলাইন, বিদ্যুৎকেন্দ্র, রেস্ট হাউস, গ্যারেজ, অফিসার্স রুম ও স্টাফ রুম, দুটি ডিসপেন্সার ও ফিল্টারিং ব্যবস্থা।

অন্যদিকে, বিমানবন্দরে নির্মিত হচ্ছে তিনটি স্টোরেজ ট্যাংক, হাইড্রেন্ট লাইন, ডিপো রিফুয়েলার ডিসপেন্সার ও ফিল্টার এবং জেট ফুয়েল পরিবহনের জন্য ব্রিজার অর্থাৎ, বড় ট্যাংক লরি। রিফুয়েলিং স্টেশন চালু হলে সিলেট থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে আর কোনো বাধা থাকবে না বলে জানিয়েছেন একাধিক প্রবাসী।

এতদিন ফুয়েলিং সুবিধা দিতে না পারায় বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলো এখানে ফ্লাইট নিয়ে আসতে চায়নি। ১৯৯৮ সালের ২০ ডিসেম্বর ওসমানী বিমান্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার পর চালু হয় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। প্রথম দিকে কিছু দিন লন্ডন থেকে সরাসরি সিলেটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হলেও সিলেটে রিফুয়েলিং স্টেশন না থাকায় অল্প দিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় সরাসরি ফ্লাইট।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.