রোজার সময় যে কারণে পানি বেশি পান করবেন

রোজা, গরম আর করোনাভাইরাস রোধে শরীর সুস্থ রাখা- বেশি পানি পান করার জন্য এই কারণগুলোই যথেষ্ট। পানি পান করা নিয়ে হেলাফেলা করা আমাদের স্বভাবে দাঁড়িয়েছে। অথচ পর্যাপ্ত পানি পান যে আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী তা একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারা যায়। চিকিৎসকেরাও পানি পানের দিকটাতে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা উদাসীন থাকি। তবে সুস্থ থাকতে চাইলে এই উদাসীনতা বাদ দিতে হবে এখনই। বরং এই রোজায় পানি পান করতে হবে আরও বেশি।

পর্যাপ্ত পানি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সচল রাখে, যা করোনাভাইরাস ঠেকানোর কাজে সহায়তা করে বিস্তর। আবার অন্য দিকে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পানি কিন্তু বাড়ায় শরীরে প্রদাহের প্রবণতা, যার হাত ধরে বাড়ে অন্য বিপদ। কাজেই পানি পান করতে হবে শরীরের প্রয়োজন বুঝে। কার কতটুকু পানি প্রয়োজন তা জেনে নিতে হবে চিকিৎসকের কাছ থেকে। শরীরের ধরণ, ক্রনিক অসুখ, গঠনপ্রকৃতি, হাড় বা হৃদরোগের সমস্যা ইত্যাদি নানা ফ্যক্টর বুঝে চিকিৎসক ঠিক করে দেবেন, কতটুকু পানি শরীরের প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একেকজনের শরীরের অবস্থা ও ধরণ অনুযায়ী পানি পানের পরিমাণ ঠিক করা উচিত। সাধারণ সুস্থ মানুষ ২.৫-৩ লিটার পানি খেতে পারেন। খুব বেশি ব্যায়াম ও ঘরের কাজে করলে প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষ ৩.৫-৪ লিটার খেতে পারেন। তবে তিন লিটারের বেশি পানি পান করলে চিকিৎসকরে পরামর্শ নিয়েই করা উচিত। কারণ অতিরিক্ত পানির কিছু ক্ষতিকর দিকও আছে।

কোনো রোগের কারণে যদি পানি কম খাওয়ার নির্দেশ থাকে, যেমন কিডনির অসুখ, হার্ট ফেলিওর ইত্যাদি তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পানি পান খাওয়া বাড়াবেন না। তাতে বরং ক্ষতি হয়ে যাবে। তবে শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী পানি পান করলে, করোনা ঠেকানো ছাড়া এই রোজায় আরও কিছু উপকার মিলবে।

পানি পান করলে ক্লান্তি, ঘুমঘুম ভাবের বদলে শরীরে ফিরে আসে তরতাজা ভাব। ইফতার ও সেহরির মধ্যকার সময়টাতে অল্প বিরতি দিয়ে পানি পান করলে শরীর বাড়তি শক্তি পাবে।

শরীরে মাত্র ১-৩ শতাংশ পানি কমে গেলেই মেজাজ খারাপ হয়, শক্তি কমে, টান পড়ে স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতাতেও। রোজায় যেহেতু দিনের বেলা সম্ভব নয়, তাই যেটুকু সময় খাবার খাওয়া যাবে, সেটুকু সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। সুস্থ থাকতে এর বিকল্প নেই।

পানির বদলে কোলা, কফি খেয়ে কাটিয়ে দিলে অনেক সময় মাথা যন্ত্রণা, ঝিম ধরা ভাব শুরু হয়। তার মূলেও রয়েছে হালকা পানিশূন্যতা। পরপর কয়েক গ্লাস পানি পান করলেই মিটে যায় এই সমস্যা। পানি পান করুন, রোজায় কোলা বা কফি পান করা থেকে বিরত থাকুন।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হঠাৎ মিটে গেলে বুঝবেন এর মূলেও আছে পানির অবদান। কারণ কম পানি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কয়েক গ্লাস পানি বেশি খেলেই এই সমস্যার হাত থেকে মূক্তি পাওয়া যায়।

খাবার খাওয়ার আগে পানি পান করলে কম খাবারে পেট ভরে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে যারা খাওয়ার আগে আধ লিটার পানি খান, ১২ সপ্তাহের মধ্যে ৪৪ শতাংশ ওজন বেশি কমে তাদের। এছাড়া পানি কমে গেলে শরীর তার শারীরবৃত্তীয় কাজ চালানোর জন্য লবণের সঙ্গে পানি মিশিয়ে তা জমিয়ে রাখে শরীর। পানি বেশি পান করলে সেই প্রয়োজন পড়ে না।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.