করোনায় ইন্টারনেটে মানুষ কি খুঁজছে ?

বিশ্বের প্রায় সব দেশে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি এই সংক্রমণ ব্যাধি নিয়ে ইন্টারনেটে তথ্য খোঁজা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে।গুগল, ফেসবুকসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে এখন একটাই আলোচনা, তা হলো করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনের উহান শহর থেকে বিশজুরে ছড়িয়ে পরা  করোনাভাইরাস হতে নিজেদের রক্ষার নানা উপায় জানতে ইন্টারনেটের অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় বেশি বিচরণ করছেন বিশ্বের ঘরবন্দি কোটি কোটি মানুষ।

বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের কৌতুহলের অন্ত নেই। ভাইরাসটির বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে জনগণ নিজেদের কিভাবে প্রস্তুত এবং সুরক্ষিত করবে হবে তা জানতে চায়।

গুগল সার্চ ট্রেন্ড পর্যালোচনায় দেখা যায়, জানুয়ারি থেকে শুরু করে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অনুসন্ধান লাফিয়ে বাড়তে থাকে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সার্চ হয়েছে এই ভাইরাসটি সম্পর্কে এরপর আছে এর ‘লক্ষণ’ নিয়ে। এরপর ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজার’, ‘হাত ধোয়া’, ‘মাস্ক’ এই তিনটি কিউয়ার্ড নিয়ে বেশি অসুসন্ধান করেছে মানুষ। তবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে দিনকে দিন মানুষের জানার আগ্রহ কমে যাচ্ছে।

গুগলের তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহে সিলেট বিভাগের মানুষ সবচেয়ে করোনাভাইরাস নিয়ে তথ্য খুঁজেছে, এরপরে আছে যথাক্রমে চট্রগ্রাম বিভাগ (৯১%), ঢাকা বিভাগ (৮০%), বরিশাল বিভাগ (৭৯%), খুলনা বিভাগে ৭২ শতাংশ।

এদিকে করপোরেট, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করার (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) সুবিধা চালু করায় ওটিটি (ওভার দ্য টপ) সেবায় লোকজনের কথা বলার হারও বেড়েছে। এতে মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে। অন্যদিকে কমেছে বিভিন্ন অফিস ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের দুঃসময়ে আমাদের ইন্টারনেট ও টেলিকম সেবাদাতারা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান ডাটার (ব্যান্ডউইথ) পরিমাণ দ্বিগুণ করেছে। কথা বলার ক্ষেত্রেও কেউ কেউ সাশ্রয়ী প্যাকেজ চালু করেছে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে আরও নতুন খবর বা সুসংবাদ পাবেন দেশবাসী।’

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) সূত্র জানায়, বাসাবাড়িতে (হোম ইউজার) ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ ৩০-৪০ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে গত কয়েকদিনে মোবাইল অপারেটরগুলোর ব্যান্ডউইথ চাহিদা বেড়েছে। একাধিক অপারেটর এরইমধ্যে তাদের অতিরিক্ত চাহিদার কথা জানিয়েছে।

দেশে বর্তমানে এক হাজার ৪০০ জিবিপিএস (গিগাবিটস পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটে ব্যবহৃত হচ্ছে ৬০০ জিবিপিএস, বাকি ৮০০ জিবিপিএস ব্যবহৃত হচ্ছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবায়।

টেলিযোগোযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার হিসেবে, গত ফেব্রুয়ারি নাগাদ দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সংখ্যা ৫৭ লাখ ৪৩ হাজার। এসময দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক ছিল ৯ কোটি ৪২ লাখ ৩৬ হাজার।

Comments (0)
Add Comment