হজ টিকিট নিয়ে সিন্ডিকেট না করার নির্দেশ মন্ত্রীর
বিশেষ সংবাদদাতা
জঙ্গি হামলা মোকাবেলায় এবার হজ ক্যাম্পেও সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। এবছর হজ এজন্সিগুলোতে প্রবেশ করতে পাস লাগবে। তবে হজযাত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদের হজ ক্যাম্পে ভিড় করার সুযোগ দেয়া হবে না। হজ টিকিট নিয়ে কোনো সিন্ডিকেট বাণিজ্য হবে না বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি। বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান বিমানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৩ আগস্ট আশকোনায় হজ ক্যাম্পের উদ্বোধন করবেন জানিয়ে বিমানমন্ত্রী বলেন, ৪ আগস্ট বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং ৫ আগস্ট সৌদিয়া এয়ারলাইন্স প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করবে। ইতোমধ্যে হজ প্রস্তুতি সভার কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আশা করছি প্রতিবারের মতো এবারও সফলভাবে হজ সম্পন্ন হবে। এবার হজে শর্ট প্যাকেজ বলে কিছু থাকছে না। সবাইকে কমপক্ষে ৩০ দিনের প্রস্তুতি নিয়ে যেতে হবে। এর বাইরে কোনো শর্ট প্যাকেজ হবে না।
সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এবার হজ ক্যাম্পে সব থেকে বেশি নিরাপত্তা থাকবে। হজ এজন্সিগুলোকে পাসসহ সেখানে যেতে হবে। এর বাইরে আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে এবার ভিড় করার জায়গা থাকবে না। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
হজ যাত্রীদের বিমানবন্দরে নেয়ার জন্য বিমান ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সকে বলা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। হজ ফ্লাইটে টিকিট সিন্ডিকেটের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশেদ খান বলেন, ধর্ম সচিব ও বিমান সচিব বিষয়টি দেখছেন। বিমান ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সকে এ বিষয়ে বলে দেয়া হয়েছে। হজ টিকিট নিয়ে যেন কোন সিন্ডিকেট বাণিজ্য না হয়। দুই সচিব এটা মনিটর করবেন। সব জায়গায় এজেন্সি বাড়াতে বলা হয়েছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর (৯ জিলহজ) হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯১ হাজার ৭৫৮ জন এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার মানুষ হজে যেতে পারবেন।
মন্ত্রিসভা গত ১১ জানুয়ারি হজ প্যাকেজ অনুমোদন করে। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোরবানিসহ প্যাকেজে ৩ লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকা এবং কোরবানি ছাড়া প্যাকেজে ৩ লাখ ৪ হাজার ৯০৩ টাকা খরচ হবে। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মূল খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৪১ টাকা। এর সঙ্গে খাওয়া-বাড়ি ভাড়া যোগ করে এজেন্টরা প্যাকেজ ঠিক করবে।
আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ ফ্লাইট চলবে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আর ফিরতি ফ্লাইট ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। বিমান ১১২টি ডেডিকেটেড এবং ৩২টি সিডিউল ফ্লাইটে ৫২ হাজার ৬৪ জন হজযাত্রী পরিবহনের অনুমতি পেয়েছে। ১০৫টি ডেডিকেটেড ফ্লাইট ও ২৯টি সিডিউল ফ্লাইটে বিমান সৌদি থেকে হজযাত্রীদের দেশে আনবে। ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, বিমান সচিব এসএম গোলাম ফারুক, ধর্মসচিব আব্দুল জলিল, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।