বাংলাদেশ বিমানের এমডি নিয়োগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজ।
বিমানের এমডি নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হচ্ছে আজ। ছয় মাস ধরে এমডি নিয়োগের বিষয়টি ঝুলে থাকায় জরুরী ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বিমানের প্রকৌশল বিভাগের পরিচালক নিয়োগের পাশাপাশি বেশ ক’জন কর্মকর্তার চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধির মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে আজকের পর্ষদ সভায়। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট মাহবুব আলী বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে এমডি নিয়োগের বিষয়টি। যাকেই হোক- এমডি নিয়োগ দিতে হবে। এ নিয়ে আর কালক্ষেপণ করার সুযোগ নেই।
বিমানের নিয়োগের ইস্যুটি ঝুলে আছে গত ছয় মাস ধরে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিল গত ১২ মার্চ। এমডি ও সিইও নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবেদনকারীর বয়স ৪৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে। এভিয়েশন খাতে ২০ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা ও বিমানের ব্যবস্থাপনার উচ্চপদে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে ১০ বছরের। গত ১৫ এপ্রিল ছিল অবেদনপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। ১২ বিদেশীসহ ৭০ প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। সাক্ষাতকার পর্ব শেষ করে দু’জন বিদেশীকে পছন্দের শীর্ষে রাখা হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিদেশী নিয়োগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিমান। যে কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে যায়। এ অবস্থায় বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের পরিচালক ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিল ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করছেন এমডি ও সিইও পদে।
জানতে চাইলে গত রবিবার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মহিবুল হক বলেন, বিমানে এমডি, ডিএমডি নিয়োগের বিষয়টি একই পর্যায়ে আছে। বিমানের এমডি নিয়োগের বিষয়ে শর্টলিস্ট করা হয়েছে। বিমান বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আশা করছি ৩ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
কে হতে পারে এমডি ও ডিএমডি জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, অপেক্ষা করুন দুটা দিন।
জানা গেছে- বিমানের এ দুটো শীর্ষপদে ঠিক এই মুুহূর্তে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও যুুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদেরকে নিয়োগ দেয়ার পক্ষেই সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
বিমানের প্রশাসন শাখা সূত্রে জানা গেছে- এমডি ও ডিএমডি ছাড়াও আজকের সভায় প্রকৌশল বিভাগের পরিচালক পদে পরিবর্তন ও বেশ ক’জন কর্মকর্তার বয়সসীমা বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করা হবে। প্রকৌশল বিভাগের বর্তমান পরিচালক সাজ্জাদুর রহিম বিগত দু বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে রয়েছেন।
জানা গেছে, বিমানের বেশ ক’জন কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাদেরকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হবে। এদের মধ্যে রয়েছেন- মহাব্যবস্থাপক (কাস্টমার সার্ভিস) নুরুল ইসলাম হাওলাদার, ডিজিএম ওসমান নূর, ম্যানেজার মিরন ও ম্যানেজার দিবাকর নয়ন। এদেরকে চুক্তিভিত্তিক চাকরিতে নিয়োগ দেয়ার যৌক্তিকতা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিমানের একজন কর্মকর্তা বলেন, কাস্টমার সার্ভিসে এমনিতেই দক্ষ জনবলের চরম ঘাটতি রয়েছে। এর মাঝে মহাব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম হাওলাদার যদি আগামীকাল বুধবার অবসরে চলে যান- তাহলে পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হতে পারে। ইতোমধ্যে পেশাদার ও দক্ষতার বিচারে নুরুল ইসলাম হাওলাদার গত তিন বছর ধরে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে শয্যাশায়ী অবস্থায়ও তিনি বিমানবন্দরের যাত্রীসেবার বিষয়টি নজরদারি করেন- যা বিমানের শীর্ষমহলেও তার প্রতি সহানুভূতির উদ্রেক করে। তবে ম্যানেজার লেভেলের কর্মকর্তাদের চাকরির মেয়াদ কেন বাড়ানো হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এসব পদে তো লোকবলের কোন অভাব নেই।