তুরস্কে ভয়ংকর দাবানলের মধ্যেও জীবিত ‘ছাগল ছানা’
তুরস্কের বিভিন্ন স্থানে দাবানলের আগুন জ্বলছে। এতে এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু লেলিহান এই অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে। আগুন লাগার ২-৩ ঘণ্টা পরেও একটি ছাগল ছানাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ তুরস্কের আনাতোলিয়ার মানাভগাতের একটি খামারে।
তুরস্কের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহর খবরে বলা হয়েছে, আগুন যখন কৃষক ‘সারকান বায়াতের’ গ্রামে আঘাত হানে তখন তিনি তার গরুগুলোকে আগুন থেকে বাঁচতে দৌড় দেওয়ার জন্য চিৎকার করেন। ভয়াবহ আগুনে চোখের সামনে প্রিয় প্রাণীগুলো পুড়ে মারা ছিল-৩০ বছর বয়সী বায়াতের জীবনে সবচেয়ে ভয়ংকর মুহূর্ত।
আগুনে কৃষক সারকান বায়াত ৮টি প্রাণী হারালেও তিনি দেখতে পান, অসহায় অবস্থায় সদ্য জন্ম নেওয়া একটি ছাগল ছানা পড়ে আছে। গর্ভধারিণী ছাগলটি আগুনে মারা গেলেও ছানাটি নিঃশ্বাস নিচ্ছিল।
বায়াত বলেন, আগুন নিভে যাওয়ার দুই-তিন ঘণ্টা পর ছানাটিকে আমি ভূমিতে পড়ে থাকতে দেখি। আমরা ছানাটির নাম দিয়েছি ‘মিরাকল’ (অলৌকিক ঘটনা)।
ছাগল ছানাটির মালিক আরও বলেন, বুনো আগুনে আমরা আরেকটি ছাগলকে জীবিত পেয়েছি। তার একটি ছানা রয়েছে। সেটি আমাদের দ্বিতীয় বিস্ময়।
তুরস্কের এই কৃষক বলেন, দক্ষিণ তুরস্কের আনাতোলিয়ার মানাভগাতে তার খামার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ছাগলের বাচ্চাটি জীবিত পেয়ে তিনি মহাখুশি।
এদিকে তুরস্কের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় বনভূমিতে ছড়িয়ে পড়া এই দাবানল নেভাতে ইরান দমকল বিমান পাঠিয়েছে। এসব বিমান থেকে মুষলধারে বৃস্টির মতো পানি ছিটানো হচ্ছে দাবানলের লেলিহান শিখায়। আঙ্কারায় নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ ফারাজমান্দ বলেছেন, ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টারও তুরস্কে পৌঁছেছে এবং সেগুলো রোববার থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করবে।
এরই মধ্যে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় ১৭ প্রদেশের অন্তত ৭০ এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতির সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে আজিয়ান সাগর উপকূলবর্তী পর্যটন নগরী মারমারিসের। সেখানকার বেশ কয়েকটি রিসোর্টে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হুমকির মুখে পড়েছে পর্যটন ব্যবসা।
দেশি বিদেশি বহু পর্যটক ও স্থানীয় অধিবাসীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশি অগ্নিনির্বাপক পাঁচটি বিমান, ৪৫টি হেলিকপ্টার এবং ড্রোনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে এক হাজারেরও বেশি দমকলকর্মী।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, আজারবাইজন, রাশিয়া, ইউক্রেন ও সর্বশেষ ইরান থেকে অগ্নিনির্বাপক বিমান এসে পৌঁছার ফলে দাবানল নেভানোর কাজ অনেকটা সহজ হয়েছে।