অনিয়ম-দুর্নীতির পাইলট নিয়োগে অভিযোগ বাপার, তদন্তের দাবি
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে পাইলট নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ এয়ারলাইন পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)। সংগঠনটি বলছে, বিমানে পাইলট নিয়োগে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইন লঙ্ঘন হয়েছে। বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্বজনরা নিয়োগে সুবিধা পাচ্ছেন। এসব অনিয়ম তদন্ত করতে হবে। বৃহস্পতিবার বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. যাহিদ হাসানকে দেওয়া এক চিঠিতে এসব অভিযোগ করে বাপা।
রোববার (২৮ আগস্ট) ওই চিঠির কপি পেয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিমানের পাইলট নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিমানের ট্রেনিং বিভাগের (সিওটি) প্রধানকে। তার স্ত্রী পাইলট হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন, যা নিশ্চিতভাবে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। পাইলট নিয়োগের ক্ষেত্রে বিমানের অপারেশনাল নির্দেশনা (ম্যানুয়াল) বাপার সঙ্গে বিমানের চুক্তি চরমভাবে লঙ্ঘন হয়েছে। বাপা এসব নিয়ে প্রশ্ন তুললেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। নতুন করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া ওই ফ্লাইট কর্মকর্তারা নিয়মিত ফ্লাইট কর্মকর্তা হিসেবে ফ্লাই করতে পারবেন না, যতক্ষণ না তারা ৩০০ ঘণ্টা ফ্লাই করছেন। এসব ফ্লাইট কর্মকর্তাদের জন্য এখন বিমান বড় অঙ্কের টাকা খরচ করে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিমানের বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ চালানোর জন্য নতুন করে কোনো পাইলট নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে ক্রু নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এবং ক্রুদের বাছাই করে মেইল পাঠানো হয়েছে। ফ্লাইট কর্মকর্তা পদে একজন এয়ারলাইন ট্রান্সপোর্ট পাইলট লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ভুয়া সনদ দিয়েছেন। তার সিমুলেটর ট্রেনিং করেননি। পরে তাকে বিমানের খরচে এই প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়, যা সম্পূর্ণ অপচয়। বিমানের বোয়িং-৭৭৭ এর জন্য জ্যেষ্ঠ পাইলটদের পাশ কাটিয়ে এক জুনিয়র পাইলটকে পাইলটদের প্রশিক্ষক বানানো হয়েছে, যা অনৈতিক। এতে জ্যেষ্ঠ পাইলটদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
গাফিলতির কারণে বোয়িং-৭৮৭ ফ্লাইটের ক্রুদের বিদেশে গিয়ে জেডএফটিটি ও পিপিসি প্রশিক্ষণ পুনরায় (রিটেক) নিতে হচ্ছে জানিয়ে বাপার চিঠিতে বলা হয়, এই প্রশিক্ষণে বিমানের একটা বড় অঙ্কের অর্থ খরচ হবে। বিমানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্ত্রীকে পাইলট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণের সময় ওই নারী পাইলটের এ বিষয়ক জ্ঞান কম থাকায় তাকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে ওই পাইলটের পক্ষে বোয়িং-৭৭৭ এর ট্রেনিং নেওয়াও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এসব অনিয়মের কারণে বিমানের বেশ কয়েকজন পাইলটের লাইসেন্স লঙ্ঘিত হয়েছে এবং ওই পাইলটদের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছে।
এ বিষয়ে জানতে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. যাহিদ হাসানের মুঠোফোনে একাধিকার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।