বিমানের কেউ আয় করতে না পারলে বেতনও পায় না: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কোভিড সময়েও আয় অব্যাহত ছিলো। এখনও লাভে আছে বলে জানিয়েছেন বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপ’-এ তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সংলাপ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিএসআরএফ-এর সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে বিদেশে মানুষের একটি পারসেপশন যে বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা সরকারি বেতন পায়। এ কারণে বিমানকে হয়তো সঠিকভাবে পরিচালনায় আমরা ব্যার্থ। শ্রদ্ধা রেখেই ক্লিয়ার করতে চাই।
আমাদের মন্ত্রণালয় অন্য মন্ত্রণালয় থেকে স্বতন্ত্র। এই মন্ত্রণালয়ের সবগুলো অধিদপ্তরকেই নিজেদের আয়ে চলতে হয়। নিজে যদি বিমান উপার্জন করতে না পারে তাহলে তারা বেতন পাবে না। এখানে সরকার থেকে কোনো বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয় না।
‘এই কোভিডের মধ্যেও, সারা বিশ্বে যত বড় এয়ারলাইনস তত বড় ক্ষতি তাদের। পর্যটনেও একটি বড় বিপর্যয় হয়েছে। সেখানেও আমরা রাত দিন কাজ করেছি। সেই সময়েও আমরা চেষ্টা করেছি, বিভিন্ন দূতাবাসে যোগাযোগ করে যাতে আমাদের বিমানগুলো কার্গো অপারেট করে হলেও এই দু:সময়ে টিকে থাকতে পারে। সেই সময়েও আমাদের আয় অব্যাহত ছিলো। বিমান সব সময়ই লাভের মধ্যেই ছিলো।
বিশ্ববাজার অস্থিতিশীল, তেলের দাম বেড়েছে। এরমধ্যে টরেন্টো ফ্লাইটে ভালো সাড়া পেয়েছি, আমরা পুরোপুরি যাত্রী পেয়েছিলাম। আমরা চাই বিমান সঠিকভাবে চলুক। কেউ অনিয়ম করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এখন বিমান যথাসময়ে ফ্লাইটগুলো ছেড়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মান রেখে বিমান যাতে সেবা দিতে পারে সেদিকে নজর রেখে আমরা কাজ করছি।
মাহবুব আলী বলেন, এয়ারপোর্টে যাতে কোন যাত্রী হয়রানি না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকতে বলেছি। অতিরিক্ত সতর্কতার কারণে আবার যেন কেউ হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে নজর রাখতে বলেছি। সবাই যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে সেটি মনিটরিং করা হয়। বিমানের এমডি প্রতিদিনই এয়ারপোর্টে যান, তিনি নিজে উপস্থিত থেকে অনেক সময় মনিটরিং করেন। প্রধানমন্ত্রী চেয়েছেন যাত্রীদের যেন ভালো সার্ভিস দেয়া হয়, সেদিকে সবসময় লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। ২০২৩ এর অক্টোবরে নবনির্মিত থার্ড টার্মিনাল থেকে বিমান চলাচল করতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, কক্সবাজারকে আরো নান্দনিক করতে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সৈয়দপুরে নান্দনিক টার্মিনাল নির্মাণ হয়েছে। যশোরের টার্মিনালকে আধুনিক টার্মিনাল করা হয়েছে। বরিশাল বিমানবন্দরের কাজও আমরা হাতে নেব। আমাদের বিমান বন্দরের কাঙ্খিত সেবা হয়ত দিতে পারিনি, তবে চেষ্টার ত্রুটি নেই। আমরা কার্গো সেবা সম্প্রসারণের জন্য সিলেটে কার্গো ভিলেজ করেছি, চট্টগ্রামেও সেটি করার উদ্যোগ নিয়েছি। কার্গো নিয়ে এখন তেমন সমস্যা হয় না।
পর্যটন করপোরেশন নিয়ে তিনি বলেন, পর্যটন করপোরেশনকে কেন কাঙ্খিত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে পারিনি সেই প্রশ্নটি বার বার আসে। আমরা চাই বিদেশী বিনিয়োগও আসুক। করোনায় পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ছিল, পরে সেটি খুলে দেয়ার পর প্রথম মাসে ১ কোটি টাকা লাভ করেছি, দ্বিতীয় মাসে ২ কোটি টাকা লাভ করেছি। আমরা একটা সুফল আনতে চাই।
আরেক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে পাইলট নিয়োগে ওঠা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, এটা সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তদন্ত করা হয়েছে, বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে, আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরাও তদন্ত করেছি, বিমানের নিজস্ব তদন্তও হয়েছে। এর মধ্যে ইনিশিয়ালি যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে সম্ভবত ৯ জন তারা সিলেক্ট করেছিল এর মধ্যে ৯ জনই বাদ পড়েছে বা জয়েন করেনি।