পাকিস্তানের আকাশ পথ বন্ধ থাকায় বিমানের সিডিউল লন্ডভন্ড

পাক-ভারত উত্তেজনার মাঝে পাকিস্তানের আকাশপথে জরুরি অবস্থা জারি করায় বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ বিমান।

এতে লন্ডন ও কুয়েতগামী  রুট পরিবর্তন করতে হয়েছে  বিমানকে। কারণ এসব রুটের সব ফ্লাইট পাকিস্তানের ওপর দিয়ে যেতে হয়। নতুন রুটে চলার কারণে বিমানকে আরো বেশি দুর ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে এক দিকে বিমানের জ্বালানি ব্যয় ও সময় বেড়ে যাচ্ছে।অপর দিকে নতুন দেশ থেকে অনুমতি নিতে গিয়ে সেখানেও খরচ ও সময় যাচ্ছে।

এর মধ্যে বুধবার লন্ডন ফ্লাইটকে রিফুয়েলিং করার জন্য আবুধাবিতে অবতরণ করার কারণে ফ্লাইটটি নির্দিষ্ট সময়ের ৫ ঘণ্টা বিলম্বে লন্ডন পৌঁছায়।

এ বিষয়ে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ বলেন, পাকিস্তানের রুট পরিবর্তন করে বিকল্প পথ ব্যবহার করায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় বেশি লাগতে পারে। কিছু জ্বালানি বেশি লাগবে।

সিভিল এভিয়েশন জানায়, ঢাকা থেকে লন্ডন ও কুয়েত যেতে বিমানের ফ্লাইটকে পাকিস্তানের ওপর দিয়ে চলাচল করতে হয়। এটাই বিমানের আকাশপথ। এ অবস্থায় বুধবার পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব বিমানবন্দরে বেসামরিক ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ ঘোষণা করায় বিপাকে পড়ে বিমান।

বুধবার সকালে লন্ডনগামী ফ্লাইট আকাশে ওড়ার পর জানতে পারে পাকিস্তানের আকাশপথে সামরিক-বেসামরিক বিমান চলাচল নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে তিনি ভারত থেকে পাকিস্তানের পরিবর্তে রাশিয়া হয়ে আবুধাবী পৌঁছান। এ জন্য ওই ফ্লাইট ৫ ঘণ্টা বিলম্বে লন্ডন পৌঁছে।

এ বিষয়ে বিমানের কাস্টমার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে- ডিএফও ক্যাপ্টেন ফারাহাত জামিল এ বিষয়ে আগাম প্রস্তুতি নিতে না পারায় বিমানকে এত বড় মাসুল দিতে হয়েছে। এটা তার চরম ব্যর্থতা। তিনি যদি আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিতেন তাহলে লন্ডন ফ্লাইট ৫ ঘণ্টা বিলম্বের শিকার হতো না। ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা তো দুদিন আগেই তীব্র আকার ধারণ করে।

এ বিষয়ে বিমানের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাকা থেকে পাকিস্তানের ওপর দিয়ে সরাসরি লন্ডন যেতে যে পরিমাণ তেল পুড়ে, ভারতের ওপর দিয়ে যেতে হলে তার চেয়ে বেশি জ্বালানি দরকার হয়। বিকল্প এ পথে লন্ডন গেলে, জ্বালানি ফুরিয়ে আসার আশঙ্কা ছিল।

ফলে বাধ্য হয়ে ওই ফ্লাইট আবুধাবিতে অবতরণ করে প্রয়োজনীয় জ্বালানি সংগ্রহ করে। সেখান থেকে রওনা হয়ে লন্ডন পৌঁছতে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে দু’ঘণ্টা বেশি সময় লেগেছে।

এ বিষয়ে বিমানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও দীর্ঘ ত্রিশ বছরের উড্ডয়ন অভিজ্ঞ ক্যাপ্টেন শেখ নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিমানের করার কিছু নেই। উদ্ভূত পরিস্থিতি বা আকস্মিক সঙ্কটে লন্ডন ফ্লাইটের পাইলট যা নিরাপদ ও শ্রেয় সেটাই করেছেন। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, ভারত ও পাকিস্তান বর্তমানে যে ধরনের মনোভাব নিয়ে একে অপরকে ঘায়েল করার রণকৌশল নীতি গ্রহণ করেছে তাতে এ দুটোর কোনটার আকাশপথই বাংলাদেশি এয়ারলাইন্সের জন্য নিরাপদ নয়।

তিনি বলেন, বুধবার সকালে যেভাবে পাকিস্তান ও ভারত একে অপরের বিমান ভূপাতিত করার দাবি করছে তাতে উভয় দেশই বাংলাদেশি পাইলটদের জন্য আতঙ্কের।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.