প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ছিনতাইয়ের কবল থেকে রক্ষা পাওয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিমানটির পাইলট এবং ক্রুদের সাহস ও বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী তাদের ‘নায়ক’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, তারা অসীম সাহসিকতার সঙ্গে সফলভাবে ছিনতাই ঘটনার পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছেন। খবর বাসসের
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটা অনেক বড় সফলতা যে, এয়ারক্রাফট নষ্ট হয়নি, একজন যাত্রীরও ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি এবং কোন জান-মালের ক্ষতি ছাড়াই অপারেশনটি সফলভাবে শেষ হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশারাফুল আলম খোকন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে এসব কথা জানান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সেদিন ছিনতাইয়ের কবলে পড়া বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী ফ্লাইট বিজি-১৪৭ এর পাইলট এবং ক্রুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে ওইসব কথা বলেন।
বিমানের পাইলট ও ফ্লাইট এটেনডেন্টদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা অনেক সাহস ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন।’ উপ-প্রেস সচিব বলেন, তাদের এই তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা এবং সাহসকে ‘অসামান্য’ আখ্যা দেন প্রধানমন্ত্রী।
পলাশ আহমেদ নামের এক যুবক ছিনতাইয়ের অপচেষ্টা চালালে ১৩৪ জন যাত্রী নিয়ে দুবাইগামী বিমানের ৭৩৭-৮০০ বিমানটি (ময়ূরপঙ্খী) রোববার বিকেল ৫ টা ৪১ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়। পরে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ইউনিটের ৮ মিনিটের অভিযানে সে নিহত হয়।
ঘটনাটির সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রেখেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার তখন চিন্তা একটাই ছিলো যে, সম্পদ গেলে সম্পদ পাওয়া যাবে। কিন্তু একটি মানুষেরও যেন কোন ক্ষতি না হয় এবং সকলকে নিরাপদে বিমান থেকে বের করে আনা যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এ ধরনের বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও এত সুন্দরভাবে নিরাপদে ঘটনার পরিসম্পাপ্তির কোন নজির নেই। এ সময় বিভিন্ন মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো হচ্ছিল বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
উপ-প্রেস সচিব বলেন, ছিনতাইকারীকে কিভাবে ব্যস্ত রেখে অন্য যাত্রীদের তারা জরুরি অবতরণের পর এক্সিট উইন্ডো দিয়ে বের করে দেন সেই ঘটনা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বর্ণনা করেন বিমানটির পাইলট গোলাম শফি।
পাইলট বলেন, ছিনতাইকারী বারবার ককপিটে প্রবেশের চেষ্টা চালালেও তিনি এবং ক্রুগণ মিলে ককপিটকে নিরাপদ রাখতে সমর্থ হন।
ভীত-সন্ত্রস্ত যাত্রীদের শান্ত এবং চুপচাপ রাখাটাও সে সময়ে একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিমানটির ক্যাপ্টেনসহ ফ্লাইট এটেনডেন্টগণ বিষয়টির সার্বক্ষণিক তদারকির জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এ সময় পাইলট ছাড়াও ফাস্ট অফিসার মুনতাসির মাহবুব ও পাঁচ কেবিন ক্রু উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক এবং বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
ক্রুদের মধ্যে ছিলেন- কেবিন ক্রু শফিকা নাসিম, হোসনে আরা, শরিফা বেগম, শাহেদুজ্জামান ও আব্দুস শাকুর মোজাহিদ।