সিভিল এভিয়েশন ও ট্যুরিজম খাত নিয়ে প্রাক বাজেট অলোচনা সভায় বক্তারা পর্যটন খাতের উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে আরো সহযোগিতা প্রদান ও বাজেটে পর্যটন খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, বর্তমান সরকারের আমলে যেখানে সরকারি খাতে মাত্র ৪৪টি পর্যটন কেন্দ্রীক স্থাপনা তৈরী হয়েছে সেখানে বেসরকারি খাতে স্থাপনা তৈরী হয়েছে ১শটিরও বেশি। একই সঙ্গে তারা বলেছেন, সরকারি পর্যটন কেন্দ্রের চেয়ে বেসরকারি পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকরা বেশি সেবা পাচ্ছেন। এই অবস্থায় বেসরকারী পর্যায়ে পর্যটন খাত উন্নয়নে উদ্যোক্তাদের ডিউটি ফ্রি ভ্যাহিকাল আমদানী, ট্যুরিজম সেন্টার ও পাঁচ তারকা হোটেল তৈরীতে প্রনোদনা প্রদান, শুল্কমুক্ত আমদানী সুযোগ দেয়ার দাবি জানান। বেদিশী পর্যটক আসার জন্য অন অ্যারাইবল ভিসা আরো সহজ করার ও পর্যটনের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের দাবী জানান।
শুক্রবার এভিয়েশন এন্ড ট্যুরিজম জানালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (এটিজেএফবি) আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। পর্যটন করপোরেশনের আওতাধীন হোটেল অবকাশ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, পর্যটন মন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কর্ণেল (অব.) ফারুক খান, সিপিডির এডিশনাল পরিচালক ও গবেষক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম সানাউল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রফিকুজ্জামান, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী, বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান খান কবির, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের পরিচালক ড. নাসির উদ্দীন, তোয়াবের পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুল ইসলাম বুলু, বেঙ্গল ট্যুরস এর নির্বাহী পরিচালক মাসুদ হোসেন, আটাবের সভাপতি মনজুর মোরশেদ প্রমুখ।
বক্তারা আসন্ন ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে পর্যটন শিল্পের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানান। অনুষ্ঠানে কি নোট আলোচনা করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ এর অতিরিক্ত পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। কি নোট পেপারে তিনি বলেন, আসন্ন বাজেটে পর্যটন শিল্প সহায়ক অবকাঠামো নির্মানের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
এটিজেএফবি এর আহবায়ক নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় এ প্রাক-বাজেট আলোচনায় বক্তারা বলেন, গত তিন মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতায় হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে পর্যটন শিল্প। ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সহিংসতা থেকে পর্যটন খ্যাতকে মুক্ত রাখার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোতে আহবান জানানো হয়। বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ২০১৬ সালকে পর্যটন বছর হিসেবে ঘোষণাকে নিয়ে আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে একটি আঞ্চলিক সম্মেলন করা হবে। ২০১৬ সালকে পর্যটন বছর হিসেবে ঘোষণা করার যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে সকলের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন দেখা যাবে।
বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে পর্যটনে আগ্রহ বাড়ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মানুষ ছুটি পেলেই ঘুরতে চলে যায়। বাসায় বসে থাকে না। এই জন্য বেসরকারি ট্যুর অপারেটরদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। বেসরকারি ট্যুর অপারেটরদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে পর্যটনখাতের সম্ভাবনা বাড়ছে। বিদেশিরা এই দেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। এজন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। দূতাবাসগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যাতে ভিসা জটিলতা আর একটু সহজ করে। তিনি দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যেক্তাদের এগিয়ে আসার আহবান জান।ন।
বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটনের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান মো. ফারুক খান বলেন, ট্যুর অপারেটরদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হয়েছে, আরো দেওয়া হবে। এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ে আমার একটি পলিসি গাইড লাইন দেওয়া আছে। তিনি বলেন, ট্যুর অপারেটর এবং শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য এয়ারপোর্টে টাকার বিনিময়ে ভিআইপি সার্ভিস চালু করা দরকার।