এভিয়েশন নিউজ: বিমানবন্দর বলতে আমরা বরাবরই বেশ সুরক্ষিত একটি জায়গা বুঝি। বিমানবন্দরের কার্যালয় থেকে শুরু করে রানওয়ে পর্যন্ত সব কিছুই বেশ কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই থাকে। বিশেষ করে রানওয়ে। কারণ রানওয়েতে সে সকল জিনিসপত্র থাকে তার একটু নড়চড় ডেকে আনতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। কিন্তু পৃথিবীর সকল বিমানবন্দরই কি এইরকম কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই থাকে? রানওয়ে গুলো কি একেবারে ঝকঝকে তকতকে এবং সুরক্ষিত? সব বিমানবন্দর একরকম নয়। আজকে আপনাদের জন্য রইল কিছু ভয়াবহ বিমান বন্দরের ছবি। এই বিমানবন্দরগুলোর রানওয়ের ছবি দেখলেই বুঝে যাবেন কেন এই বিমানবন্দরগুলোর এই নামকরণ হয়েছে।
সি আইস রানওয়ে, অ্যান্টার্কটিকা
এই বিমানবন্দরটির রানওয়ে মাটি এবং পীচ ঢালা কোনো রাস্তার ওপরে তৈরি নয়। এই রানওয়ে পুরোটাই তৈরি হয়েছে বরফের ওপর। এর অর্থ সামান্য একটু বেশি চাপ এবং ওজনের কারণে যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে বরফের তৈরি এই রানওয়ে। এছাড়া বরফের পিচ্ছিল ভাব তো রয়েছেই।
ম্যাটেকেইন এয়ার স্ট্রিপ, আফ্রিকা
রানওয়েতে বিমান খানিকদূর গিয়ে আকাশপথে উড়াল দেয়, এটিই বিমান চালানোর নিয়ম। কিন্তু যদি রানওয়েতে খানিকদূর যাওয়ার পরে বিমান উড়াল না দিয়ে নিচের দিকে নামতে থাকে তবে? হ্যাঁ, লেসোথোর এই বিমানবন্দরটির রানওয়ে একেবারে পাহাড়ের কিনারায় রয়েছে। পাহাড়ের কিনারা শেষ তো রানওয়ের শেষ।
ব্যাররা, স্কটল্যান্ড
অসাধারণ সুন্দর এই বিমানের রানওয়েটি। কিন্তু তারপরও ১০০০ জন পাইলটের জরিপে বেশ বিপদজনক ও ভয়ংকর নামে আখ্যায়িত হয়েছে এই রানওয়ে। কারণ জানতে চান? কারণ হলো এই রানওয়েটি আর কিছুই নয় একটি সমুদ্র সৈকত। এই সৈকতে বিমান তখনই ল্যান্ড করানো সম্ভব যখন সমুদ্রে ভাটা আসে।
প্রিন্সেস জুলিয়ানা এয়ারপোর্ট, ক্যারিবিয়ান
ধরুন আপনি সমুদ্র সৈকতে আরাম করছেন তখনই সৈকতের বালু এবং আরও জিনিসপত্র বিমানের বাতাসের কারণে আপনার চোখেমুখে ঢুকে গেলো। কেমন লাগবে আপনার? এই এয়ারপোর্টের বিমান সৈকতে বসা মানুষের মাথার ওপরেই বলতে গেলে ল্যান্ড করে থাকে।
কঙ্গোনহাস, সাও পাওলো, ব্রাজিল
ফ্লাপি বার্ড গেইমটি তো বর্তমানে সবাই খেলেছেন, তাই না? একটি ছোট্ট পাখিকে উঁচু নিচু পাইপের মাঝে দিয়ে বাঁচিয়ে নিয়ে চলার গেইম। এই বিমানবন্দরে প্লেন ল্যান্ড করানো কিছুটা এই গেইমের মতোই। কারণ বিমানবন্দের আশেপাশে রয়েছে অনেক উঁচু উঁচু বিল্ডিং।
কোউরকেভ্যাল, ফ্রান্স
১,৭২২ ফিট উচ্চতায়, আল্পস পর্বতমালায় এই বিমানবন্দরটির অবস্থান। শুধু তাই নয় মেইকটেন এয়ার স্ট্রিপের মতোই পর্বতের শেষে রয়েছে এর রানওয়ে। একটু এদিক সেদিক হলেই বিমান পর্বত থেকে একেবারে নিচে পড়ে যেতে পারে।
ফাঞ্চাল, ম্যাডেরিয়া
বেশ মজবুত স্থাপত্য বলতে হবে এই বিমানবন্দরের রানওয়েকে। কারণ আর কিছুই নয়, সমুদ্রের ওপরে বিশাল বিশাল পিলারের ওপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই বিমানবন্দেরের রানওয়ে।
তেঞ্জিং-হিলারি, নেপাল
৯,০০০ ফিট উচ্চতায় হিমালয়ের একটি পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে এই বিমানবন্দরটি। সব চাইতে ভয়ানক কথা হলো একটি বিমানবন্দরের রানওয়ে যতোটুকু হওয়া দরকার তার মাত্র দশ ভাগের এক ভাগ জায়গা রয়েছে এই বিমানবন্দরে।
সাবা আইল্যান্ড এয়ারপোর্ট, ক্যারিবিয়ান
হানিমুনের জন্য সব চাইতে আকর্ষণীয় এই স্থানটির এই একটি মাত্র সমস্যাই রয়েছে। তা হলো বিমানবন্দরের রানওয়ে। বিশ্বের সব চাইতে ছোট এই রানওয়ের তিন পাশেই রয়েছে সমুদ্র এবং এক পাশে পাহাড়।
কাই তাক এয়ারপোর্ট হংকং
এই বিমানবন্দরটি বিশ্বের সব চাইতে ভয়াবহ এবং বিপদজনক বিমানবন্দরের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে ছিল। ছবি দেখেই বুঝতে পারছেন এর কারণ। আর সেকারনেই ১৯৯৮ সাল থেকে এই বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
– ইন্টারনেট অবলম্বনে।