সহায়তা চেয়ে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের দেশী-বিদেশী ২৮ পাইলটের চিঠি

দীর্ঘ সময় ধরে আর্থিক সংকটে থাকায় বাংলাদেশের বেসরকারি বিমানসংস্থা রিজেন্ট এয়ারওয়েজ গত বছরের

আগস্ট থেকেই কর্মীদের নিয়মিত বেতন দিতে পারছিল না।

এমন অবস্থার মধ্যেই কভিড-১৯-এর সংক্রমণ রোধে গত মার্চ থেকে অন্যান্য বিমানসংস্থার মতোই বন্ধ হয়

রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ফ্লাইটও।

আয় বন্ধ হওয়ায় মার্চ থেকেই অধিকাংশ কর্মীকে বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠিয়েছে বিমানসংস্থাটি।

পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া থাকায় নিজেদের দুরবস্থার বিষয়টি উল্লেখ করে সম্প্রতি বেসামরিক বিমান

চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) চিঠি দিয়েছে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ২৮ বৈমানিক।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, বকেয়া বেতনের বিষয়টি উল্লেখ করে গতকাল বেবিচক চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি

দিয়েছেন রিজেন্ট এয়ারওয়েজের বৈমানিকরা।

এতে বলা হয়, ১০ মাস ধরেই নিয়মিত বেতন পরিশোধ করছে না রিজেন্ট কর্তৃপক্ষ।

যদিও মার্চের শেষ পর্যন্ত ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন বৈমানিকরা।

কিন্তু জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত কোনো বেতন না দিয়েই হঠাৎ করে সব কর্মীকে বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে মে মাসের শেষ সপ্তাহে শুধু জানুয়ারির বেতন দেয় প্রতিষ্ঠানটি।

আর গত ২৯ জুন সব বৈমানিককে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের বিনা বেতনে ছুটিতে থাকতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিজেন্ট এয়ারওয়েজের একাধিক বৈমানিক জানান, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ফ্লাইট

পরিচালনা করেছি আমরা, অথচ বেতন পাইনি। এত দীর্ঘ সময় বেতন ছাড়া কীভাবে থাকা সম্ভব।

সন্তানদের স্কুলের বেতন, বাড়ি ভাড়া, দৈনন্দিন পারিবারিক খরচ মেটাতে হচ্ছে।

কেউ কেউ ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট, গাড়ি কিনেছিলেন। কিস্তি শোধ করতে পারছেন না।

আবার বিক্রিও করতে পারছেন না। প্রতিষ্ঠানটিতে ১১ জন বিদেশী বৈমানিকও রয়েছেন। তারাও মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান হাবিব বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ

সময় ফ্লাইট কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ কারণে এয়ারলাইনসের আয়ও বন্ধ রয়েছে।

যদিও অগ্রিম বিক্রি করা টিকিটের অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছে। একই সঙ্গে এয়ারলাইনসের অন্যান্য ব্যয়ও মেটাতে হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী সব এয়ারলাইনসই একই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

বৈমানিকদের বকেয়া বেতন-ভাতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।

দ্রুত এ বিষয়ে একটি সমাধানে আসা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

রিজেন্ট এয়ারওয়েজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইমরান আসিফ সে সময় জানান,  করোনাভাইরাসের কারণে আমরা আন্তর্জাতিক যেসব রুটে ফ্লাইট চালাতাম, তা একে একে বন্ধ হয়ে গেছে।

আর এসব রুট কবে চালু হবে তারও নিশ্চয়তা নেই। যাত্রীদের মধ্যেও এক ধরনের আতঙ্ক রয়েছে।

ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। এ কারণে পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিন মাসের জন্য ফ্লাইট পরিচালনা কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সূত্রঃ বণিক বার্তা

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.