লিবিয়ায় জড়ো হওয়ায় ১৫৬ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, এসব বাংলাদেশির মধ্যে অনেকেই দীর্ঘ দিন ধরে ডিপোর্টেশন সেন্টারে আটকা পড়ে আছেন। তারা দেশে ফিরে আসার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছেন। শেষ পর্যন্ত তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় আইওএম। ত্রিপলির বাংলাদেশ হাইকমিশনও তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
একটি ভাড়া করা বিমানে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে। কিন্তু বিমান সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকেই ফ্লাইট পরিচালনা করতে চাচ্ছে। নিজের দেশের মানুষ আটকা পড়ায় তাদের প্রতি কোনো মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অল্প খরচে ফ্লাইট চালাতে চাচ্ছে না। বিমান ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, ডিপোর্টেশন সেন্টারে অবস্থানকারী নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে জনপ্রতি ৮৭০ ডলার ব্যয় হবে যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৩ হাজার ৯৫০ টাকা।
১৫৬ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বিমানকে মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭২০ ডলার দিতে হবে যা বাংলাদেশি টাকায় ১ কোটি ১৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। বিমান বলছে, তারা একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এ ব্যয় বহন করার আর্থিক সক্ষমতা বিমানের নেই। তবে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনায় বিমান সবর্দা প্রস্তুত।
বিমানের একজন কর্মকর্তা জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহান নগরে অবরুদ্ধ ৩১২ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে এনেছে বিমান। বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে চেপে তারা ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে আটজনের শরীরে জ¦র থাকায় তাদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। বাকিদের আশকোনা হজক্যাম্পে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া বিমান ভারতে আটকে পড়া যাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। ভারত ছাড়াও বিমান বিভিন্ন দেশে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। বিমানের মতো বাংলাদেশের বেসরকারি এয়ারলাইনস ইউএস বাংলা ও নভোএয়ারও করোনাভাইরাসের কারণে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের বিভিন্ন দেশ থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লিবিয়া থেকে যারা ফেরত আসবেন, তাদেরও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। ১৫৬ জনের মধ্যে যাদের কভিড ১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকবে, তারাই বিমানে উঠতে পারবেন।