চলতি মৌসুমে হজ ট্রলি ব্যাগ সংগ্রহের দরপত্রে স্বচ্ছতা আনতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় সংশোধিত আকারে ফের দরপত্র আহ্বানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ এপ্রিল অপেক্ষাকৃত কম প্রচারিত দু’টি প্রত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।
হজ নীতিমালা অনুযায়ী হজ ট্রলি ব্যাগ সরবরাহের দায়িত্ব থাকায় মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে গোপনে এই বিজ্ঞপ্তি দেয় হাব।
মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র মতে, ওই বিজ্ঞপ্তিতে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে, তাতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার সুযোগ নেই। অন্যদিকে, ব্যাগের মান নিম্নমানের হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ফলে স্বচ্ছতা আনতে এবং হাবের নির্ধারিত শর্ত সংশোধন করে ফের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৮ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো. শহীদুল্লাহ তালুকদার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় হজ ও ওমরা নীতিমালা অনুযায়ী বেসরকারি পর্যায়ে হজ ট্রলি ব্যাগ সংগ্রহ ও সরবাহের দায়িত্ব হাবের হলেও ট্রলি ব্যাগের গুণগত মান, মূল্য এবং যথাযথ সময়ে সরবরাহ নিশ্চিত করতে দরপত্রে পূর্ণ প্রতিযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিত চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রকাশিত দরপত্রে ব্যাগের কাপড়ের রং শুধু ‘পার্পেল বা ভায়োলেট’ হতে হবে। দরদাতাকে একইসঙ্গে আমদানিকারক ও প্রস্তুতকারক হতে হবে। দরপত্র দাখিলের স্থান হাব অফিস নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এই দরপত্র বিজ্ঞপ্তিতে শিডিউল প্রস্তুত এবং সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তবে দরপত্র দাখিলের শিডিউল প্রস্তুত, সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা এবং একাধিক জায়গায় দরপত্র দাখিলের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে, হাব মহাসচিব শেখ মো. আব্দুল্লাহ জানান, দেশি ও আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে। আগের মতো অভিযোগ থাকবে না। পরিস্থিতি ভিন্ন রকম হবে। তবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আব্দুল জলিল বলেছিলেন, ‘দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে না জানিয়েই।’
এমন পরিস্থিতিতে গত ২৮ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয় স্বচ্ছতা আনতে এবং প্রতিযোগগিতা নিশ্চিত করতে হাবকে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশানা দেওয়া হয়।
অভিযোগ
ধর্ম মন্ত্রণালয় অভিযোগ তুলেছে, গত তিন বছর ধরেই হাবের ব্যবস্থাপনায় হজ ট্রলি ব্যাগ সরবরাহ করা নিয়ে লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে হজ ট্রলি ব্যাগ সরবরাহ নিয়ে দুর্নীতি শুরু হয়। ২০১৪ সালে হাবের নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ উঠে। ওই বছর সরবরাহ করা ট্রলি ব্যাগের হাতল খুলে গেলে সৌদি আরবে অসংখ্য হাজি ভোগান্তিতে পড়েন।
এক পর্যায়ে নিম্নমানের ট্রলি ব্যাগ সরবরাহের জন্য জেদ্দা বিমানবন্দরে বিক্ষোভ প্রকাশ করেন হাজিরা। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়। কমিটি ব্যাগ সরবরাহে অনিয়ম খুঁজে পায়। এতে সরকারের নীতি-নির্ধারকরা ক্ষুব্ধ হন। পরবর্তীতে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে হাজিদের ব্যাগ সরবরাহের জন্য ধর্মমন্ত্রী ও সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়।