সাজেকের একটি খাবার হোটেলের মালিকের সঙ্গে আলাপটা বেশ জমে উঠেছিল। চা পান করতে করতে গল্প হচ্ছিল তার সঙ্গে। জানতে চেয়েছিলাম বাঁশ দিয়ে নানা খাবারের উৎপত্তির কথা। বললেন, পাহাড়ের মানুষ যখন শিকারে যেতেন, তখন বেশ ক’দিন জঙ্গলে থাকতে হতো।
শিকারে যাওয়ার সময় বেশি কিছু সঙ্গে নেয়ার সুযোগ নেই। তাই বাঁশ কেটে সঙ্গে থাকা চাল, ডাল তাতেই ফুটিয়ে খেতে হতো। সেখান থেকেই বাঁশ মুরগি ও বাঁশ বিরিয়ানির প্রচলন।
গত অক্টোবরে বন্ধুরা মিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম সাজেকে।
রাতের বাসে ঢাকা থেকে রওনা। ভোরে পৌঁছাই খাগড়াছড়িতে। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সাজেক। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের এই যাত্রা পথ পুরোটাই উপভোগ্য। পাহাড়ের উঁচু-নিচু পথের অনুভূতিটা ছিল রোলার কোস্টারের মতো।
পাহাড়ের ঢালে অধিকাংশ কটেজ কিংবা রিসোর্ট কাঠ এবং বাঁশের। আধুনিক ভবনও ছিল। কটেজে ব্যাগ রেখে বারান্দায় দাঁড়াতেই সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেল। সামনের আদিগন্ত পাহাড় আর সবুজের মিতালিতেই যেন সম্মোহিত হয়ে গেলাম।
বিকালে গেলাম কংলাক পাড়ায়। সাজেকের সবচেয়ে উঁচু স্থান এটি। এখান থেকে সূর্যাস্ত অনেক মনোমুগ্ধকর।
সন্ধ্যায় ফিরি কটেজে। পাহাড়ি ও বাঙালি উভয় ধরনের খাবার পাওয়া যায়। সন্ধ্যার পর সাজেকের বাতাসে ভেসে বেড়ায় বারবিকিউয়ের সুঘ্রাণ। রাতে উপভোগ করলাম বাঁশ বিরিয়ানি।
ভোরে যাই হলিপ্যাডে। উদ্দেশ্য সূর্যোদয় উপভোগ করা। হিম হিম ঠাণ্ডায় দেখা মিললো সূর্যের। রক্তিম আভায় চারদিক ভাসিয়ে পূর্ণ উদিত হলো সূর্য। হালকা মেঘের ছটা যেন অবিশ্বাস্য। হাতের নাগালে উঁকি দিচ্ছিল মলিন মেঘ। এ যেন এক স্বপ্নের ভ্রমণ।