এভিয়েশন নিউজ: বাংলাদেশ বিমানের মাসকট (ওমানের রাজধানী) স্টেশনের শত কোটি টাকার জিএসএ (গ্রাউন্ড সাপোর্ট এজেন্সি) ব্যবসা নিতে না পেরেই বিমান চেয়ারম্যানের পেছনে লেগেছেন মহাজোট সরকারের এমপি মঈনুদ্দীন খান বাদল। সম্প্রতি সোনা চোরাচালানের অভিযোগে বিমানের এক পাইলটসহ ৩ কর্মকর্তার গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে তিনি বিমান চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামাল উদ্দিনের অপসারণ দাবি করে সংসদ উত্তপ্ত করেন।
ক্ষুব্দ বাদল পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। এরপর বলেন, বিগত সংসদে বিমান মন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি বিমানের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও নানা অনিয়ম নিয়ে একটি তদন্ত রিপোর্ট তৈরী করেছিল। সে রিপোর্টে বিমানের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অথর্ব, অক্ষম, ও চোর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। চেয়ারম্যান দেশের গৌরব বিমানকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। বিমান বালা নিয়োগ নিয়ে ১৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এত অভিযোগের পরও বিমান চেয়ারম্যানের ক্ষমতার উৎসের প্রতি ইঙ্গিত করে মঈনুদ্দীন খান বাদল প্রশ্ন করেন, কিছু লোক কি দেশের সুপারসিটিজেন হয়ে গেছে? শুধু বাদল নয়, সেদিন সংসদে জাতীয় পার্টির কতিপয় নেতাও জামাল উদ্দিনের অপসারণ দাবি করে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন।
সংসদে মঈনুদ্দীন খান বাদলের ওইদিনের রহস্যময় ক্ষোভের নেপথ্যে কেউ কিছু বুঝতে না পারলেও অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে শত শত কোটি কোটি টাকার জিএসএ ব্যবসা না পাওয়ার নিরব যন্ত্রনার তথ্য। অভিযোগ আছে ওই আমলে খোদ মঈনুদ্দীন খান বাদলের নেতৃত্বে বিমানে ছিল একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। মোটা অংকের টাকা কমিশন নিয়ে এরা সেদিন তাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা পাইয়ে দিতে বিমান চেয়ারম্যানের উপর নানভাবে চাপও প্রয়োগ করেছিলেন। তার সঙ্গে নেপথ্যে থেকে কাজ করেছিল সরকারি দলের আরও একজন মন্ত্রী, কয়েকজন এমপি, একজন রাষ্ট্রদূত এবং কয়েকজন বিদেশী ব্যবসায়ী। কিন্তু জানাগেছে একমাত্র বিমান চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের সততার কারণে এই সিন্ডিকেট সেদিন বিমানে অনৈতিক কোন কর্মকান্ড করতে পারেনি।
অভিযোগ রয়েছে সিন্ডিকেট সেসময় বিমানের আউট স্টেশনের জিএসএ ব্যবসাটি পেতে বিমানের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তাকে জিম্মি করে ফায়দা আদায়ের চেষ্টা করেছিল। কাজটি পাইয়ে দিতে ওই সিন্ডিকেট সেসময় বিমান চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিনসহ দুই বোর্ড সদস্যকে সাংসদ বাদলের বাসায় ডেকে নিয়ে ভয়াবহ চাপ পর্যন্ত সৃষ্টি করেছিল। শুধু তাই নয়, আর্মি গলফ ক্লাবে ডেকে নিয়ে টেন্ডার সিডিউল পর্যন্ত চেয়ারম্যানের হাতে ধরিয়ে দিয়েছিলেন। টেন্ডার সিডিউল নিতে চেয়ারম্যানকে বাধ্য পর্যন্ত করেছিলেন। তাদের চাপে পরপর তিন দফায় টেন্ডার পর্যন্ত আহবান করা হয়েছিল। কিন্তু এত কিছুর পরও তাদের কোম্পানী সর্বোচ্চ দরদাতা হতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীণ বিমানমন্ত্রী লে. কর্নেল ফারুক খানকে দেয়া বিমান চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিনের দেয়া এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে চেয়ারম্যান এই দুই এমপির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনে বিমান মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সদস্য ও হুইপ মুজিবুল হককেও একটি চিঠি দিয়েছিলেন। এই ঘটনায় বিমানজুড়ে তোলপাড়ও হয়েছিল। এ কারণে বিমান চেয়ারম্যানকে একাধিকবার সংসদীয় কমিটিতে তলব পর্যন্ত করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া বিমান চেয়ারম্যানের চিঠি থেকে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে সংসদীয় কমিটির তৎকালীন দুই সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন (বর্তমানে গৃহায়ন ও গণপুর্ত মন্ত্রী) ও মইনুদ্দিন খান বাদল বিমানের বৈদেশিক স্টেশনগুলোর অনিয়ম দুর্নীতি তদন্ত করতে ওমান (মাসকট) যান। সেখান থেকে ফিরে আসার পর মইনুদ্দিন খান বাদল বিমান চেয়ারম্যানকে টেলিফোন করে তার মহাখালীর ডিওএইচএস বাসায় চা খাওয়ার দাওয়াত দেন। জামাল উদ্দিন ওই বাসায় গিয়ে দেখতে পান সেখানে সংসদীয় কমিটির তৎকালীন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও আছেন।
চা খাওয়ার এক ফাঁকে তারা বিমান চেয়ারম্যানকে জানান, ওমানে কর্মরত বাংলাদেশ বিমানের বর্তমান জিএসএ’র বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ তারা পেয়েছেন। সেখানে কর্মরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতও ওই জিএসএ’র বিরুদ্ধে তাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। তাছাড়া একটি স্টেশনে এক নাগাড়ে ৩২ বছর ধরে কোন জিএসএ থাকার রেকর্ড নেই বিমানে। তারা ওই জিএসএকে পরিবর্তন করতে নতুন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রস্তাব করেন। ওই সময় চেয়ারম্যান এভাবে জিএসএ পরিবর্তনের কোন বিধান নেই বলে মইনুদ্দীন খান বাদলকে বলেণ। তবে যদি লিখিত কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তদন্ত করে আইনানুগ তাদের প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
এসময় মঈনুদ্দীন খান বাদল একটি লিখিত অভিযোগপত্র তুলে দেন চেয়ারম্যানের হাতে। অভিযোগপত্রে কুয়েতের একাধিক প্রবাসীর নাম ঠিকানা উলেখ করে তাদের সাক্ষী হিসাবে উপস্থাপন করা হয়। একইভাবে ওমানে কর্মরত বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরীও ওই জিএসএ’র বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র দেন। পরবর্তী সময়ে এই দুটি অভিযোগের ভিত্তিতে বিমানের একটি তদন্ত কমিটি ওমান গিয়ে তদন্ত করে। কিন্তু তদন্তে দুটি অভিযোগেরই কোন ভিত্তি পাওয়া যায়নি বলে তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট দেয়। তাছাড়া অভিযোগপত্রে যেসব সাক্ষীর নাম ও ঠিকানা দেয়া হয়েছিল সেগুলোরও কোন ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে কমিটি রিপোর্টে উলেখ করে।
বিষয়টি সংসদীয় কমিটির সদস্য মইনুদ্দিন খান বাদলকে জানালে তিনি ক্ষুব্দ কণ্ঠে তদন্ত রিপোর্ট ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে টেন্ডার আহŸান করার জন্য বিমান চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ অনুযায়ী নতুন করে জিএসএ নিয়োগ দেয়ার জন্য টেন্ডার আহŸান করা হয়। দরপত্রে নতুন করে জিএসএ হতে ইচ্ছুক বাদলের প্রতিষ্ঠান আল বাউয়ান ট্রাভেল এলএলসি এবং বর্তমানে কর্মরত জিএসএস ওমান ট্রাভেল ব্যুরো অংশ নেয়। কিন্তু টেন্ডারে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে পুরনো জিএসএস মনোনীত হয়। এতে বিমানের পক্ষ থেকে পুরনো জিএসএকে নিয়োগ দেয়া হয় এবং বিষয়টি মহাজোট সরকারের দুই এমপিকে জানিয়ে দেয়া হয়।
বিমান চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া তার চিঠিতে জানান, মুলত এই ঘটনায় মঈনুদ্দীন খান বাদল সন্তুষ্ট হতে পারেননি। এমনকি তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তারা তাকে বিভিন্নভাবে টেলিফোন করে হুমকী-ধমকী পর্যন্ত দিয়েছেন বলে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিতে জানান। এরপর মঈনুদ্দীনখান বাদল আগের দরপত্র বাতিল করে তৃতীয় দফায় টেন্ডার আহŸান করার জন্য বিমান চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। শর্ত হিসেবে আর্নেস্ট মানি বাড়িয়ে দেয়ার জন্য বলেন। একই সঙ্গে এমন কিছু শর্ত জুড়ে দিতে বলেন, যাতে পুরনো জিএসএ আবেদন করতে না পারে। এই অবস্থায় বিমান চেয়ারম্যান আবারও টেন্ডার আহŸান করার জন্য বিমানের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এয়ার কমোডর জাকিউল ইসলামকে নির্দেশ দেন।
ফলশ্র“তিতে আবারও টেন্ডার আহবান করা হয়। কিন্তু টেন্ডার আহবানের পর হঠাৎ একদিন মইনুদ্দিন খান বাদল ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বিমান চেয়ারম্যানকে আর্মি গলফ ক্লাবে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। জামাল উদ্দিন সেখানে গেলে চা খাওয়ার এক ফাঁকে তারা ব্যাগ থেকে প্রায় ১০০ পাতার একটি টেন্ডার সিডিউল বের করে বিমান চেয়ারম্যানের হাতে দেন এবং তাদের মনোনীত আল বাউয়ান ট্রাভেলকে জিএসএ হিসেবে কার্যাদেশ দেয়ার জন্য বলেন। বিমান চেয়ারম্যান টেন্ডার সিডিউল নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। জানান, নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার বক্সে দরপত্র জমা দিতে হবে। এভাবে কোন দরপত্র জমা দেয়ার নজির নেই। তারপরও তারা বিমান চেয়ারম্যানকে টেন্ডার সিডিউলটি ধরিয়ে দেন।
কিন্তু দেখা গেছে ওই টেন্ডারেও পুরনো জিএসএ ওমান ট্রাভেল ব্যুরো মনোনীত হয়। এতে তাদের মুল উদ্দেশ্য হাসিল হয়নি। এরপর থেকেই মুলত মঈনুদ্দীন খান বাদল বিমান চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিনের পেছনে লাগেন। আর যখনই সুযোগ পান তখনই এক হাত নেয়ার চেষ্টা করেন। বিমানের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি বিমান চেয়ারম্যান হিসাবে সেদিন এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিনকে নিয়োগ না দিতেন তাহলে এতদিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠানটির কোন অস্তিত্ব থাকতো না। লুটেপুটে তারা খেয়ে ফেলতো বিমানকে।
তবে সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে বিমান চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পদটিতে দায়িত্ব পালনের ছয় বছরের দীর্ঘ পথ চলায় তিনি বারবার হোঁচট খেয়েছেন কিন্তু হাল ছাড়েননি। স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের কর্মকর্তাদের আটক করার পর তাকে জড়িয়ে যেসব বক্তব্য সামনে এসেছে সেগুলোও উড়িয়ে দেন তিনি। বলেন, আমার বিরুদ্ধে কেউ কখনোই কোনো দুর্নীতি কিংবা দুর্নীতির সঙ্গে যোগসাজশের প্রমাণ হাজির করতে পারে নি, পারবেও না।
চোরাচালানের এই ঘটনায় বিমান চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে যেসব কথা বলা হচ্ছে সে-প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি জানি এ-অপমান আমাকে সইতে হবে। কিন্তু আমি এতে মোটেই বিচলিত নই। দীর্ঘ ছয় বছরের পথ চলায় অনেকবার হোঁচট খেতে হয়েছে। তবে আমি হাল ছাড়িনি। এবারও ছাড়বো না।
মিগ-টোয়েন্টি নাইন দুর্নীতি মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাকে আসামি করা হয়েছিলো, তখনও নানাভাবে অপদস্থ হতে হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো দুর্নীতিরই প্রমাণ মেলে নি। রাষ্ট্রের স্বার্থে সে-কাজ করেছি, ফলে ব্যক্তিগত সেই সমস্যাকে কখনোই বড় করে দেখিনি, বলেন জামাল উদ্দিন আহমেদ।
তিনি আরও বলেন, একজন বিমানবাহিনী প্রধান হিসেবে অবসরে যাওয়ার পর আমাকে স্রেফ একটি ঘড়ি ছিনতাইয়ের মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার পর্যন্ত করা হয়েছে, এর চেয়ে বড় অপমান আর কিই বা হতে পারে। সে-অপমান যখন সইতে পেরেছি, স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকার অপবাদও সইতে পারবো।
তিনি বলেন, পরে সত্যের জয় হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে এসব মামলার একটিও টেকেনি। এসব অভিযোগও টিকবে না। জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বিশ্বাস করে আস্থা রেখে একটি গুরু দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি সে-দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। আমি সে আস্থার প্রতি সম্মান রেখে যতক্ষণ সম্ভব কাজ করে যাবো।’
এক সময়ে বিমানবাহিনীর চৌকস কর্মকর্তা, যুদ্ধবিমান উড্ডয়নে পাকা বৈমানিক জামাল উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বাহিনীতে একজন মেধাবী সৈনিক ছিলাম। আমার জীবনে হার মেনে নেওয়ার কোনোও রেকর্ড নেই। আর সে দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।
ছয় বছরে বিমানে তার হাতে যেসব গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে সেসবেরও একটি চিত্র তুলে ধরেন জাতীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠানটির এই শীর্ষ ব্যক্তি। তিনি বলেন, নিজস্ব ফ্লাইট দিয়ে হজযাত্রী আনা-নেওয়া করে বিমান এ-বছর সুনাম কুড়িয়েছে। বিমানের এখন ৪টি নতুন বোয়িং ৭৭৭ রয়েছে। শিগগিরই আরও দুটি আসছে। একেকটি বোয়িং ৭৭৭ কেনা হয়েছে ১৭৫ মিলিয়ন ডলারে।এটি অত্যন্ত সাহসী সিদ্ধান্ত যা এই সময়ে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
এফ-২৮ উড়োজাহাজ দিয়ে বিমানের ফ্লাইট পরিচালনার শেষ দিকে ভয়াবহ দিনগুলোর কথা স্মরণ করে জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আমাদের যাত্রীদের কোনোভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণে বাধ্য করতে পারি না। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিমানের সংস্কারে যে উদ্যোগই নিতে গেছেন সেখানেই হোঁচট খেয়েছেন, বাধা এসেছে। এর মধ্যেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বিমান উপকৃত হয়েছে, সরকার উপকৃত হয়েছে, জানালেন জামাল উদ্দিন আহমেদ।
বিমানের সাধারণ কর্মী থেকে সর্বোচ্চ কর্মকর্তার মধ্যে কেবলই একটা ‘খাই-খাই’ ভাব লক্ষ্য করি। অথচ একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে তাদের কিছুটা উদার মনোভাব থাকা প্রয়োজন। যার অভাব এখানে রয়েছে। ‘খাই খাই’ বাদ দিয়ে তাদের মধ্যে ‘দেই দেই’ মনোভাব থাকলেই বিমানকে বাঁচানো সম্ভব হবে, বলেন জামাল উদ্দিন আহমেদ। নির্বিঘ্নে কাজ করার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে কিছু রাজনৈতিক চাপের কথাও উলেখ করেন। রাঘব বোয়ালদের চাপে সামান্য কেবিন ক্রুর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে বলে জানান তিনি।