ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য অভ্যন্তরীণ রুটে উড়োজাহাজের টিকিটও শেষ। কেবল আসন্ন রোজার ঈদের নয়, এখন থেকে কোরবানি ঈদের টিকিটও আগাম বিক্রি হচ্ছে। চাপ এতটাই বেশি যে, আকাশপথে দেশের সব বিমান পরিবহন সংস্থার ৯০ শতাংশ টিকিট এরই মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। ঈদের আগে ও পরে আকাশপথের টিকিট একেবারেই নেই। বাড়তি মূল্যের টিকিটও যাত্রীরা সাগ্রহে লুফে নিচ্ছেন। এ নিয়ে চলছে রীতিমতো কাড়াকাড়ি।
ব্যবসায়ী খন্দকার হুমায়ুন কবীর থাকেন রাজধানীর বারিধারায়। গ্রামের বাড়ি যশোরে। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে আগে যেতেন বাস অথবা ট্রেনে। কিন্তু এ দুই পথে টিকিট না পেয়ে বিমানেই যাত্রার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানেও টিকিট সংকট। অবশেষে দালাল ধরে নির্দিষ্ট দামের চেয়ে আড়াই হাজার টাকা বেশি দিয়ে বেসরকারি এয়ারলাইন্সের একটি টিকিট সংগ্রহ করেছেন। বাস এবং ট্রেনের মতো আকাশপথেও ঈদ উপলক্ষে টিকিটের জন্য বেজায় চাপ।
অভ্যন্তরীণ রুটে বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি ইউএস বাংলা, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, রিজেন্ট এয়ার ও নভো এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চলাচল করছে। সরকারি সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও কক্সবাজার, যশোর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও সৈয়দপুর রুটে ফ্লাইট চলাচল নিয়মিত রেখেছে। বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে টিকিটের দাম না বাড়ালেও বিমানের কিছু রুটে টিকিটের দাম বেড়েছে।
মূলত ঈদের ছুটিতে ভ্রমণ ও কেনাকাটা করতে এখন অনেক সচ্ছল পরিবার দেশের বাইরে যায়। আর এসব যাত্রীকে লক্ষ্য করেই এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলো নানা রকম প্যাকেজ সুবিধা ঘোষণা করেছে। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন গন্তব্যের জন্য রয়েছে এসব প্রস্তাব।
প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রচুর প্রবাসী দেশে এসেছেন। ঈদের পর তারা আবার কর্মস্থলে ফিরবেন। এ কারণে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোতে। তাদের অনেকেই রিটার্ন টিকিটের তারিখ পরিবর্তন বা বুকিং নিশ্চিত করতে
আসছেন। এ কারণে দুবাই, মাস্কাট, সৌদি আরবসহ কুয়ালালামপুর, কলকাতা ও দমদম রুটে স্বাভাবিকের চেয়ে এখন যাত্রীর চাপ বেশি।
বাংলাদেশ বিমানের সহকারী ম্যানেজার (জনসংযোগ) তাসমিন আক্তার বলেন, অতিরিক্ত চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ঈদের চার দিন আগে থেকেই নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটে আরও চার-পাঁচটি ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ম্যানেজার (রিজার্ভেশন) মুশফিকুর রহমান বলেন, ঈদে ইউএস বাংলা ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়েছে। যশোরে তিনটি, রাজশাহীতে তিনটি ও সৈয়দপুরগামী ফ্লাইট দুটি বাড়ানো হয়েছে। এর পরও যাত্রীদের চাপ কমছে না। এ পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ আরও ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে। তবে ইউএস বাংলা ঈদ উপলক্ষে কোনো মূল্য বাড়ায়নি বলেও তিনি দাবি করেন।
নভো এয়ারের সেলস ও মার্কেটিং বিভাগের ম্যানেজার একেএম মাহফুজুল আলম বলেন, ঈদের কারণে আকাশপথে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। অতিরিক্ত ফ্লাইট বাড়িয়েও আসন সংকুলান করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি জানান, ঈদে সব এয়ারলাইন্স টিকিটের মূল্য কিছুটা বাড়িয়ে থাকে।