হজের প্রথম ফ্লাইট ৪ আগস্ট সকালে

B-16-N-02-17-08-2015বাংলাদেশ থেকে চলতি বছর হজের প্রথম ফ্লাইট ছাড়বে ৪ আগস্ট সকালে। এর একদিন আগে অর্থাৎ ৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হজ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম-২০১৬ উদ্বোধন করবেন। এর আগে থেকেই রাজধানীর আশকোনায় অবস্থিত হজক্যাম্পে আসতে শুরু করবেন হজযাত্রীরা। ফলে সময় হাতে বেশি নেই। হজযাত্রীদের বরণে জোর প্রস্তুতি চলছে ক্যাম্পে। চলছে ধোয়া-মোছা ও পরিষ্কার-পরিছন্নতার কাজ। এ ছাড়া বাড়ানো হয়েছে হজক্যাম্পের নিরাপত্তা।

প্রতিবছরই পবিত্র হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে গমনের আগে বাংলাদেশি হজযাত্রীরা জড়ো হন হজক্যাম্পে। এখানে কয়েক দিন অবস্থান করে তারা ইমিগ্রেশন কার্যক্রম, বিমানের টিকিট ও বোর্ডিং কার্ড গ্রহণ এবং পাসপোর্টে সৌদি রিয়াল অ্যান্ডোসমেন্টসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকেন।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আব্দুল জলিল বলেন, আগামী ৩ আগস্ট সকাল ১০টায় হজ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম-২০১৬ উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী হজক্যাম্পে অবস্থানরত হজযাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। চলতি বছর হজযাত্রীদের নিরাপত্তায় হজক্যাম্পের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

জানা গেছে, এ বছর যেসব বাংলাদেশি হজযাত্রী প্রথম ফ্লাইটে সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন, তারা আগামী ১ আগস্ট হজক্যাম্পে রিপোর্ট করবেন। সেখান থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪১৯ হজযাত্রীকে নিয়ে হজের প্রথম ফ্লাইট ৪ আগস্ট সকাল ৮টা ৫ মিনিটে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-১০১১ নম্বর ফ্লাইটটি তাদের পরিবহন করবে। প্রথম ফ্লাইটের হজযাত্রীরা এরই মধ্যে ভিসাও পেয়ে গেছেন।

হজ অফিসের তথ্যানুযায়ী, রাজকীয় সৌদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি অনুসারে চলতি বছর ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ বাংলাদেশি হজপালনের সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী ১০ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ৯১ হাজার ৭৫৮ জন। তবে কোটা অনুযায়ী, সরকারি হজযাত্রী পাওয়া যায়নি। সরকারি কোটায় হজপালনের জন্য ৫ হাজার ২০০ জন নিবন্ধন করেছেন। সৌদি সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে সরকারি কোটার (৪ হাজার ৮০০) অপূর্ণ অংশ বেসরকারি কোটায় স্থানান্তর করার একটি প্রক্রিয়া চলমান আছে।

হজ অফিসের পরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, অন্যান্য বছর একজন হজযাত্রীর সঙ্গে কয়েকজন আত্মীয়স্বজন হজক্যাম্পে আসতেন। এ বছর হজযাত্রীদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজন না আসতে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। হজযাত্রীদের মালামাল ওঠানো-নামানোসহ অন্যান্য কাজে সহযোগিতা করতে হজক্যাম্পে আঞ্জুমানে খাদেমুল হজ, বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার ও রোভার স্কাউটস সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। হজযাত্রীদের বিদায় জানাতে তাদের আত্মীয়স্বজনের হজক্যাম্পের ভেতরে আসার কোনো প্রয়োজন নেই।

হজ অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশি হজযাত্রীরা সৌদি আরব গমনের আগে আশকোনার হজক্যাম্পে ২-৩ দিন অবস্থান করে থাকেন। হজক্যাম্পের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ক্যাম্পের প্রবেশদ্বারের পাশেই স্থাপন করা হচ্ছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কন্ট্রোলরুম। প্রবেশদ্বারে স্থাপিত দুটি গেটে থাকবে আর্চওয়ে। গেট দিয়ে প্রবেশের সময় সন্দেহভাজনদের মেটাল ডিক্টেটর দিয়ে তল্লাশি করা হবে। এ ছাড়া র‌্যাব, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা ইউনিটের সদস্যদের কড়া নজরদারি থাকবে হজক্যাম্পের ওপর। হজক্যাম্পে দর্শনার্থী বেশে চোর-পকেটমার যেন প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও থাকবেন সতর্কাবস্থায়।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, হজযাত্রীরা হজক্যাম্পের ডরমিটরিতে থাকবেন। সেখানে অনুমতি ব্যতীত কোনো দর্শনার্থীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ডরমিটরির গেটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, র‌্যাব ও প্রশিক্ষিত স্কাউট টিমের সদস্যরা থাকবেন। হজযাত্রীদের খাবার নিশ্চিত করতে ক্যাম্পের ভেতর বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট ও দোকান বসানো হয়েছে। হজক্যাম্পের ধোয়া-মোছার কাজও শেষ পর্যায়ে। হজক্যাম্পের ভেতর বসানো হচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অফিস, বিভিন্ন ব্যাংকের বুথ, মেডিক্যাল ক্যাম্প ও হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) অফিস। ক্যাম্পের সামনের রাস্তা ও ফুটপাতও মেরামত করা হয়েছে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.