করোনা মহামারীর দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে গোটা বিশ্ব। ভ্রমণপিপাসুদের অনেকেই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত সব গন্তব্যে। আসছে বড়দিন। ইউরোপ-আমেরিকাজুড়ে চলছে ছুটির আমেজ। সময়টিকে কাজে লাগিয়ে এসব অঞ্চলের অনেক ভ্রমণার্থী ছুটে আসছেন এশিয়ার বিভিন্ন ভ্রমণ গন্তব্যে।
সম্প্রতি শত বছরের পুরনো গাড়ির শোভাযাত্রা নিয়ে বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন বেলজিয়াম, পর্তুগাল, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্যসহ প্রায় নয় দেশের ৪৩ বিদেশী পর্যটকের একটি দল। এবারের ভ্রাম্যমাণ শোভাযাত্রায় বিশ্বের বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির শত বছরের পুরনো ও দুর্লভ ১৬টি গাড়ি এবং দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে দলের সহ-সমন্বয়ক এবং দ্য জার্নি ওয়ালেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের আন্তর্জাতিক শোভাযাত্রা প্রবেশ করেছে। কাল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়া বিদেশী নাগরিকরা বাংলাদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও আতিথেয়তায় ভীষণ খুশি হয়েছেন। তাছাড়া তারা বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রাও ভীষণ পছন্দ করেছেন।
গতকাল সকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা পরিদর্শন করে ছয়দিন পর দলটি ভারতে প্রবেশ করে। বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূইয়াসহ এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, ফারজানা ইসলাম ও আইসিপি ক্যাম্পের সুবেদার নজরুল ইসলামসহ অনেকেই।
গত ২০ অক্টোবর থেকে কার শোভাযাত্রায় অংশ নেয়া দলটি এ বছর বাংলাদেশসহ তিনটি দেশ ভ্রমণ করে। বিদেশী পর্যটকের এ দলটি প্রতি বছরই ‘ইস্ট হিমালয়ান ভিন্টেজ কার র্যালি’ নামে শত বছরের পুরনো গাড়ি নিয়ে ভ্রাম্যমাণ শোভাযাত্রার আয়োজন করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৬ নভেম্বর সকালে ভারতের ডাউকি সীমান্ত হয়ে সিলেটের তামাবিল ইমিগ্রেশন কাস্টমস সম্পন্ন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে তারা। এরপর বিভিন্ন স্থান দর্শন শেষে ৮ নভেম্বর বিকালে ঢাকার গাজীপুরের সারাহ রিসোর্টে আসে। এখানে এক রাত অবস্থান করে ৯ নভেম্বর সকালে পাবনার উদ্দেশে রওনা হয়। পাবনা ভ্রমণ শেষে বৃহস্পতিবার দলটি যশোরে এসে পৌঁছে। গতকাল বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে তারা কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়।
এদিকে শত বছরের পুরনো বিশ্বের নামিদামি মডেলের বিভিন্ন কোম্পানির কার দেখে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ে বেনাপোলের মানুষ। শোভাযাত্রাটি বেনাপোল পৌঁছলে গাড়িগুলো দেখার জন্য আশপাশে মানুষের ভিড় জমে ওঠে। বেনাপোলে পর্যটক দলটি যখন অবস্থান করে তখন তাদের যশোরের শিল্প, সংস্কৃতি, খাবারের সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেয়া হয়। এ সময় দলটির সদস্যরা জানান, এখানকার মানুষের আচার-আচরণ, প্রাকৃতিক রূপ আর আতিথেয়তায় তারা ভীষণ মুগ্ধ।