বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল এবং রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণ দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি।
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী এই ঘোষণা দেন।
হাসনাত বলেন, ‘এই শহীদ মিনার থেকে আমরা একদফা ঘোষণা দিয়েছিলাম, ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। এই একদফার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে গণতন্ত্রকামী সব রাজনৈতিক দল মাঠে নেমে এসেছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক অর্জন শেখ হাসিনার পতন আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছিলাম। কিন্তু ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ বিলোপের সমাধান হয়নি। যারা একদফার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে, গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে তারা কখনোই বাহাত্তরের সংবিধানের পক্ষে থাকতে পারে না।’
‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের কাছে আহ্বান থাকবে, বাহাত্তরের সংবিধানের প্রশ্নে এবং আমাদের গণঅভ্যুত্থান প্রশ্নে আপনাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে,’ বলেন তিনি।
নাসির বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিস্ট রেজিমের অংশগুলো বঙ্গভবনে এখনো দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ, জাতীয় পার্টির মতো রাজনৈতিকভাবে অপ্রাসঙ্গিক দলগুলো ছাড়া, প্রাসঙ্গিকভাবে যে দলগুলো রয়েছে এবং গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে আমরা জাতীয় ঐক্যের ডাক দিচ্ছি।
সাহাবুদ্দিন বলেছেন, রাজপথে স্লোগান দিয়ে উনি উঠে এসেছেন, উনি ভেসে আসেননি। গণঅভ্যুত্থানে হাজারো শহীদ ও লক্ষ মানুষের জীবনের ওপর শপথ করে আমরা বলছি, ফ্যাসিস্ট রেজিমের কোনো অংশ আমরা বাংলাদেশে দেখতে চাই না।’
এই ফয়সালা রাজনৈতিকভাবে করতে হবে মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক কমিটির এই নেতা বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল যদি ফ্যাসিস্ট রেজিমের অংশ চুপ্পুকে সরানোর আন্দোলনে না আসে, আমরা তাদের ত্যাগ করে জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তি, যারা ৫ আগস্ট ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করেছিল, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আবার সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বাহাত্তরের সংবিধান চান না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সব সংকটের মূলে হলো বাহাত্তরের সংবিধান।’
নাসির আরও বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দলের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মিটিং ছিল। আমরা দেখেছি, তারা ফ্যাসিস্ট রেজিমের অংশগুলো রাখার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপি বিবৃতিতে বলেছে, সাংবিধানিক এবং রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হবে।’
ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ যতদিন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচনের বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।