৩৮ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাবে ভোট দেবেন বোয়িং কর্মীরা

বেতন ৪০ শতাংশ বাড়ানোর দাবিতে সাত সপ্তাহ ধরে ধর্মঘট ও মালিক পক্ষের সঙ্গে দরকষাকষি করছেন বোয়িংয়ে কর্মীরা।

বেতন ৪০ শতাংশ বাড়ানোর দাবিতে সাত সপ্তাহ ধরে ধর্মঘট ও মালিক পক্ষের সঙ্গে দরকষাকষি করছেন বোয়িংয়ে কর্মীরা। উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানিটি সর্বশেষ ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এ নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আগামী সোমবার ভোট দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বোয়িং কর্মীরা। খবর বিবিসি।

ধর্মঘটে বোয়িংয়ের ৩০ হাজারের বেশি কর্মী অংশ নিচ্ছেন। তাদের প্রতিনিধিত্বকারী ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব মেশিনিস্টস অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ওয়ার্কার্স (আইএএম) এ প্রস্তাবনায় সমর্থন দিয়ে বলেছে, সোমবার এ বিষয়ে ইউনিয়নের সদস্যদের মধ্যে একটি ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ধর্মঘট শুরু করেন বোয়িং কর্মীরা। এর পর থেকে বোয়িং উড়োজাহাজের উৎপাদন কমতে শুরু করে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে উড়োজাহাজ খাতেও। ইউনিয়ন শুরু থেকে ৪০ শতাংশ বেতন বাড়ানো দাবি জানিয়ে আসছে। তবে কর্মীরা বোয়িংয়ের ৩৫ শতাংশ বেতন বাড়ানোসহ সর্বশেষ দুটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।

সর্বশেষ প্রস্তাবে বেতন বাড়ানোর পাশাপাশি ১২ হাজার ডলার বোনাসের কথাও বলা হয়েছে, যা আগে ছিল ৭ হাজার ডলার।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইএএম জানিয়েছে, ‘আমাদের সদস্যদের প্রস্তাবটি গ্রহণ এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে একে বিজয় ঘোষণা করার সময় এসেছে। আমরা যে সফলতা পেয়েছি তাতে সদস্যদের আরো বেশি সময় ধরে ধর্মঘটে থাকতে বলা উচিত হবে না।’

বোয়িং জানিয়েছে, নতুন প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে আগামী চার বছরে কর্মীদের গড় বার্ষিক বেতন বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৩০৯ ডলারে দাঁড়াবে। কর্মীদের অফার সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানতে ও সোমবার ভোট দিতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। নতুন প্রস্তাবে কর্মীদের অবসর পরিকল্পনায় পরিবর্তনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

প্রস্তাবিত চুক্তি ঘোষণার পর নিউইয়র্কে বর্ধিত লেনদেনে বোয়িংয়ের শেয়ারের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। বোয়িং ধর্মঘটের অবসান ঘটাতে এবং এর আর্থিক অবস্থার উন্নতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

গত সপ্তাহে বোয়িংয়ের বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ বিভাগ সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া তৃতীয় প্রান্তিকে ৪০০ কোটি ডলার পরিচালন লোকসানের কথা জানায়। চলতি সপ্তাহের শুরুতে ২ হাজার কোটি ডলারের বেশি সংগ্রহের জন্য শেয়ার বিক্রিও শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ ধর্মঘটের ফলে বোয়িংয়ের ক্রেডিট রেটিংয়ে অবনমন হতে পারে। এতে কোম্পানিটির জন্য ঋণ নেয়া আরো ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে।

বোয়িংয়ের প্রায় ১৭ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা রয়েছে এবং নভেম্বরের মাঝামাঝি প্রথম ছাঁটাইয়ের নোটিস দেয়ার সম্ভাবনা হয়েছে।

বোয়িংয়ের সাম্প্রতিক সংকটের সূত্রপাত হয় গত জানুয়ারিতে। তখন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা এয়ারলাইনসের বহরে থাকা এ সিরিজের একটি ফ্লাইটে নিরাপত্তা ত্রুটি দেখা যায়। মাঝ আকাশে খুলে পড়ে একটি প্যানেল। এতে ফ্লাইটের একপাশে ফাঁকা গর্ত দেখা যায়। পরে ১৭১ যাত্রী ও ছয়জন ক্রু নিয়ে উড়োজাহাজটি জরুরি অবতরণ করে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। এর পরই বোয়িংয়ের নিরাপত্তার বিষয়টি চর্চায় উঠে আসে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.