পাকিস্তানি নম্বর থেকে বিমানের ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি আসে

ডিএমপির ফেসবুক পোস্ট

পাকিস্তানি একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

বুধবার ডিএমপির অফিশিয়াল ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ জানায়, বুধবার ভোর ৪টা ৩৭ মিনিটে এয়ারপোর্ট এপিবিএনের ডিউটি অফিসারের হোয়াটসঅ্যাপে একটি পাকিস্তানি নম্বর থেকে ‘বোম্ব থ্রেট’র বার্তা আসে। ওই বার্তায় দাবি করা হয়, রোম থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৫৩৬ ফ্লাইটে উচ্চমাত্রার ৩৪ কেজি বিস্ফোরক রয়েছে। এই খবর পাওয়া মাত্রই সিটিটিসির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এবং ক্যানাইন ইউনিট যৌথ বাহিনীর সঙ্গে তল্লাশি অভিযানে যোগ দেয়।

এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকির পর তল্লাশিতে বিস্ফোরকজাতীয় কিছু মেলেনি। ফ্লাইটটি (বিজি-৩৫৬) ইতালির রোম থেকে বুধবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ঢাকায় আসে। পথে এই ফ্লাইটটিতে বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়। ব্যাপক তল্লাশির পর দুপুর দেড়টার দিকে ২৫০ জন যাত্রী এবং ১৩ জন ক্রু নিরাপদে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার রাতে ইতালির রোম থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি উড্ডয়ন করে ঢাকায় অবতরণের আগমুহূর্তে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়- ফ্লাইটটিতে বোমা হামলার হুমকি রয়েছে। নিরাপত্তা বিধি অনুযায়ী, উড়োজাহাজটি অবতরণের পরপরই বিমানবন্দরে নিয়োজিত নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে ফ্লাইটটিকে নিরাপত্তাবেষ্টনীতে নেওয়া হয়। এ সময় যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে তাদের ব্যাগ এবং এয়ারক্রাফট তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিতে কিছু না পাওয়ায় দুপুর দেড়টার মধ্যে সব যাত্রী নিরাপদে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, বিমানের রোম ফ্লাইটে বোমা আছে বলে অচেনা নম্বর থেকে আমরা একটা হুমকি পাই। এরপর আমরা যথাযথ প্রটোকল অনুসরণ করে ব্যবস্থা নিই।

বোমা হামলার হুমকি নিয়ে এদিন বিকালে সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, বিমানবন্দরের এপিবিএন কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসারের সরকারি নম্বরে উড়োজাহাজে বোমা থাকার বার্তাটি আসে। পরবর্তীতে সেই নম্বরে তথ্যদাতার সঙ্গে কিছু চ্যাট হয়। তবে তিনি (বার্তাদাতা) ভয়েস কল রিসিভ করেননি।

ওই ব্যক্তি কি হুমকিদাতা না তথ্যদাতা- এ প্রশ্নের উত্তরে বেবিচক চেযারম্যান বলেন, তিনি তো হুমকি দেননি, তথ্য দিয়েছেন। তবে যে কেউ বাংলাদেশে বসেও পাকিস্তানি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ব্যবহার করতে পারেন। ওই তথ্যদাতা একটি লাগেজের ছবিও পাঠিয়েছেন, যে ধরনের লাগেজে বোমাটি থাকতে পারে বলে তার ভাষ্য। পরে আমরা খবর পেয়ে আমাদের প্রটোকল অনুযায়ী ব্যবস্থা নিই। সকালে অনেকগুলো ফ্লাইট ল্যান্ড করার কথা ছিল। আমরা অন্য সবগুলো ফ্লাইট আগে নামিয়ে দিই। পরে এই এয়ারক্রাফটিকে ল্যান্ডিংয়ের পর একটু দূরে থার্ড টার্মিনালের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়; যার কারণে এয়ারপোর্টের স্বাভাবিক কার্যক্রমে কোনো ছন্দপতন হয়নি।

তিনি বলেন, উড়োজাহাজ থেকে আগে যাত্রীদের নামিয়ে এনে স্ক্রিনিং করে গাড়িতে উঠিয়ে এয়ারপোর্ট টার্মিনালে নিয়ে আসা হয়। এরপর তাদের প্রত্যেকটা লাগেজ একটা একটা করে এক্স-রে করে তল্লাশি করা হয়। দুটি সন্দেহভাজন লাগেজকে আলাদা করা হয়, সেগুলো খুলে পরীক্ষা করেও কিছু পাওয়া যায়নি। এরপর এয়ারক্রাফটের কার্গো থেকে প্যালেটগুলো নামিয়ে একটা একটা করে তল্লাশি চালানো হয়।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.