কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে পাশের আসনে মৃত যাত্রী

মরদেহ যাত্রীদের পাশের আসনে রেখে দেওয়ার ঘটনায় বিস্ময় ও ক্ষোভ

পরিস্থিতি সামাল দিতে কেবিন ক্রুরা তাকে পাশের আসনে সরতে বলেন, আর ঠিক সেই আসনেই পরে মরদেহটি বসানো হয়। যদিও ফ্লাইটে খালি আসন ছিল, তবুও তাকে অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।

কাতার এয়ারওয়েজর একটি ফ্লাইটে এক নারীর মৃত্যু এবং তার মরদেহ যাত্রীদের পাশের আসনে রেখে দেওয়ার ঘটনায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এক অস্ট্রেলিয়ান দম্পতি। খবর বিবিসির।

মিচেল রিং ও জেনিফার কলিন নামে ওই দম্পতি জানান, মেলবোর্ন থেকে দোহাগামী ফ্লাইটে তাদের পাশেই এক নারী অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। তবে মরদেহ সরিয়ে ফেলার পরিবর্তে সেটি তাদের সিটের পাশেই বসিয়ে রাখা হয়, যা তাদের জন্য ‘মানসিকভাবে ভয়াবহ’ অভিজ্ঞতা ছিল।

অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেল নাইন-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রিং বলেন, ওই নারীর অসুস্থ হওয়ার পর কেবিন ক্রুরা দ্রুত ব্যবস্থা নেন, কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তারা মরদেহটি বিজনেস ক্লাসে সরানোর চেষ্টা করলেও শারীরিক গঠনের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

তিনি জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে কেবিন ক্রুরা তাকে পাশের আসনে সরতে বলেন, আর ঠিক সেই আসনেই পরে মরদেহটি বসানো হয়। যদিও ফ্লাইটে খালি আসন ছিল, তবুও তাকে অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।

জেনিফার কলিন বলেন, এমন পরিস্থিতিতে যাত্রীদের দেখভালের জন্য বিমান সংস্থার সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা উচিত।

তিনি বলেন, ‘আমরা এয়ারলাইন্সকে ওই নারীর মৃত্যুর জন্য দায়ী করছি না, কিন্তু যাত্রীদের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকা জরুরি। আমাদের অন্তত জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল—আমরা কি মানসিকভাবে ঠিক আছি? আমাদের কি কাউন্সেলিং বা সহায়তা দরকার?’

এ ঘটনায় কাতার এয়ারওয়েজ দুঃখপ্রকাশ করে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘প্রথমেই আমরা শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। যাত্রীদের জন্য এই ঘটনা যে মানসিকভাবে কষ্টকর ছিল, তা অনুধাবন করছি এবং সংস্থার নীতিমালার ভিত্তিতে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের প্রক্রিয়া চলছে।’

তবে দম্পতি জানান, এখন পর্যন্ত কাতার এয়ারওয়েজ বা তাদের টিকিট সরবরাহকারী কান্তাস এয়ারওয়েজের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগ করেনি।

চার ঘণ্টার যাত্রা শেষে দোহায় ফ্লাইট অবতরণ করলে যাত্রীদের আসনেই অপেক্ষা করতে বলা হয়। পরে চিকিৎসক ও পুলিশ এসে মরদেহ শনাক্ত করে এবং সরিয়ে নেয়।

রিং বলেন, ‘যখন চিকিৎসাকর্মীরা এসে কম্বল সরিয়ে দিলেন, তখন আমি ওই নারীর মুখ দেখতে পাই। এতক্ষণ যাঁর পাশেই বসে ছিলাম, তাঁকে এভাবে দেখতে পাওয়া সত্যিই শকিং।’

এদিকে, কান্তাস এয়ারওয়েজ জানিয়েছে, বিমানে এমন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার দায়িত্ব পরিচালনাকারী সংস্থার, যা এই ক্ষেত্রে কাতার এয়ারওয়েজের ওপর বর্তায়।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.