পরপর চারটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল নেপাল। আজকের ভূমিকম্পে নেপালে এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
রাজধানী কাঠমান্ডুতে বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কাঠমান্ডুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির যাবতীয় কার্যক্রম। ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে।
কাঠমান্ডুতে অবতরণের বদলে নির্ধারিত বিমানগুলো এখন ভারতের লখনৌ বিমানবন্দরে নামবে বলে জানিয়েছে ।
নিহত সবাই চৌতারা শহরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
নেপালের দোলাখা এবং সিন্ধুপাল চক এলাকায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছে নেপালের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। বিশেষ করে সিন্ধুপাল চকে তিনটি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
২৫ এপ্রিলের প্রলয়ংকারী ভূমিকম্পে নেপালে নিহতের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়েছে, আহতের সংখ্যা ১৭ হাজারেরও বেশি। ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পটির পর গত ১৭ দিকে ধারাবাহিক দেড় শতাদিক ‘আফটারশক’ বা মৃদু ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে দেশটিতে। তবে সেগুলো আজকের ভূমিকম্পের মতো শক্তিশালী ছিল না।
মঙ্গলবার নেপালের স্থানীয় সময় ১২ টা ৩৫ মিনিটে প্রথম ভূমিকম্পের ঘটনাটি ঘটে। ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্পটি স্থায়ী ছিল এক মিনিটেরও বেশি সময়। সেটি থেমে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই ফের ১টা বেজে চার মিনিটে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে নেপাল। জানিয়েছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা- ইউএসজিএস।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এরপর দুই মিনিটের মধ্যেই- দুপুর ১টা ছয় মিনিটে এবং তারপর ১টা ৪৪ মিনিটে আরো দুই দফা প্রকম্পিত হয় নেপালের মাটি। এই দুই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৬.২ ও ৫.৪।
আজকের ভূমিকম্পের বিস্তার ছিল ভারত ও বাংলাদেশ পর্যন্তও।
প্রথম ভূমিকম্পটি রাজধানী কাঠমান্ডু ও এভারেস্ট পর্বতশৃঙ্গের মাঝামাঝি চীন সীমান্তের কাছে মাটির ১৫ কিলোমিটার গভীরে এবং দ্বিতীয়টি কাঠমান্ডুর কোদারির কাছাকাছি এলাকায় মাটির ১৫ কিলোমিটার নিচে সৃষ্টি হয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন- খুব শিগগিরই এই ভূমিকম্প ‘আফটারশক’ বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ২৫ এপ্রিলের ভূমিকম্পের ঘটনায় ভারত, বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছিল।
এদিকে, আজকের ভূমিকম্পগুলোর উৎসস্থল ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি, মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে ছিল বলে এর তীব্রতা ও স্থায়ীত্ব ছিল বেশি- যা ভয়ের কারণ বলে জানাচ্ছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স আরো জানিয়েছে- আজকের প্রথম ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল এভারেস্টের বেজ ক্যাম্পের কাছাকাছি এলাকায়।
২৫ এপ্রিলের ভূমিকম্পে এই এলাকায় সৃষ্ট বরফ ধসে ১৮ জন পর্বতারোহীর মৃত্যু ও ধারাবাহিক আফটারশকে এভারেস্টে পর্বতারোহণের চলতি মৌসুম শেষ বলে ঘোষণা করেছিল নেপাল সরকার।