ব্যায়াম পরবর্তী পরিচ্ছন্নতা দরকার

ব্যায়াম পরবর্তী পরিচ্ছন্নতা দরকার।

ব্যায়াম করলে ঘাম হবেই। তবে ঘামে ভেজা মানুষ ও তাদের জামা কাপড়ে ভরা ব্যায়ামাগারে জীবাণু সংক্রমণেরও আদর্শ স্থান। তাই ব্যায়ামের পর ব্যায়ামাগার থেকে বেরিয়ে ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছনতা রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। অন্যথায় মারাত্বক রোগ দেখা দিতে পারে।

শরীরচর্চা-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানানো হল ব্যায়াম পরবর্তী পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে করণীয় বিষয়গুলো।

হাত ধোয়া: ব্যায়াম শেষ হওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব হাত পরিষ্কার করতে হবে। জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানগুলোর মতো ব্যায়ামাগারও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াতে ভরপুর। প্রতিদিন শতাধিক মানুষ ব্যায়ামাগারের বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করেন আর তাদের হাত থেকে ব্যাকটেরিয়া সেই সরঞ্জামে সংক্রমিত হয়, উল্টোটাও হয়। আর তাই নিজের পরিচ্ছন্নতা রক্ষার্থে এই সরঞ্জামগুলো ব্যবহারের পর নিজের হাত পরিষ্কার করতে হবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এই জীবাণু থেকে সুরক্ষা দিলেও সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। আর শরীরে কোথাও ক্ষত থাকলে সেখানে সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বেশি। হাত ধোয়ার আগে চোখ, নাকে হাত দেওয়াও বেশ ক্ষতিকর।

ব্যবহৃত সরঞ্জাম পরিষ্কার: ব্যবহারের পর ব্যায়ামের সরঞ্জাম মোছার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ব্যায়ামাগার কিংবা নিজ ঘরে, সবখানেই এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার অভ্যাসটি থাকা উচিত। তবে অনেকেই সেটা গুরুত্ব দেয় না। ঘাম লেগে থাকা ব্যায়ামের সরঞ্জাম জীবাণুর বংশ বিস্তারের জন্য চমৎকার জায়গা। তাই ব্যবহারের পর সেগুলো পরিষ্কার করে রাখতে হবে।

ম্যাট পরিষ্কার: ব্যায়ামাগারে ব্যক্তিগত ব্যায়ামের মাদুর বা ‘ইয়োগা ম্যাট’ ব্যবহার করলে ঘরে ফিরে তা গোল পাকিয়ে ফেলে রাখা চলবে না। কারণ ব্যায়ামের সময় পুরো মাদুরেই আপনার গায়ের ঘাম শোষিত হয়েছে। যা পরিষ্কার না করে রেখে দিলে সেখানে ব্যাকটেরিয়ার বংশবিস্তার হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই ঘরে ফিরে তা মুছে রাখতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর ধুতে হবে।

গোসল: ব্যায়ামের পর গোসল করার কথা আলাদাভাবে বলার প্রয়োজন নেই। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা তাড়নায় না হলেও প্রচণ্ড গরম থেকে মুক্তির জন্য প্রায় সবাই গোসল করেন। তবে গোসল ভালোভাবে করতে হবে, শুধু গা ঠাণ্ডা করার জন্য পানি ঢেলে সেরে ফেললেই চলবে না। চুল এবং শরীরের যেসব ভাঁজে ঘাম জমে থাকতে পারে সেসব স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করা চাই। ঘাম আটকে থাকলে ত্বকের উপরিভাগের থাকা লোপকূপ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে দেখা দেয় ব্রণ, র‌্যাশ ইত্যাদি ত্বকের জটিলতা। তাড়াহুড়ার কারণে গোসল করতে না পারলে অন্তত মুখ ধুয়ে নিতে হবে যাতে ব্রণ থেকে রক্ষা পান।

কাপড় পরিবর্তন: নিরুপায় না হলে ব্যায়ামাগারের ঘামে ভেজা কাপড় পড়ে থাকে না কেউই। তবে ব্যায়ামের পর ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক পরার চেষ্টা করতে হবে। অন্তর্বাসের ক্ষেত্রে আবার ব্যাপারটা ভিন্ন। পোশাক পরিবর্তন করলেও অন্তর্বাস পরিবর্তন না করার অভ্যাস আছে অনেকেরই, যা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, বিশেষত নারীদের ক্ষেত্রে। ঘামে ভেজা অন্তর্বাস লম্বা সময় পরে থাকলে যৌনাঙ্গে ও আশপাশের অঞ্চলের অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য নষ্ট হয়, ফলে দেখা দেয় জীবাণুর সংক্রমণ, র‌্যাশ ইত্যাদি।

অন্যান্য অনুসঙ্গ: পানির বোতল, তোয়ালে, হাত মোজা, কোমরের বেল্ট ইত্যাদি নানান অনুসঙ্গ প্রয়োজন হয় ব্যায়াম করতে গিয়ে। এই অনুসঙ্গগুলো প্রতিদিন ব্যবহারের পর পরিষ্কার করা আবশ্যক। প্রতিটি অনুসঙ্গ ধুয়ে কড়া রোদে শুকাতে হবে। অনুসঙ্গগুলো বহনের জন্য যে ব্যাগ ব্যবহার করছেন সেটাও নির্দিষ্ট সময় পর পর ধুতে হবে। ব্যায়ামের সকল জিনিসপত্র অন্যান্য পোশাক থেকে আলাদা রাখতে হবে যাতে ব্যাক্টেরিয়া ছড়াতে না পারে। তবে ঘরের কোণায় ফেলে রাখবেন না, খোলামেলা ও শুকনো স্থানে রাখতে হবে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.