তিনদিন বন্ধ থাকার পর আজ (১ এপ্রিল) আবারও হজের প্রাক-নিবন্ধন শুরু হচ্ছে। চলবে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত। তবে এ দফায় নিবন্ধনকারীরা আগামী বছর হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। প্রথম দফায় নিবন্ধনকারীদের কেউ বাদ পড়লে দ্বিতীয় দফায় নিবন্ধনকারীদের মধ্য থেকে সিরিয়াল অনুযায়ী পূরণ করা হবে। বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ে এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশেরের (হাব) সঙ্গে এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবদুল জলিল, অতিরিক্ত সচিব মো. শহিদুজ্জামামান, ধর্মমন্ত্রীর একান্ত সচিব ড. আবুল কালাম আজাদ, যুগ্মসচিব (হজ) মীর নজরুল ইসলাম, উপসচিব (হজ) মোহাম্মদ জাকের হোছাইন, হাব সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার, সহসভাপতি ফরিদ আহম্মেদ মজুমদার ও মহাসচিব শেখ আবদুল্লাহ প্রমুখ।
গত ২৩ মার্চ শুরু হওয়া হজের প্রাক-নিবন্ধন মাত্র ছয় কর্মদিবসেই বেসরকারি হজযাত্রীর কোটা পূরণ হলে ২৮ মার্চ সার্ভার বন্ধ করে দেয়া হয়। হাবের দাবি সার্ভার বন্ধ করায় হজে যেতে ইচ্ছুক প্রায় ৪০ হাজার ব্যক্তি নিবন্ধন করতে পারেননি। তাদেরও নিবন্ধন সুযোগ দিতে ২৯ মার্চ ৬ দফা দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে প্রধান দাবি ছিল ৩০ মে পর্যন্ত এ নিবন্ধন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা। এ নিয়েই মূলত ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হাবের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ধর্মমন্ত্রীর একান্ত সচিব ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আজ (১ এপ্রিল) থেকে ৩০ মে পর্যন্ত প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে। তবে দ্বিতীয় দফায় নিবন্ধনকারীরা চলতি বছর হজে যেতে পারবেন না। কোনো কারণে প্রথম দফায় নিবন্ধনকারী কেউ বাদ পড়লে বা হজ কোটা বৃদ্ধি পেলে দ্বিতীয় দফায় নিবন্ধনকারীদের মধ্য থেকে ক্রমানুসারে চলতি বছরই হজে যেতে পারবেন। দ্বিতীয় দফায় প্রতিটি এজেন্সি ২৯৩ জন ব্যক্তির নিবন্ধনের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্ভার বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ কোনো এজেন্সি এর বেশি লোকের নিবন্ধন করতে পারবেন না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাক-নিবন্ধনকারী ব্যক্তিরা নির্ধারিত অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় দফায় নিবন্ধনকারীদের মধ্য থেকে ওই কোটা পূরণ করা হবে। সরকারি হজ কোটা পূরণ না হলে ওই কোটা বেসরকারি এজেন্সিদের দেয়া হবে না বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯১ হাজার ৭৫৮ জন হজে যেতে পারবেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ২৮ মার্চ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে ৮৮ হাজার ২০৪ জন এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬১৮ জন প্রাক-নিবন্ধন করেছেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে ১ হাজার ৪১০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১১ হাজার ২৯৫ জন ডাটা এন্ট্রি করেছেন; যা কোটা থেকে ১০ হাজার ৯৪৭ জন বেশি। কোটা অনুযায়ী এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জনই হজের প্রাক-নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন। জাতীয় পরিচয়পত্র সার্ভার (এনআইডি) থেকে তথ্য যাচাইয়ের পরই প্রাক-নিবন্ধনের জন্য ডাটা এন্ট্রির সুযোগ পাচ্ছেন হজে যেতে ইচ্ছুকরা। এরপর ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে হজের প্রাক-নিবন্ধন করতে পারছেন তারা।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে হাবের সহ-সভাপতি ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, হাবের দাবি অনুযায়ী আজ (১ এপ্রিল) থেকে ৩০ মে পর্যন্ত নিবন্ধন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় যারা হজে যাবেন তাদের ৩০ হাজার টাকা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার জন্য ৩০ হাজার ৭৫২ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে প্রাক-নিবন্ধন করতে হচ্ছে। মন্ত্রিসভা গত ১১ জানুয়ারি যে হজ প্যাকেজ অনুমোদন করেছে, তাতে এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোরবানিসহ প্যাকেজে ৩ লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকা এবং কোরবানি ছাড়া প্যাকেজে ৩ লাখ ৪ হাজার ৯০৩ টাকা খরচ হবে। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মৌলিক খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৪১ টাকা। এর সঙ্গে খাওয়া-বাড়িভাড়া যোগ করে এজেন্টরা প্যাকেজ ঠিক করবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর (৯ জিলহজ) হজ হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও খবর