নজরুল ইন্সটিটিউট : অনুমোদনের বাইরে নেওয়া হচেছ অতিরিক্ত বেতন ভাতা

nazrulবিশেষ প্রতিনিধি: সরকারি অফিসে একজন হিসাব রক্ষকের বেতন ইন্সটিটিউটের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিমাসে ২৯,৫০০ টাকা। কিন্তু সেই নিয়ম বেতনভাতা নেওয়ার ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না। নেওয়া হচ্ছে এর চেয়ে অনেক বেশি। এই ঘটনা ঘটছে নজরুল ইন্সটিটিউটে। সেখানে হিসাব রক্ষক মো: মাহবুবুল ইসলাম ১৩ তম গ্রেডের ১১০০০/-২৬৫৯০-)(২০১৫) সালের পে স্কেল অনুযায়ী কর্মচারী হয়ে সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভুত হিসাবে ও বেআইনীভাবে ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা বেতন ভাতাদি নিচ্ছেন। ১৩ তম গ্রেডের কর্মচারী হিসাবে ৩টি টাইম স্কেলসহ তার বেদত-ভাতাদি হবে সর্ব সাকুল্যে ২৯,৫০০ টাকা । তিনি প্রতিমাসেই ২৮ হাজার টাকা বেশি বেতন ভাতাদি গ্রহণ করছেন। এই বিষয়টি এন ই এর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানলেও কোন ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। বার বার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে জানালেও হলেও এই ব্যাপারে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে ও অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের কারো কারো মধ্যে অসন্তোষ তৈরিী হয়েছে তা দূর করা সম্ভব হয়নি।

সেখানকার একটি সূত্র জানায়, চাকরিতে যোগদানের পরই অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব নোট শিটে এই হিসাব রক্ষকের চাকরি সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে ও বেআইনী বলে মত দিয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বর্তমানে তিনি ৭ম গ্রেড ২৯০০০/-৬৩৪১০/)- নিয়ম বহির্ভুত ও বেআইনীভাবে ৫৭৫০০ টাকা নিচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, তার এই বেআইনী কার্যক্রম বহাল রাখতে তিনি একটি দুর্নীতির সিন্ডিকেট তৈরী করেছেন। যাদেরকে প্রতিদিন টাকা পয়সা ও তার কক্ষে চা বিস্কুটের মাধ্যমে আপ্যায়ন করেন। তার অফিসে একজন বিশ্বস্ত নারী সহকর্মীও রয়েছে। তাকে নিয়ে অনেক রিউমারও শোনা যায়।

সেখানকার সূত্র জানায়, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি এই পর্যন্ত সরকারের ২০ লাখ টাকা নিয়ম বহির্ভুতভাবে নিয়েছেন। এতে সরকারের ক্ষতি হয়েছে। সরকাররের এই টাকা আতœসাৎ করে তার মা ও বাবার নামে মিরপুরে বাড়ি করেছেন। এছাড়াও তিনি ইন্সিটিউপের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের হিসাব অসমাপ্ত রেখে সকলকে জিম্মি করে রেখেছেন। তিনি প্রভাবশালী । তিনি ক্রয় কমিটিরও সদস্য। তার ইচ্ছা ও অনচ্ছিার উপর নির্ভর করে কোন কোন প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে। তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও ৩ জন কর্মচারী তার অধিনে হিসাব রক্ষক হিসাবে কাজ করছেন। এদের একজন কম্পিউটার অপারেটর, যিনি ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করেন এর বাইরে রয়েছেন অভ্যর্থনাকারী ও ক্যামেরাম্যান। ]

এই ব্যাপারে এনই এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তদের কাছে জানতে চাইলে তারা বিব্রতবোধ করেন। সূত্র জানায়, বর্তমান নির্বাহী পরিচালক অডিট ক্যাডারের কর্মকর্তা। তিনি এনই এর নিয়োগ তফসিল হিসাবে হিসাব রক্ষককে (১৩তম গ্রেডের ৫৫০০/-১২০৯৫/-)(২০০৯ সালের পে স্কেল অনুযায়ী) পত্র নং-নই/প্র:/নিয়োগ-২(৩)৮৭(খন্ড-৩)/৮১। কর্মচারী হিসাবে প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন। এই বিষয়ে তিনি অবশ্য কিছু বলতে চান না।

এই ব্যাপারে সেখানকার একজন কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় কবির নাম নামাঙ্কিত এনই কে কুরে কুরে খাচ্ছে হিসাব বিভাগের তৃতীয় শ্রেণীর একজন হিসাব রক্ষক ও তার দূর্নীতির সিন্ডিকেট। সরকারের কেউ এগুলো দেখছে না। আসলে এই প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতি মুক্ত করা প্রয়োজন।
২০১৫ সালের আগষ্ট মাসে এন ই এর নির্বাহী পরিচালক সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে একটি চিঠি প্রেরণ করেন। সেখানে তিনি রাজস্বখাতের বর্তমান হিসাব রক্ষক পদের বেতন স্কেল সম্পর্কিত তথ্য প্রদান বিষয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করেন। সেই রিপোর্টে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো হচ্ছে যে, নজরুল ইন্সটিউিটের রাজস্ব খাতের হিসাব রক্ষকের অনুমোদনের পদের সংখ্যা এক জন। এবং বেতন স্কেল জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ এর গ্রেড-১৩ অনুযায়ী (৫৫০০-১২০৯৫)। উল্লেখ্য সেখানকার অনুমোদিত অর্গানো গ্রামে অফিস তত্ত্বাবধায়কের কোন পদ নেই। এর আগে নজরুল ইন্সটিউটের সচিব ড. মহিউদ্দিন জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের সচিবকে জানান, নজরুল ইন্সটিটিউটের রাজস্ব খাতের হিসাব রক্ষকের অনুমোদিত স্কেল জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ এর গ্রেড-১৩ হিসাবে (৫৫০০-১২০৯৫)।

গত বছর ৪ আগষ্ট ইন্সটিটিউটের পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কের সচিবকে চিঠি লিখে পাঠান। সেখানে তিনি বলে পাঠান নজরুল ইন্সটিউটটের রাজস্ব খাতের হিসাব রক্ষকের অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১ এক। বেত স্কেল জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ এর গ্রেড ১৩ ৫৫০০-১২০৯৫। এই ইন্সিটিউটের অনুমোদতি অর্গানোগ্রামে অফিস তত্ত্বাবাধায়কের কোন পদ নেই।

আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, এনই তে বিভিন্ন পদে ও উহাদের স্কেল সরকার কর্তৃক অনুমোদনের আগেই অনুষ্ঠান সংগঠক ও হিসাব রক্ষক পদে ৬২৫/-১৩১৫/- স্কেলে লোক নিয়োগ করা হয়। এই কার্যক্রম বেআইনী ও নিয়ম বহির্ভুত। কারণ প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক পদ মঞ্জুরী এবং অর্থ মন্ত্রণালয় (বাস্তবায়ন) কর্তৃক পদের স্কেল নির্ধারনের পূর্বে কোন নিয়োগ বিধি সম্মত নয়। যখন কোন পদ মঞ্জুর নেই এবং পদের স্কেল নির্ধারণ নেই। তখন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা পালন করলেই নিয়োগ নিয়মিত হয় না বলে এই সব কথা একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরে ধরা হয়।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.