নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরির ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম কিম ওং সরাসরি অর্থ ফেরত দিতে চান না।ফিলিপাইনের এই ব্যবসায়ী স্থানীয় আইনানুসারে বাংলাদেশকে অর্থ ফেরত দিতে চান।
এ বিষয়ে ওংয়ের আইনজীবী অর্থ পাচারের ঘটনার তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনেটের ব্লু রিবন কমিটিকে চিঠি দিয়েছেন। সোমবার ফিলিপাইনের সংবাদমাধ্যম ইনকোয়েরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গোপন সুইফট কোড ব্যবহার করে ১০১ মিলিয়ন মার্কির ডলার তুলে নেয় হ্যাকাররা। এর মধ্যে ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের পাঁচটি অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। বাকী ২০ মিলিয়ন ডলার শ্রীলংকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নামে পাঠানো হলেও বানান ভুলের কারণে শ্রীলংকার ব্যাংক থেকে তা ফেরত পাঠানো হয়। ফিলিপাইনের ইতিহাসে অর্থ পাচারের এ ঘটনায় গত মাসে সিনেটের ব্লু রিবন কমিটি তদন্ত শুরু করে। তদন্ত কমিটির কাছে অর্থ পাচারের ঘটনায় নিজের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি পরোক্ষভাবে স্বীকার করেন ব্যবসায়ী কিম ওং। একই সঙ্গে তিনি নিজের কাছে থাকা ৪ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ ব্যাংককে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ফিলিপাইনের অ্যান্টি মানিলন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি) প্রথমে সরাসরি এ অর্থ ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দিলেও গত সপ্তাহে সিনেটর গুইঙ্গোনা ও জুয়ান পোন্স এনরিলের নির্দেশনার কারণে আগের অবস্থান থেকে সরে আসে এএমএলসি। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা অর্থ ফেরতে নিজস্ব নিয়মে অনুসরণ করতে চায়।
সিনেটর ব্লু রিবন কমিটির চেয়ারম্যান তিওফিস্তো গুইঙ্গোন তৃতীয়কে লেখা চিঠিতে ওংয়ের আইনজীবী ইনোসেনসিও ফেরার জুনিয়র ও ক্রিস্টোফার জেমস পুরিসিমা এএমএলসি ওংয়ের অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংককে ফেরত দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা ‘ মৌলিক ভুল, দুর্বল প্রক্রিয়ার এবং সম্পূর্ণ আইনবিরোধী।’
ওং জানান, প্রকৃত মালিককে অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে তার কোনো আপত্তি নেই। তবে তার আইনজীবীদের পরামর্শ- যে কোনো ধরণের ফেরতই ফিলিপাইনের আইন অনুযায়ী হওয়া উচিৎ।
অ্যান্টি মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের ১২ ও ১৪ ধারার উল্লেখ করে ওংয়ের আইনজীবীরা বলেন, ‘ অর্থ কিংবা সম্পত্তি প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়ার পূর্বে এএমএলসিকে বিবাদীর সম্পদ বাজেয়াপ্তকরণের জন্য আদালতে মামলা করতে হবে।’
‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকে বিচারিক হস্তক্ষেপ ছাড়া অর্থ ফেরত দেওয়া সরাসরি আইনের এই ধারার লঙ্ঘন’ বলে দাবি করেন তারা।