বনপ্রহরীদের আটক করা কাঠ নিয়ে গেল বিজিবি

kat20160415113125চট্টগ্রামে বনপ্রহরীদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকার চোরাই কাঠ নিয়ে গেছে বিজিবি। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় নগরীর হালিশহর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, হালিশহর এলাকার আবু সুফিয়ানের স’মিল থেকে চোরাই সেগুন কাঠ বনবিভাগের স্পেশাল টহল টিম আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজিবি। তবে বিজিবি বলছে এগুলো তাদের সোর্স মানির কাঠ।

বিজিবির এমন অচরণে হতবাক টহলটিমে অংশগ্রহণকারী বন কর্মকর্তারা। চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের শহর রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা ও অভিযানকারী দলের প্রধান নুরুল আলম ফরেস্টার জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগীয় কর্মকর্তা জগলুল হোসেন এবং শহর রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদুল্লাহর নির্দেশে বনকর্মীদের একটি সশস্ত্র দল হালিশহর আবু সুফিয়ানের স’মিলে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানকালে ওই স’মিল থেকে ১০ লাখ টাকা মূল্যের প্রায় ৫’শ ঘনফুট সেগুন কাঠ জব্দ করা হয়। বন বিভাগের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা নুরুল আলম অভিযোগ করে বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে আটককৃত এসব কাঠ ঢাকা মেট্রা-ন-১১-০০৮৩ নম্বরের একটি ট্রাক যোগে বন বিভাগের হেফাজতে জব্দ করে নিয়ে আসছিলেন তারা।

টহলটিমে অংশ গ্রহণকারী ফরেস্ট গার্ড জাহাঙ্গীর জানান, চোরাই কাঠ নিয়ে আসার সময় হালিশহর বিজিবি দফতরের অপারেশন অফিসার আকরামের নেতৃত্বে বিজিবির একটি দল কাঠ বোঝাই ট্রাকটির গতিরোধ করে। বনকর্মীদের সাথে বিজিবি সদস্যদের বাদানুবাদের এক পর্যায়ে অবৈধ কাঠ বোঝাই ট্রাকটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

তবে বিজিবির অপারেশন অফিসার আকরামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ধরনের কোন ঘটনাই বৃহস্পতিবার রাতে ঘটেনি। বন বিভাগের লোকজন কেন এমন অভিযোগ করছে সেটি তার বোধগম্য নয়।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তারা মাঝে মধ্যে যে চোরাই কাঠ আটক করেন তার ১০ শতাংশ সোর্সকে দিয়ে দেন। এটা তাদের বিজিবি সদর দফতরের নির্দেশ বলেও জানান তিনি। হয়তো এগুলো সোর্সের কাঠ হতে পারে বলে ধারণা তার ।

বন বিভাগের চট্টগ্রাম শহর রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদুল্লাহ জানান, পুলিশ, বিজিবিসহ যে কোনো সংস্থা অবৈধ কাঠ আটক করলে আইন অনুযায়ী তা বন বিভাগের নিকট হস্তান্তর করার কথা। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে হালিশহর বিজিবি দপ্তরের বিজিবি সদস্যরা অভিযান চালিয়ে অবৈধ কাঠ আটক করে কিছু কাঠ বন বিভাগকে লোক দেখানো হস্তান্তর করলেও কাঠের বড় অংশ অবৈধভাবে বিক্রি করে দেয়।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে এ বিষয়ে জানার জন্য চট্টগ্রাম উত্তরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জগলুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ সম্পর্কে অবগত নন বলে জানান। অথচ অভিযানে অংশ গ্রহণকারী বনকর্মীরা বলছেন অভিযানে যাওয়ার আগে তাকে অফিসিয়ালি জানানো হয়েছে। বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষের এ ধরনের বক্তব্যে অবাক এবং হতাশ হয়েছেন টহল টিমের সদস্যরা।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.