এবার কুয়েতের সঙ্গে শ্রমিক রফতানি চুক্তি চায় বাংলাদেশ

bng-kuet20160418072544সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়ার মতো বাংলাদেশের বৃহৎ শ্রম বাজারগুলো বন্ধ হয়ে পড়ায় জনশক্তি রফতানি নিয়ে কিছুটা বিপাকে রয়েছে সরকার।

নুতন বাজার খোঁজার পাশাপাশি বন্ধ থাকা বৃহৎ বাজারগুলোও উন্মুক্ত করার জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার কুয়েতের সঙ্গে শ্রমিক রফতানি চুক্তি করতে চায় বাংলাদেশ।

এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের ধনী এ দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ আরও কিছু চুক্তি করতেও আগ্রহী সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

জানা যায়, মে মাসের শুরুতেই ঢাকা সফরে আসছেন কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী জাবের আল-মুবারক আল-হামাদ আল-সাবাহ। কুয়েত প্রধানমন্ত্রী এ সফরকে কেন্দ্র করে দেশটির সঙ্গে দক্ষ শ্রমিক রফতানি ও বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ একাধিক চুক্তির কথা ভাবছে সরকার।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, আগামী ৩ মে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা আসছেন কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী। এ সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করবেন। আর এ বৈঠকে কুয়েতের শ্রমবাজারে দক্ষ বাংলাদেশি শ্রমিক রফতানিকে গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ।

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ, কুয়েতের অর্থায়নে তেল শোধনাগার স্থাপনসহ অন্যান্য বিষয়েও আগ্রহ দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো কাজ করছে। বিষয়গুলো চূড়ান্ত করতে শিগগিরই আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, কুয়েতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দেশটির সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির ২২টি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। প্রত্যেক মন্ত্রণালয়কে তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রস্তাব তুলে ধরতে বলা হয়েছে। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সেসব প্রস্তাবনা থেকে চূড়ান্ত প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে।

এক্ষেত্রে জনশক্তি রফতানি, বাণিজ্য-বিনিয়োগ এবং অবকাঠামো উন্নয়নে কুয়েতের অর্থায়নকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় বলছে, কুয়েত বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ একটি শ্রম বাজার। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিক যাওয়ার হার কমে গেছে।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৭৬ থেকে এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৫ হাজার ৪৭ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের কুয়েতে কর্মসংস্থান হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৭ হাজার ৬৫৮ জন নারী। ২০০৬ সালেও দেশটিতে ৩৫ হাজার ৭৭৫ জন বাংলাদেশি শ্রমিক প্রবেশ করে। তবে দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ধীরে ধীরে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ হতে থাকে। এ সংখ্যা এখন বাড়াতে চায় সরকার।

জানা যায়, দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের সব বিষয়ের পাশাপাশি বিদ্যমান প্রতিরক্ষা বিষয়ক সহযোগিতা, তথ্য-প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ও কৃষি খাতে সহযোগিতা গুরুত্ব পাবে। এছাড়া আর্ন্তজাতিক ফোরামে দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ও আলোচ্যসূচিতে রাখা হয়েছে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.