সরকার দলীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন আর মেধার ভিত্তিতে লোক নিয়োগ দেয়া হয় না। দলীয় পরিচয়ে ঘুষের বিনিময়ে এখন লোক নিয়োগ দেয়া হয়।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট আয়োজিত ‘নগ্ন দলীয়করণে বিপর্যস্ত শিক্ষাব্যবস্থা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, “কোনো অযোগ্য লোককে দলীয়করণের মাধ্যমে সহকারী সচিব পদে নিয়োগ দিলে ৩৫ বছর এদিক-সেদিক করে চালানো যাবে, কিন্তু একজন অযোগ্য লোককে শিক্ষাখাতে নিয়োগ দিলে সে ৩৫ বছর ধরে পুরো শিক্ষাখাতকে ধ্বংস করে দেবে।”
এই শিক্ষাবিদ বলেন, “শিক্ষাব্যবস্থায় মেধাবী লোক দরকার। মেধাবী লোককে নিয়োগ না দিয়ে দলীয়করণের মাধ্যমে অযোগ্য লোককে নিয়োগ দিলে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই হবে না। অযোগ্য লোক দিয়ে প্রশাসন চালানো যায়, কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানো যায় না।”
তিনি বলেন, “একজন সংসদ সদস্যকে তার এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক করা হলে সেখানে বাণিজ্য হওয়াটাই স্বাভাবিক। এলাকার সাবেক শিক্ষক, শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটি গঠন করা হলে শিক্ষাখাতে দ্রুত উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।”
এ সময় শিক্ষা কমিশন গঠনের দাবি তুলে বিএনপিপন্থী এই বুদ্ধিজীবী বলেন, “একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে। এই কমিশনের কাজ হবে দেশে যতগুলো বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেগুলোর শিক্ষার মান যাচাই করা।”
শিক্ষা ও গবেষণার জন্য সবাইকে বাংলা ছাড়াও ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষা শিক্ষার তাগিদ দিয়ে ঢাবির সাবেক উপাচার্য বলেন, “গবেষণার জন্য বেশির ভাগ বই হলো ইংরেজিতে, এজন্য আমরা যদি উচ্চতর গবেষণা করতে যাই, পিএইচডি করতে যাই, তাহলে আমাদের কয়েকটি ভাষা বাধ্যতামূলক শিখতে হয়। তাই আমাদের উন্নতির জন্য বাংলা ছাড়াও অন্যান্য ভাষা ভালো করে শিখে নেয়া।’’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী বিএনপি নেতা ড. ওসমান ফারুক, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া ও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।